EMI-তে বাড়ি কিনবেন না, মাসে মাসে টাকা দিয়ে ভাড়া নেবেন; কোনটা বুদ্ধিমানের কাজ?
Home Loan EMI vs Paying Monthly Rent: ইএমআই-তে ফ্ল্যাট বুক করা আর মাসে মাসে টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া নেওয়া, দুইয়েরই সুবিধা-অসুবিধা আছে। আপনার জন্য কোনটা ঠিক?
নয়া দিল্লি: হোম লোন বা গৃহঋণ নিয়ে মাসে মাসে ইএমআই দিয়ে ফ্ল্যাট বুক করবেন? নাকি মাসে মাসে টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া ভাড়া নেবেন? বর্তমানে, অনেকেই আটকে যান এই প্রশ্নে। গ্রাহকদের অনেকেই মনে করেন, কোনও ফ্ল্যাট কেনার থেকে বাড়ি ভাড়া নেওয়াটা কম ব্যয়বহুল। তবে, সম্পত্তি কেনাবেচা বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি আপনার কাছে ডাউন পেমেন্ট করার মতো যথেষ্ট তহবিল থাকে এবং আগামী ৫-১০ বছর কোনও একটি জায়গাতেই থাকবেন বলে ঠিক করেন, সেই ক্ষেত্রে হোম লোন নিয়ে একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে, বাড়ি ভাড়া নেওয়া বা ফ্ল্যাট কেনাটা ব্যক্তি বিশেষের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। কাজেই বাড়ি কিনবেন না ভাড়া নেবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দেখে নিন, দুই বিষয়ের সুবিধা এবং অসুবিধা কী কী –
কেন বাড়ি ভাড়া নেবেন?
রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের খরচ নেই: বাড়ি ভাড়া নেওয়ার অন্যতম সুবিধা হল, এই ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের কোনও খরচ নেই। আপনি যদি কোনও বাড়ি ভাড়া নেন, তাহলে সমস্ত রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত, সংস্কারের দায়িত্ব বর্তায় বাড়িওয়ালার উপর। তাকেই সমস্ত খরচ করতে হয়।
সহজে ঠিকানা বদল: যদি চাকরি বা ব্যক্তিগত কোনও কারণে এক জায়গা থেকে অন্য কোনও জায়গায় চলে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, সেই ক্ষেত্রে ভাড়া বাড়ি খালি করার জন্য ৩০ দিনের নোটিশ দিলেই হয়। কেনা বাড়ি বিক্রির তুলনায় ঝামেলা অনেক কম। কাজেই ভাড়া বাড়িতে থেকে অন্যান্য শহরে অন্য চাকরিতে যোগ দেওয়াটাও অনেক সহজ হয়।
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা: অনেক বাড়িওয়ালাই ভাড়াটেদের জন্য ফিটনেস সেন্টার, সনা, কমিউনিটি রুম, আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং-এর মতো বেশ কিছু সুবিধা বিনামূল্যে দিয়ে থাকে। কেনা বাড়ি হলে, এই সুবিধাগুলি নাও থাকতে পারে। অথবা, এই ধরনের সুযোগ-সুবিধাগুলি পেতে আপনাকে মোটা টাকা খরচ করতে হতে পারে।
অনেক বিকল্প: আজকাল বাড়ি ভাড়ার বাজারে, বিক্রয় বাজারের থেকে অনেক বেশি বিকল্প পাওয়া যায়। উচ্চতলে না নিচের দিকের তলে ফ্ল্যাট নেবেন, বাড়ির সঙ্গে উঠোন চাই কি না, কটি বেডরুম চাই – সবই নিজেদের পছন্দমতো বেছে নেওয়ার অনেরক বেশি সুযোগ পান। আবার একটি ভাড়া বাড়ি পছন্দ না হলে, তা বদলানোরও সুযোগ রয়েছে।
কেন বাড়ি কিনবেন?
নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার বোধ: কেনা বাড়িতে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার অনুভূতি থাকে, তা কখনই ভাড়া বাড়িতে পাওয়া সম্ভব নয়। ভাড়াটিয়ারা কীভাবে থাকবেন, কীভাবে ভাড়া বাড়ি ব্যবহার করবেন, তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকে বাড়িওয়ালাদের হাতে। তারা তাদের পছন্দ মতো শর্ত আরোপ করতে পারে। কিন্তু কেনা বাড়ি হলে, সেই বাড়িতে নিজেদের ইচ্ছামতো অদল-বদল করা যায়। তাছাড়া, বাড়ি কেনা এক মানসিক পরিপূর্ণতার অনুভূতিও দেয়।
কর সুবিধা: বাড়ি কেনার জন্য গৃহ ঋণ নিলে, কর ছাড়ের সুবিধা পাওয়া যায়। আয়কর আইনের ২৪-এর খ ধারা এবং ৮০-র গ ধারায় অধীনে, যথাক্রমে হোম লোনের সুদ এবং মূল পে-ব্যাক ডিডাকশন পাওয়া যায়। ফলে, করের বোঝা ব্যাপকভাবে কমতে পারে। এতে, আপনার সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে।
সম্পদ উৎপাদন: বাড়ি কেনাটা অবশ্যই একটা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। ভারতে কোনও বাড়ি কেনাকে সম্পদ উৎপাদনের সম্ভাব্য উৎস হিসেবে ধরা হয়। কেনা বাড়ি ভড়া দিয়েও আয় করা যায়।
বাড়িওয়ালার ঝামেলা নেই: একবার আপনি কোনও বাড়ি কিনে ফেললে, আর বাড়িওয়ালার ঝুট-ঝামেলা থাকবে না। অর্থাৎ, প্রতি মাসের শুরুতে ভাড়া দেওয়া, বাড়ির কিছু ভেঙে-চুড়ে গেল কি না – এই ধরনের সমস্ত উদ্বেগ থেকে মুক্তি পাবেন আপনি। আচমকা বাড়ি ছাড়ার কোনও ভয়ও থাকবে না।
অবসর পরিকল্পনা: জীবনের প্রথম দিকে যদি আপনি কোনও বাড়ি কিনে রাখেন, তা আপনার দীর্ঘমেয়াদী অবসর পরিকল্পনার অংশ হতে পরে। ঋণ পরিশোধ করা হয়ে গেলে, অবসর জীবনে আর্থিক বোঝা অনেকটাই কমে যায়।