মাইনে বাড়ছে না, জিনিসের দাম বাড়ছে – কীভাবে মোকাবিলা করবেন? মেনে চলুন এই টিপসগুলি

রান্নার গ্যাস, জ্বালানি তেল থেকে শুরু করে মুদি দোকানের সামগ্রী, গাড়ি, বাড়ি-সহ গত কয়েক মাসে যে কোনও জিনিস কিনতে গেলেই ছ্যাঁকা লাগছে পকেটে। এদিকে বেতন বাড়ছে না। এই অবস্থায় একটু পরিকল্পনা করে চললে, তবেই ব্যক্তিগত স্তরে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে।

মাইনে বাড়ছে না, জিনিসের দাম বাড়ছে - কীভাবে মোকাবিলা করবেন? মেনে চলুন এই টিপসগুলি
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 8:30 AM

কলকাতা: রান্নার গ্যাস, জ্বালানি তেল থেকে শুরু করে মুদি দোকানের সামগ্রী, গাড়ি, বাড়ি-সহ গত কয়েক মাসে যে কোনও জিনিস কিনতে গেলেই ছ্যাঁকা লাগছে পকেটে। কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে অধিকাংশ মানুষেরই বেতন বাড়েনি। কিন্তু, প্রতিটি জিনিসেরই দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। চলতি মাসের শুরুতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্ভাব্য মুদ্রাস্ফীতি হার ৫.৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬.৭ শতাংশ করেছে। সাধারণত সরবরাহ বা চাহিদার ভারসাম্যহীনতার ফলেই মুদ্রাস্ফীতি ঘটে থাকে। কোভিডের সময়ে স্পষ্টতই সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। মেধার ঘাটতি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ এই ঘাটতি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আর, মহামারি-পরবর্তী সময়ে চাহিদা একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় একটু পরিকল্পনা করে চললে, তবেই ব্যক্তিগত স্তরে মোকাবিলা করা যাবে এই পরিস্থিতির।

প্রথম ধাপ: বাজেট তৈরি

ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সবথেকে ভাল উপায় হল বাজেট তৈরি। মুদ্রাস্ফীতির এই চরম সময়ে ব্যয়ের বাজেট না নির্ধারণ করলে তলা মুশকিল, এমনকি না মুমকিনও হয়ে যেতে পারে। অন্তত আপনি কীভাবে ব্যয় করছেন এবং আপনি কত পরিমাণ ব্যয় করছেন তার হিসেব রাখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় ধাপ: খরচ কমানো

খরচ কমানোর জন্য কিছু সাধারণ ব্যবস্থা গ্রহণ করাও ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলা করার সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। সবার আগে আপনার বিলগুলি বাল করে খতিয়ে দেখে নিন। যেগুলির প্রয়োজন নেই, তা কেটে ফেলুন। বাকি পণ্যগুলির পরিমাণ কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে একটু ভাবুন। আসলে মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতাই হল সর্বোত্তম মূল্যের জিনিস কেনা। অথবা, কোনও জিনিস কম দাম দিয়ে বিক্রি শুরু হয়। পরে, সেই জিনিসটির দাম বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও, তা কেনা থামান না গ্রাহক। নামি ব্র্যান্ডের জায়গায় স্থানীয় ব্র্যান্ডের জিনিস কেনা যেতে পারে। পাশাপাশি বাতিল করতে হবে সাবস্ক্রিপশন পরিষেবাগুলি।

তৃতীয় ধাপ: ঋণ পরিশোধ

অনেকেই ঋণ পরিশোধ করার বিষয়টিকে তাঁদের আর্থিক অগ্রাধিকার তালিকার নীচের দিকে রাখেন। মাসের শেষে অবশিষ্ট যা কিছু পড়ে থাকে তাই দিয়ে ঋণ পরিশোধ করব, এমন মনোভাব থাকে। তবে মূল্যবৃদ্ধির সময়ে জীবনযাত্রার ব্যয়ের পর দ্বিতীয় আর্থির অগ্রাধিকারই হওয়া উচিত ক্রেডিট কার্ড, ক্রেডিট লাইন, ব্যক্তিগত ঋণের মতো পরিবর্তনশীল ঋণগুলি পরিশোধ করা। ঋণ পরিশোধ না করে কোনো বিনিয়োগের কথা ভাবাই উচিত নয়। ক্রেডিট কার্ডে সাধারণত সুদের হবার অত্যন্ত চড়া থাকে। কোনও ধরণের বিনিয়োগেই অত চড়া হারে রিটার্ন পাওয়া সম্ভব নয়। তাই, বিনিয়োগের আগে রাখতে হবে ঋণ শোধ করা।

চতুর্থ ধাপ: তৈরি রাখুন জরুরী তহবিল

জিনিস পত্রের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে এমন জিনিসে বিনিয়োগ করার লোভ তৈরি হতে পারে। সেটা ভুল ভাবনাও নয়। তবে কোথায় বিনিয়োগ করা উটিত হবে, সেই ভাবনার আগে তাত্ক্ষণিক কোনও আর্থিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার মতো পর্যাপ্ত নগদ হাতে রাখা উচিত। বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋণ থাকলে সবার প্রথমে তা পরিশোধ করতে হবে। এরপর একটি জরুরী তহবিল তৈরি করতে হবে। এই জরুরী তহবিল এমন এক সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকবে, যা উচ্চহারে রিটার্ন দেয়। মুদ্রাস্ফীতির কারণে এতে হয়তো আপনার আর্থিক ক্ষতি হবে। তবে, জরুরী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ঝুঁকি না নেওয়াই উচিত।

পঞ্চম ধাপ: বিনিয়োগ

যদি আপনার কোনও ঋণ না থাকে এবং ৩ থেকে ৬ মাস জীবনযাত্রা চালানোর মতো সঞ্চয় থাকে, তবে, সেই ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিভিন্ন সুযোগ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া উচিত। দেখতে হবে, কোন কোন পণ্যের বাজার মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিরাপদ এবং আর্থিক লাভের নিশ্চয়তা রয়েছে।