Cyber Crime: কেওয়াইসি দিতেই ফোনে এল ওটিপি! সাড়ে সর্বনাশ সল্টলেকের বাসিন্দার
Kolkata: করোনা মহামারীর গত দু' বছরে কলকাতায় বেড়েছে সাইবার অপরাধ। বিশেষত মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনলাইনে মানুষের ব্যস্ততা বাড়ায় কলকাতায় সাইবার অপরাধ বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ।
কলকাতা: আকছাড় এমন ফোনে আসে। ফোনের ওপার থেকে ভেসে আসা কন্ঠ মৃদু স্বরে জানান দেন, যে কোনও সময় ফোন নম্বর কিংবা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দ্রুততার সঙ্গে কেওয়াইসি জমা দিন। কেওয়াইসি নম্বর বলতে না বলতেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় টাকা। সম্প্রতি এমনই এক অভিযোগে উত্তরাখণ্ডের এক যুবকে গ্রেফতার করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। এই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কেওয়াইসি আপডেট করার নামে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
কেওয়াইসি আপডেট করার নাম করে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকার প্রতারণা। সেই অভিযোগে হিমাংশু গুপ্তা নামে উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা এক যুবককে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। উত্তরাখণ্ড থেকে গ্রেফতার করে ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে বিধাননগর আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেকের এক বাসিন্দা গত ২৬ জুলাই (২৬/০৭/২০২১) বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন, তাঁকে এক ব্যক্তি বিএসএনএলের কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, কেওয়াইসি আপডেট করাতে হবে। না হলে ফোনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
অভিযোগ, ফোনের ওপার থেকে ওই ব্যক্তি জানান, এখুনি তাঁর মোবাইল ফোনে যে ওটিপি নম্বরটি যাচ্ছে তা যেন বলে দেন। তা হলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। কেওয়াইসি আপডেট করে দেওয়া হবে। অভিযোগকারীও সেই ফাঁদে পা দিয়ে ওই ব্যক্তিকে ওটিপি জানান।
কিছু মুহূর্তের মধ্যেই অভিযোগকারীর মোবাইল ফোনে একটি এসএমএস আসে। দেখেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। এর পর তিনি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, অনলাইন ট্রানজাকশনের একটি অ্যাপ থেকে টাকাটি টাকা হয়েছে। সেই টাকা উত্তরাখণ্ডের এক যুবকের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। এর পরই পুলিশ উত্তরাখণ্ড যায়। সেখানে গিয়ে একজনকে গ্রেফতারও করে। যাঁর নাম হিমাংশু গুপ্তা।
এরই পরই সে রাজ্যের পুলিশের সহযোগিতায় ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। এদিন বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এর পিছনে একটি চক্র আছে বলে অনুমান পুলিশের।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর গত দু’ বছরে কলকাতায় বেড়েছে সাইবার অপরাধ। বিশেষত মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনলাইনে মানুষের ব্যস্ততা বাড়ায় কলকাতায় সাইবার অপরাধ বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। এমনটাই মনে করছে কলকাতা পুলিশ। তাদের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৮ সালে কলকাতায় সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত ৩২টি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছিল। ২০২০-তে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭২টি। সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে বেঙ্গালুরু (৮,৮৯২) আর হায়দরাবাদের (২,৫৫২) তুলনায় কলকাতার সামনের সারিতে উঠে আসাটা তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: পর পর তিনদিন একদিনের সংক্রমণ ৮০০ পার! বিপদ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে না তো?