UP Assembly Election 2022: ফেল কড়ি মাখো তেল- মথুরায় ‘বহিরাগত’ ঢুকলেই ‘ব্ল্যাক মেইল’ শুরু ওদের

Uttar Pradesh Assembly Election 2022: গুলাল ( আবির) মাখা রাধা কৃষ্ণের সন্ধানে বাঁকে বিহারি মন্দিরের দিকে এগোচ্ছি। দুধ, ক্ষীর আর প্যারার সুবাসে মনটা বেশ মিষ্টিই ছিল। হঠাৎ ঝুপ করে ঘাড়ের উপর কি যেন ঝাঁপিয়ে পড়ল!

UP Assembly Election 2022: ফেল কড়ি মাখো তেল- মথুরায় 'বহিরাগত' ঢুকলেই 'ব্ল্যাক মেইল' শুরু ওদের
লালমুখো 'দস্যু'দের দৌরাত্ব্য কিন্তু মজাদারই।নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 12, 2022 | 1:27 PM

রাজা চট্টোপাধ্যায়: লাল মুখো। আঁচিলে পাঁচিলে দিনভর দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে। খুব মিষ্টি ওদের কাণ্ড কারখানা। ব্রজের পথে পথে ওদের আবদার মেটাতে পারলেই ওরা তখন “শান্ত শিষ্ট লেজ বিশিষ্ট”। কিন্তু আপন খেয়ালে মোবাইল কানে হেঁটেছেন কি মরেছেন! বিশেষ করে আপনি যদি বহিরাগত হন। বৃন্দাবনের বাঁদরগুলো মোবাইল কেড়ে নিয়ে পথ চলতি মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করতে ওস্তাদ। প্রথমবার গোকুলে আসা আনাড়ি ভক্তদের কাছে ফ্রুটি আদায় করার মোক্ষম বাঁদুরে কৌশল, না ঠকলে শেখা যায় না। ভোট কভার করতে এসে বৃন্দাবনে আমিও সেই আনাড়িদের দলেই পড়লাম। তবে আমার ক্ষেত্রে ওদের টার্গেট ছিল অন্য জিনিস। যেটা এখানে অহরহ ঘটে। তবে আপসোস একটাই। চোর পালিয়ে যাওয়ার পর অনেক দারোগা পেলাম। যাক, গোটা ব্যাপারটা শুনুন। ভবিষ্যতে আপনারও কাজে লাগতে পারে।

বসন্ত পঞ্চমীর পর থেকেই বৃন্দাবনে হোলির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। গুলাল ( আবির) মাখা রাধা কৃষ্ণের সন্ধানে বাঁকে বিহারি মন্দিরের দিকে এগোচ্ছি। ঘিঞ্জি রাস্তা। বাইক,টোটো, উটের টানা গাড়ির ফাঁক গলে পায়ে হেঁটেই যেতে হচ্ছে। দুধ, ক্ষীর আর প্যারার সুবাসে মনটা বেশ মিষ্টিই ছিল। হঠাৎ ঝুপ করে ঘাড়ের উপর কি যেন ঝাঁপিয়ে পড়ল! চোট, আঘাত কিছুই পাইনি। মনে হল, কেউ যেন নরম স্প্রিং ঘাড়ে রেখে একটা মোক্ষম চাপ দিল।

নিমেষেই বুঝলাম চশমাটা চোখ থেকে ঝুলে পড়েছে। ডান হাতে বুম মাইকটা ধরা ছিল। স্বাভাবিক প্রবৃত্তি অনুযায়ী বাম হাতটা চলে গেল বাম কানের কাছে। কিন্তু কিছুই ধরা দিল না আঙুলে। আশপাশ থেকে দোকানদাররা চেঁচিয়ে উঠলেন “গয়ি গয়ি গয়িই। ও চ্যানেল ওয়ালে ভাই, ইহান শিশা আউর মোবাইল সম্ভালকে রাখিও। হো সকে তো হাঁথ মে ফ্রুটি রখখা কারো।” উপরে তাকিয়ে দেখলাম দুর্বৃত্তরা ভাবলেশহীন মুখে বসে আমার পরবর্তী পদক্ষেপ লক্ষ্য করছে। জন্মান্তরের প্রারব্ধ না ‘খুচরো পাপের ফল’, কে জানে!

দু’পা পিছিয়ে এসে চশমার ভাঙ্গা ফ্রেম টা রাস্তা থেকে উদ্ধার করলাম। ব্রজের বাঁদরের কাছে বোকা বনে গিয়েও নিজেকে বেশ বুদ্ধিমান মনে হচ্ছিল। কারণ সাময়িক ঘাবড়ে দিলেও আমার স্টোরি পণ্ড করতে পারেনি ফ্রুটি-খোর বাঁদরটা। কাজে বেরোলে ঘটনা-দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আমার ব্যাগে বাড়তি দুটি চশমা রাখাই থাকে। তবে স্থানীয়দের পরামর্শ মেনে খাপ সমেত রিমলেসটা জ্যাকেটের পকেটে রাখলাম। প্রয়োজন মতো ওয়াক থ্রু (ক্যামেরার সামনে কোনও কিছুর বর্ণনা দেওয়া) করার সময় খাপ থেকে চশমা খুলেছি। কাজ হয়ে গেলেই ভিতরে ঢুকিয়ে রেখেছি। বাউণ্ডুলে গোছের বাবাজিরা লাঠি হাতে ক্যামেরার ফ্রেমের বাইরে দাঁড়িয়ে বাঁদর সামলাতে সাহায্যও করেছেন। একটা করে শট হচ্ছে। আর আশপাশের লোকজন চেঁচিয়ে উঠছেন,”রাধে রাধে”। বাঁকে বিহারির প্রাঙ্গণে স্টোরির একাংশ সেরে ফেলার পর নিধুবনে গেলাম। সেখানেও সেই আদুরে উৎপাত। তবে রাধে রাধে বলতে বলতেই বৃন্দাবনে হোলির মুড স্টোরি শেষ করেছি নতুন কোনও বিঘ্ন ছাড়াই।

রাধা কৃষ্ণের লীলা ভূমি থেকে ফেরার সময় গুন গুন করছিলাম মান্না দের সেই বিখ্যাত গান টা,  “এ ভাই জরা দেখ কে চলো, আগে হি নহি, পিছে ভি, উপর হি নহি নিচে ভি…”। সাবধানের মার নেই। তাই কলা খাইয়ে দক্ষিণা দিয়েছি বাঁদর- গুরুকে।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা 

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা