Shaoli Mitra: অভিনয় ভাল লাগলে যেমন জানাতেন, মন্দ লাগাও জানিয়েছেন ফোন করে: দেবশঙ্কর হালদার
নাট্যজগত হারিয়েছে তাঁর সোনার মেয়েকে। রয়ে গিয়েছে একগুচ্ছ স্মৃতি। শেষবেলায় ভিড় পছন্দ ছিল না তাঁর। চাননি আড়ম্বর, তাঁকে নিয়ে জনতার অহেতুক কৌতূহল।
‘আমাদের মা চলে গেল…’, ফেসবুক গ্রুপে লিখেছিলেন ১৮-তে পা দেওয়া এক তরুণ তুর্কী থিয়েটার কর্মী। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভেসে আসছিল একের পর এক হাহাকার। শেষ সময়ে এক বার দেখা পর্যন্ত হল না– এ আক্ষেপও কুঁড়ে কুঁড়ে গিলছিল অনেককেই। নিভৃতেই চলে গেলেন শাঁওলি মিত্র। তাঁর স্মৃতিতে টিভিনাইন বাংলার কাছে অকপট নাট্যব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদার।
তাঁর কাছে তিনি শিক্ষক সমান। বলছিলেন, “যখন শুরু করেছি অভিনয় বা পরবর্তীকালেও ওঁর অভিনয় দেখে বোঝার চেষ্টা করতাম আজকে আমরা কী কী শিখছি। বোঝার চেষ্টা করতাম তাঁর শক্তি বা জোরটা কোথায় যা আমি পরবর্তী প্রযোজনা বা অভিনয়ে প্রয়োগ করতে পারি। না, দেখে দেখে টুকে দেওয়া বা নকল করা নয়। তাঁর অভিনয় দেখে সাহস সঞ্চয় করেছি প্রতিবার।” যোগ করলেন, “কীভাবে অভিনয় আরও সাহসী, আরও তীক্ষ্ণ হতে, কীভাবে আরও বিশ্লেষণী হতে পারে এ সব ওঁর অভিনয় দেখেই শেখা আমার।”
নাট্যজগত হারিয়েছে তাঁর সোনার মেয়েকে। রয়ে গিয়েছে একগুচ্ছ স্মৃতি। শেষবেলায় ভিড় পছন্দ ছিল না তাঁর। চাননি আড়ম্বর, তাঁকে নিয়ে জনতার অহেতুক কৌতূহল। ১৯৯৭ সালের ১৯ মে রাত দুটো বেজে ১৫ মিনিট। শম্ভু মিত্র শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এক ইচ্ছাপত্র করে গিয়েছিলেন মৃত্যুর আগে। ইচ্ছাপত্র-এ তিনি লিখেছিলেন, “মোট কথা আমি সামান্য মানুষ, জীবনের অনেক জিনিস এড়িয়ে চলেছি, তাই মরবার পরেও আমার দেহটা যেন তেমনই নীরবে, একটু ভদ্রতার সঙ্গে, সামান্য বেশে, বেশ একটু নির্লিপ্তির সঙ্গে গিয়ে পুড়ে যেতে পারে।” সৎকার সমাধা হওয়ার পূর্বে সংবাদমাধ্যমে শম্ভু মিত্রের মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা হয়নি । শম্ভু মিত্রের ইচ্ছে অনুযায়ী সিরিটির শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লিতে তাঁর নশ্বর দেহটি দাহ করে ফিরে এসে বাবার মৃত্যুসংবাদ জানিয়েছিলেন শাঁওলি। মেয়ের ক্ষেত্রেও হল তেমনটাই। রবিবার দুপুরের তাঁর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর মানস সন্তান অর্পিতা ও সায়ক এসে জানালেন কিংবদন্তীর জীবনাবসানের নির্মম সত্য।