নারায়ণ ‘জেঠু’র ‘পদ্মশ্রী’লাভে উচ্ছ্বসিত এ যুগের কার্টুনশিল্পী উদয় দেব

আমাদের, মানে যাঁদের শৈশব, কৈশোর এমনকি যৌবন জুড়ে ছিল ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাঁটুল দি গ্রেট’, তাঁরাও এ পুরস্কার পেল।”

নারায়ণ ‘জেঠু’র ‘পদ্মশ্রী’লাভে উচ্ছ্বসিত এ যুগের কার্টুনশিল্পী উদয় দেব
নারায়ণ দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2021 | 6:11 PM

‘জেঠু’র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সেই ‘জেঠু’র ‘পদ্মশ্রী’লাভে উচ্ছ্বসিত এ যুগের স্বনামধন্য কার্টুনশিল্পী উদয় দেব। ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে সাত জন পদ্মশ্রী পাচ্ছেন, তাঁদের মধ্য়ে অন্য়তম নারায়ণ দেবনাথ। TV9 বাংলার তরফে উদয় দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ওঁকে আমি জেঠু বলে ডাকি। বহু বছরের সম্পর্ক। গতকাল যখন খবরটা জানতে পারি, তখনই মনে হয়েছিল এ সম্মান শুধু ওঁর প্রাপ্য় নয়। এ ‘পদ্মশ্রী’ আমাদেরও। আমরা সকলে এই সম্মানের অংশীদার। আমাদের, মানে যাঁদের শৈশব, কৈশোর এমনকি যৌবন জুড়ে ছিল ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাঁটুল দি গ্রেট’, তাঁরাও এ পুরস্কার পেল।”

 

বাটুল দ্য গ্রেট।

 

বাংলা কমিকস জগতের একচ্ছত্র আধিপত্য় তাঁর। প্রায় পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে কমিকস্-এর পাতায়-পাতায় তাঁর হাতের জীবন্ত ছোঁয়া। সাদা-কালো চরিত্রগুলো রঙিন হয়ে উঠেছে ধীরে-ধীরে। বাঙালিকে তিনি দিয়েছেন নিজস্ব ‘বাঙালি’ কার্টুন। ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘বাঁটুল দ্য় গ্রেট’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাহাদুর বেড়াল’, ‘ডানপিটে খাঁদু’, ‘কেমিক্যাল দাদু’, ‘কৌশিক রায়’… কত কত নাম। কত কত রকমের তাদের ভঙ্গি। তুলির টানে এঁকেছেন নারায়ণবাবু।

 

নন্টে ফন্টে।

 

কার্টুনের বয়স বাড়ে না। স্রষ্টার বয়স বেড়েছে। আটানব্বইয়ে পা দিলেন নারায়ণ দেবনাথ। চামড়া কুঁচকেছে, ঠিকঠাক দেখতে পান না এখন। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুখ-বিসুখও শরীরে দানা বেঁধেছে। কিন্তু মন তাজা, আরও ফুরফুরে। সম্প্রতি তাঁর নাম সার্চ বক্সে দিলে যা সব ছবি পাওয়া যায়, তাঁর হাসি ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না।

 

 

২০১৩ সালে তাঁকে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে সম্মনিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার। পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি। রাষ্ট্রপতির তরফ থেকে এসেছে বিশেষ পুরস্কারও। কিন্তু বেশ দেরি করেই এল ‘পদ্মশ্রী’। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন দেরী হলেও ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন আপনি, খুশি তো? নারায়ণবাবুর উত্তর, “কোনও আক্ষেপ নেই। যখন যেটা হওয়ার, হবেই।” TV9 বাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় প্রবীণ কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি বলেন, “কতবার মনে হয়েছে আমি নিজে কখনও ‘হাঁদা ভোঁদা’, কখনও আবার ‘বাঁটুল দি গ্রেট’ হয়ে গিয়েছি। খবরটা পেয়ে ভীষণ আনন্দিত হয়েছি। বয়সের চাপ যে তাঁর কলমকে থামাতে পারেনি, এটাই তো বিরাট! তিনি আমাদের কার্টুন সমাজকে গর্বিত করেছেন।”