Russia-Ukraine War: কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধ! সাইরেনের মাঝেও বাজছে রবীন্দ্র সঙ্গীত

Russia-Ukraine War: ইউনিয়নের পতনের পরে দেশটার মাঝে সীমানা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ওই গান, আড্ডা একই থেকে গিয়েছে।

Russia-Ukraine War: কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধ! সাইরেনের মাঝেও বাজছে রবীন্দ্র সঙ্গীত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 10, 2022 | 7:57 PM

কলকাতা: রক্ত, কান্না, মৃত্যু! বিগত কয়েকদিন ধরে এই শব্দগুলো অনেক বেশি চোখে পড়ছে। যুদ্ধের খবর যেন সংক্রামক ব্যধির মতো ছড়াচ্ছে। মিনিটে মিনিটে ব্রেকিং। রাশিয়া (Russia) ইউক্রেনে মিসাইল ফেলেছে, ইউক্রেন ইইউ-র সদস্য হচ্ছে। অর্থাৎ যা হচ্ছে, সবটাই যুদ্ধের অঙ্গ। বীরত্বের গল্প আছে, কিন্তু বিরতির নেই। তবে বোমা, গুলি, মিসাইল ছাড়াও যুদ্ধে অনেক গল্প থাকে। কিছুটা জানা, বেশিরভাগটাই অজানা। সোভিয়েত ইউনিয়নে সাতের দশকে একটা গান খুব বাজত। ইউনিয়নের পতনের পরে দেশটার মাঝে সীমানা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ওই গান, আড্ডা একই থেকে গিয়েছে। এখনও বৈঠকি আড্ডায় ‘পসলেডনায়া পোয়ামা’ বাজে, রাশিয়াতেও আবার ইউক্রেনেও। কেন এখন একথা?

ফিরে যেতে হবে ১৯৮১ সালে। সে বছর সোভিয়েত ইউনিয়নে সং অব দ্য ইয়ার হয়েছিল ‘পসলেডনায়া পোয়ামা’ গানটি। সুর দিয়েছিলেন এলেক্সি রিবিনকভ। গানের কথা (বাংলা ভাষায়) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore)। হ্যাঁ শেষের কবিতার শেষ পঙক্তিগুলোকে গানের (রাশিয়ান ভাষায় শেষের কবিতা দিয়ে) ছকে বেঁধেছিলেন রিবিনকভ। এখন যখন যুদ্ধ লেগেছে, তখন কলকাতায় সেই গান বাজছে। হয়তো রাশিয়াতেও বাজছে। কারণ ৪ দশক পেরিয়ে এলেও এই গানের গ্রহণযোগ্যতায় বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। সেখানে ‘পসলেডনায়া পোয়ামা’ এভারগ্রিন। আর ৩ দিন আগে কলকাতায় আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নির্বাচিত একটি তথ্যচিত্রে বেজেছে এই গান।

সেই তথ্যচিত্রের নাম ‘দ্য লাস্ট পোয়েম।’ ইউক্রেন নিবাসী বাঙালি পরিচালক শুভ্র চক্রবর্তী নেহাত জানার তাড়নাতেই এই তথ্যচিত্র বানিয়ে ফেলেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা কীভাবে ‘পসলেডনায়া পোয়ামা’ হয়ে গেল, তা নিয়েই সম্পূর্ণ তথ্যচিত্র। রবীন্দ্রনাথের লেখা বরাবরই বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হয়েছে। কমিউনিস্ট সমাজে রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতা-সহ রাশিয়ার গানের একটা লম্বা ইতিহাসের অধ্যায় উঠে এসেছে এই তথ্যচিত্রে।

পরিচালক শুভ্র চক্রবর্তী পেশায় ব্যবসায়ী। ২৫ বছর ধরে ইউক্রেনে ব্যবসা করছেন। যুদ্ধ তাঁর ব্যবসাকে পুরো ভেঙে দিয়েছে। সহকর্মীরা মেট্রোয়, গ্যারেজে রাত কাটাচ্ছেন। রাশিয়ার হামলায় তাঁদের একটা কারখানাও ভস্মীভূত হয়েছে। কিন্তু কোথাও যেন ‘দ্য লাস্ট পোয়েম’ হাসি ফোটাচ্ছে। যতই যুদ্ধ চলুক, শিল্প যে বিভীষিকাতেও সোনালি রঙ দেখাতে পারে, তার আরও একটি প্রমাণ এই তথ্যচিত্র। পরিচালক শুভ্র চক্রবর্তীর এই গানের শিকড় খোঁজার প্রতি ঝোঁক বাড়ে তাসকেন্তে। সেখানে একজনের ৬০-তম জন্মদিনে সকলে মিলে এই রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়েছিলেন। আজ যুদ্ধের দিনেও মন কেমন কাটানোর ভাষা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ‘শেষের কবিতা।’ তলিয়ে ভাবলে ‘শেষের কবিতা’, ‘পসলেডনায়া পোয়ামা’-র পথ পেরিয়ে ‘দ্য লাস্ট পোয়েম’ হয়ে ওঠার গল্পও যুদ্ধের থেকে কম রোমাঞ্চকর নয়।

আরও পড়ুন: এখানেই বাস ছিল সুখী পরিবারের, ভিড় জমাত বিদেশের পড়ুয়ারাও! মিসাইল-মর্টারে ‘ধূলিসাৎ’ স্বপ্নের ইমারত