EXCLUSIVE Birbaha Hansda: ‘প্রযোজক হিসেবে কিছু ছেলেমেয়েকে কাজ দিতে পারলে সত্যিই আমার ভাল লাগবে’, একদা অভিনেত্রী বীরবাহা
Birbaha Hansda Interview: বিধায়কের দায়িত্ব, একাধিক মন্ত্রীত্বের গুরুভারে অভিনেত্রী ‘আইডেন্টিটি’ কি হারিয়ে গেলে বীরবাহার? TV9 বাংলাকে একান্তভাবে কী বললেন তিনি?
স্নেহা সেনগুপ্ত
সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রিসভায় একাধিক পরিবর্তন করা হয়েছে। গত বুধবার (০৩.০৮.২০২২) রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয়। ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়াও স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি, বন দফতরেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়েছিলেন বীরবাহা। বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন সাঁওতাল ছবির এই অভিনেত্রী। বলাই বাহুল্য, রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার আগে শুটিং ফ্লোরই ছিল বীরবাহার কর্মক্ষেত্র। তাঁর অভিনীত ‘ফুলমণি’ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো পেয়েছিল। ‘তোরে সুতম’, ‘আচ্ছা ঠিক গেয়া’, ‘জুপুর জুলি’র মতো সাঁওতালি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বীরবাহা। বিধায়কের দায়িত্ব, একাধিক মন্ত্রীত্বের গুরুভারে অভিনেত্রী ‘আইডেন্টিটি’ কি হারিয়ে গেলে বীরবাহার? TV9 বাংলাকে একান্তভাবে কী বললেন তিনি?
প্রশ্ন: সক্রিয় রাজনীতিতে আসার আগে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে দিকের কী খবর? নতুন কোনও ছবিতে কাজ করছেন?
বীরবাহা: সিনেমা, অভিনয়, এসব থেকে সরে এসেছি। আর আমার সময় হয়ে ওঠে না। সিনেমায় আর অভিনয় করি না।
প্রশ্ন: এই সিদ্ধান্ত কি ২০২১-এ বিধানসভা ভোটে লড়ার পর থেকেই নিয়েছিলেন?
বীরবাহা: হ্যাঁ। তখন থেকেই আর ছবিতে কাজ করি না।
প্রশ্ন: পছন্দের পেশা থেকে সরে এলেন—আক্ষেপ বা যন্ত্রণা হয় না?
বীরবাহা: সত্যি বলতে, আক্ষেপ হয় না। ঝাড়গ্রামের মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। কিছু কাজ করব, সেই আশায় বসে আছেন তাঁরা। আমি তাঁদের জন্যেই কাজ করতে চাই। আসলে শুটিং করতে গেলে, ওইদিকেই তো সময় দিতে হবে। ১৫দিন কিংবা ১ মাসের গ্যাপ হয়ে যাবে। সেই ফাঁক আমি রাখতেই চাই না।
প্রশ্ন: অভিনেতা কিংবা অভিনেত্রীরা এখন অনেকেই নেতা-নেত্রী—পরিচয় থেকে ‘অভি’ শব্দটা বাদ পড়েছে। অনেকে কটাক্ষও করেন। বঙ্গ রাজনীতি এখন তারকাখচিত আঙ্গিনা—সেই কটাক্ষকে কীভাবে ডজ করেন?
বীরবাহা: যে কোনও পেশা থেকেই রাজনীতিতে আসা যায়। কেবল মানুষকে ভালবাসতে হবে। আমি নিজে একজন পলিটিক্যাল পরিবারের সদস্য। ছোট থেকেই শিখেছি মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। তা ছাড়া, কাজ করার ইচ্ছে থাকলেই করা যায়। নেতা হওয়া যায়। মানসিকতা কীরকম, সেটার উপরও অনেককিছু নির্ভর করে। অর্থাৎ তাঁরা মানুষের জন্য কাজ করতে চান নাকি অন্য কোনও অভিসন্ধি নিয়ে চলেন…
প্রশ্ন: সাম্প্রতিক ঘটনা, আপনাদেরই দলের (তৃণমূল) প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্রে করে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল… দলের সদস্যা হয়ে কী বলবেন? গোটা ঘটনায় দলের দিকেও তো আঙুল উঠেছে…
বীরবাহা: দেখুন, ওই বিষয়ে আমি সরাসরিভাবে কিছুই বলব না। লোকে কী করছে সেটা না দেখে, আমি নিজে কী করছি সেটা দেখা খুব দরকার। আমি সেই থিওরিতেই চলি। আমি আমার নিজের কাজ নিয়ে থাকতে ভালবাসি। আমার এলাকাকে কীভাবে উন্নত করা যায়, সেটার দিকেই মন দিতে চাই। বাকি কে কী করছেন, সে দিকে সত্যিই আমার কোনও আগ্রহ নেই।
প্রশ্ন: সাঁওতালি ছবির জগৎ নিয়ে আপনার কী-কী প্রত্যাশা রয়েছে?
বীরবাহা: সাঁওতালি ছবির সমস্যা কী জানেন, টাকা-পয়সার দিক থেকে আমরা খুব দুর্বল। আমি নিজে কোনওদিনও টাকা নিয়ে কাজ করিনি। আমার একটাই উদ্দেশ্য ছিল, আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সকলের সামনে তুলে ধরা। সেই জন্যই অভিনয় করতাম। করোনা পরিস্থিতিতে আরও খারাপ অবস্থা হয়েছে। কোনও জায়গা থেকে কোনও সাপোর্ট পায় না সাঁওতালি ছবি। প্রযোজকও নেই। কিন্তু অ্যালবাম তৈরি হচ্ছে প্রচুর।
প্রশ্ন: আপনি তো এখন মন্ত্রী, সাঁওতালি ছবি প্রযোজনা করার কোনও পরিকল্পনা করছেন?
বীরবাহা: সাঁওতালি ছবি প্রযোজনা করার ইচ্ছে আছে। প্রযোজক হিসেবে কিছু ছেলেমেয়েকে কাজ দিতে পারলে সত্যিই আমার ভাল লাগবে।
প্রশ্ন: নিজে আর অভিনয় করবেন না, তাই তো…?
বীরবাহা: না, ওটা আমি আর করব না…