Aindrila Sharma Death: ক্যান্সার আক্রান্ত ঐন্দ্রিলাকে কেন বলতে হয়েছিল, ‘তাচ্ছিল্যের হাসি হাসত মানুষ…’

Aindrila Sharma: গত বছর ফের ক্যান্সার ধরা পড়ে অভিনেত্রীর। এবার মারণরোগের ঠিকানা ফুসফুস। চিকিৎসা করাতে চাননি ঐন্দ্রিলা...

Aindrila Sharma Death: ক্যান্সার আক্রান্ত ঐন্দ্রিলাকে কেন বলতে হয়েছিল, 'তাচ্ছিল্যের হাসি হাসত মানুষ...'
ঐন্দ্রিলা শর্মা...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 29, 2022 | 9:57 AM

গতমাসের এই সময়টায় যদি ফিরে যাওয়া যায়, বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠতে পারে… তখনও হেসেখেলে বেঁচে ছিলেন বাংলা সিরিয়ালের লড়াকু অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তিনি চ্যাম্পিয়ান। একবার নয়, দু’বার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হারিয়েছিলেন মারণরোগকে। তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। দিন কয়েক আগে, অর্থাৎ ১ নভেম্বর, হঠাৎই স্ট্রোক হওয়ায় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ২৪ বছর বয়সি ঐন্দ্রিলা। তারপর ২০ দিনের টানা লড়াই শেষ করে ২০ নভেম্বর না-ফেরার দেশে চলে যান। তিনি চলে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ফেলে গিয়েছেন তাঁর অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি। সেই লড়াইয়ের কাহিনি এ বছরই বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে TV9 বাংলার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা।

…ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে অবধারিতভাবে চলে আসবে আরও একটি নাম – সব্যসাচী চৌধুরী। বাংলা সিরিয়ালের অভিনেতা এবং ঐন্দ্রিলার হার না-মানা প্রেমিক। যিনি শেষ দিন পর্যন্ত প্রেমিকার পাশে ছিলেন। একদিনের জন্যেও পাল্টে যাননি মানুষটি। তিনিই ছিলেন ঐন্দ্রিলার ‘বেঁচে থাকার কারণ’। দ্বিতীয়বার ক্যান্সারজয়ী হওয়ার পর সব্যসাচীকেও যোগাযোগ করেছিল TV9 বাংলা। তিনি বলেছিলেন একটি মাত্র বাক্য, “ওঁরই তো লড়াই, ওই বলুক।” আর ঐন্দ্রিলা বলেছিলেন, “ও সত্যি আমাকে অন্তর থেকে ভালবাসে। কিন্তু আগের বার এ রকমটা ছিল না…”

সেদিন এমন কথা কেন বলেছিলেন ঐন্দ্রিলা? কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে?

ঐন্দ্রিলার প্রথমবার ক্যান্সার ধরা পড়েছিল ক্লাস ১১-এ পড়ার সময়। বোনম্যারোতে কর্কটরোগ বাসা বেঁধেছিল। সে সময়ের জার্নিটাও সহজ ছিল না। সব্যসাচী তখনও জীবনে আসেননি। হাজার একটা লড়াইয়ের মধ্যে দোসর ছিল মানুষের কটাক্ষ। ঐন্দ্রিলা বলেছিলেন, “তখন পরিবারের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে থাকতাম। মানুষের এমন সব মন্তব্য কানে আসত, যা শুনে দু’দিন রাতের ঘুম চলে যেত। মা আমাকে নিয়ে বেরত রাস্তায়। খেয়াল করতাম লোকজন ঘুরে-ঘুরে তাকাচ্ছে। তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে…”

প্রগতিশীল সমাজে মানুষের অন্তরের এই চেহারা দেখে ভিতরে-ভিতরে গুম মেরে যেতেন ঐন্দ্রিলা। বলেছিলেন, “জানেন তো, মানুষের মন এখনও উন্নত হয়নি। এখনও সে আদিমকালের জীব। ক্যান্সার আক্রান্তদের দিকে তাঁরা ঘুরে তাকাবেনই। আমি এ সবকে যদিও একেবারেই পাত্তা দিই না। কেয়ারও করি না। কিন্তু কিছু রোগীর মনে কষ্ট হয়। সকলের কাছে একটাই অনুরোধ করব, প্লিজ় এই কাজগুলো করা বন্ধ করুন। কোনও ক্যান্সার আক্রান্তকে এভাবে তাকিয়ে দেখবেন না। কিংবা হাসবে না তাঁদের দেখে…”

গত বছর ফের ক্যান্সার ধরা পড়ে অভিনেত্রীর। এবার মারণরোগের ঠিকানা ফুসফুস। তেমন কোনও উপসর্গই ছিল না ঐন্দ্রিলার শরীরে। জানিয়েছিলেন, বিনা কারণে কেবলই মন খারাপ হত তাঁর। তারপর জানতে পারলেন আবারও লড়াইয়ে নামতে হবে। প্রথম দিকে যদিও চিকিৎসা করাতে চাননি। বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না বিষয়টা। বলেছিলেন, “আমাদের পেশায় সারাক্ষণই আয়নার সামনে থাকতে হয়। চুল থেকে নখ, সবই সুন্দর রাখতে হয়। আমার নিজেরও সেজেগুজে থাকতে ভাল লাগে। আগে যেহেতু এই অসুখ আমার হয়েছে, জানতাম, চুল, ভুরু, চোখের পাতা কিছুই থাকবে না। অদ্ভুত দেখাবে আমাকে। আয়নার সামনে দাঁড়ালেই মনে হবে অভিশাপ। সেটা একটা ট্রমা। সেটা মেনে নেওয়া ক্যান্সার পেশেন্টদের কাছে স্ট্রাগল। সেই সঙ্গে চারপাশের মানুষের মন্তব্য আছেই…”