‘তোমার গলার স্বর আমার বুকে আছে বাবা’, দৃষ্টিহীন বৃদ্ধার মন্তব্যে আবেগপ্রবণ অনস্ক্রিন ‘বামাক্ষ্যাপা’

সব্যসাচীর পোস্ট বলছে ভদ্রমহিলা কখনও দেখেননি সব্যসাচীকে। দেখতে পাওয়ার কথাও নয়। কিন্তু সব্যসাচীকে চেনেন তিনি। চেনেন তাঁর গলার স্বর। অভিনেতা লিখছেন, "দৃষ্টি হারিয়েছেন অনেক দিনই, কিন্তু আমার গলা নাকি ওনার মুখস্থ। নিয়ম করে প্রতিদিন আশ্রমের টিভিতে মহাপীঠ তারাপীঠ ‘শোনেন’।

'তোমার গলার স্বর আমার বুকে আছে বাবা', দৃষ্টিহীন বৃদ্ধার মন্তব্যে আবেগপ্রবণ অনস্ক্রিন 'বামাক্ষ্যাপা'
অনস্ক্রিন 'বামাক্ষ্যাপা'র সঙ্গে সাক্ষাৎ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 07, 2021 | 9:55 AM

অনস্ক্রিন ‘বামাক্ষ্যাপা’, ওরফে সব্যসাচী চক্রবর্তী। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ত্রাণ নিয়ে, খাবার নিয়ে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ইয়াসের পরেও অভিনেতা পৌঁছে গিয়েছে ইয়াস বিধ্বস্ত জায়গায়। তবে রবিবার এক বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সব্যসাচীর যে অভিজ্ঞতা হল তা বোধহয় তিনি নিজেও আশা করেননি।

দক্ষিণ বারাসতের বাজারের এক প্রান্তে এক বৃদ্ধাশ্রমে রবিবার হাজির ছিলেন সব্যসাচী রবং তাঁর টিম।সেখানেই এক প্রৌঢ়ার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সব্যসাচী বিবরণ অনুযায়ী, বয়সের ভারে কিছুটা ন্যুব্জ হয়েছেন। সময়ের স্রোতে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে গেছে তার দৃষ্টিশক্তি। তবে চেহারাতে এখনো আভিজাত্য বজায় আছে। ছেলে থাকেন কালীঘাটে। সব্যসাচী লিখছেন, “ছেলে ভাল চাকরি করে, নিজের পরিবার নিয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই দৃষ্টিহীন মা কে নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই। চিকিৎসা করানোটাও একরকম পয়সা নষ্ট বৈকি। অতএব মায়ের ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম। ”

সব্যসাচীর পোস্ট বলছে ভদ্রমহিলা কখনও দেখেননি সব্যসাচীকে। দেখতে পাওয়ার কথাও নয়। কিন্তু সব্যসাচীকে চেনেন তিনি। চেনেন তাঁর গলার স্বর। অভিনেতা লিখছেন, “দৃষ্টি হারিয়েছেন অনেক দিনই, কিন্তু আমার গলা নাকি ওনার মুখস্থ। নিয়ম করে প্রতিদিন আশ্রমের টিভিতে মহাপীঠ তারাপীঠ ‘শোনেন’। আমায় বললেন, “তোমার গলার স্বর আমার বুকে আছে বাবা”। শত বাধা দেওয়া সত্ত্বেও আমায় গড় হয়ে প্রণাম করলেন …”। এত অবধি ঠিকই ছিল, কিন্তু পরের ঘটনার জন্য হয়তো প্রস্তুত ছিলেন না সব্যসাচী এবং তাঁর টিমও।

ছেলে দেখে না, বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে থাকা ওই ‘একলা মা’ প্রণাম করে উঠেই ‘বামাক্ষ্যাপা’কে বলেন, ““আমার ছেলে বড় চাকরি করে, আমার যাতে কোনো কষ্ট না হয় তাই এখানে রেখেছে। খুব ভালো ছেলে আমার, ওকে একটু আশীর্বাদ করো বাবা”।

আরও পড়ুন- ফুসফুসে জমেছে জল, চলছে অক্সিজেন, হাসপাতালে লড়ছেন দিলীপ কুমার

এর পর থেকেই বুকের ভিতর কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে অভিনেতার। তাঁর কথায়, “মা কাকে বলে জানো? এমন একটি মানুষ যার ওপর রাগ দেখানো যায়, অভিমান করা যায়, অপমান করা যায়, ‘তুমি ওসব বুঝবে না’ বলে পাশ কাটানো যায়… জিনিসটাই কেমন যেন আঠালো, চটচটে একটি বস্তু। ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও যায় না, ঘেঁটি ধরে দূর করে দিলেও আবার বেড়ালের মতন ফিরে আসে। পা দিয়ে মাড়িয়ে চলে গেলেও উল্টে জিজ্ঞাসা করে “লাগেনি তো?” …”।

অভিনেতা ঠিক করেছেন সেখানে আবার যাবেন। আবার গিয়ে দেখে আসবেন তাঁর সেই ‘অন্য মা’কে…।