Aparajito: যে নন্দনের সঙ্গে শুরুর দিন থেকে জড়িয়ে ছিলেন সত্যজিৎ রায়, সেখানেই দেখান হচ্ছে না ‘অপরাজিত’

Nandan-Anik Dutta: বিষয়টি নিয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন পরিচালক অনীক দত্ত ও প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান।

Aparajito: যে নন্দনের সঙ্গে শুরুর দিন থেকে জড়িয়ে ছিলেন সত্যজিৎ রায়, সেখানেই দেখান হচ্ছে না 'অপরাজিত'
(বাঁ দিকে) 'নন্দন'; (ডান দিকে) 'অপরাজিতা' ছবির দৃশ্য।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2022 | 4:47 PM

১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর তত্ত্বাবধানে প্রথম ইঁট পড়েছিল ‘নন্দন’ নির্মাণের। ১৯৮৫ সালে নন্দনের উদ্বোধন করেছিলেন অস্কারজয়ী বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়। কেবল তাই নয়, নন্দনের কারুকার্য করা লোগোটি তাঁরই ডিজ়াইন করা। যে লোগো সিনেমাপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে। সত্যজিৎ রায়ের প্রথম পরিচালিত ছবির নাম ‘পথের পাঁচালী’। অনেক কষ্ট করে ছবিটি তৈরি করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে ছবিটি কাল্টে পরিণত হয়। বিশ্বের দরবারে পৌঁছে যায়। বাহবা কুড়িয়ে আনে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে। ‘পথের পাঁচালী’ তৈরি করার অধ্যায় নিয়েই ছবি তৈরি করেছেন আর এক বাঙালি পরিচালক অনীক দত্ত। ছবির নাম ‘অপরাজিত’। যিনি প্রথম ছবি থেকেই প্রমাণ করে দিয়েছেন, যে তিনি সত্যজিতেরই শিষ্য। আগামিকাল, অর্থাৎ ১৩ মার্চ, মুক্তি পাচ্ছে ‘অপরাজিত’। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, যে নন্দনের সঙ্গে শুরুর দিন থেকে জড়িয়ে ছিলেন সত্যজিৎ রায়, সেখানেই দেখান হচ্ছে না ‘অপরাজিত’। বিষয়টি নিয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন পরিচালক অনীক দত্ত ও প্রযোজক ফিরদৌসল হাসান।

প্রযোজকের ফিরদৌসল হাসানের দাবি:

“আমরা ছবিটা জমা দিয়েছিলাম নন্দনে। সোমবার (০৯.০৫.২০২২) মিত্র চট্টোপাধ্যায়কে (নন্দনের কর্তৃপক্ষ) ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি দেখছি, দেখব…’। গতকাল টিকিট বুকিংয়ের অনলাইন সাইট খুলে দেখি অন্যান্য ছবির বুকিং চালু হয়েছে। সেই তালিকায় ‘অপরাজিত’র নাম নেই।

ছবিটা নন্দনে প্রদর্শনী পাওয়ার মতো যোগ্য ছবি। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে নন্দনের একটা যোগ আছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নন্দন তৈরি হয়েছে কীসের জন্য? মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে ভাল বাংলা ছবিকে দেখানোর জন্যই তো। সব দর্শক তো মাল্টিপ্লেক্সে গিয়ে ১০০০ টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে পারবেন না। ফলে নন্দনে বহু দর্শক আসেন। যে ছবিটা টোরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছে, লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছে, যে ছবিটা সত্যজিৎ রায়ের ১০০ বছরের জন্মদিনকে সেলিব্রেট করছে, সেটা যদি ডিসার্ভ না করে, তা হলে কোন ছবি করবে। যে ছবিগুলো চলছে সেই তুলনায় আমার ছবিটা তো প্রদর্শনীর জন্য বেশি যোগ্য। সেটাই আমি বিশ্বাস করি।

ওরা তো নতুন একটা হলও খুলল ‘রাধা’। সেখানেও তো দিতে পারত। সেখানেও তো দিল না। তবে রাজনীতি আমি বুঝি না। আমরা বাঙালি, বাংলা ছবি তৈরি করি। যে ছবিটি বাংলা ছবিকে বিশ্বের দরবার রিপ্রেজ়েন্ট করেছে, সেই ছবিটা কলকাতায় সরকারি হলে স্ক্রিনিং পাচ্ছে না, এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে।

এই ঘটনা কেন ঘটল তা সত্যি আমার জানা নেই। আমি সত্যিই খুবই অবাক হয়েছি। ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু হওয়ার আগে আমরা ছবি জমা দিয়েছিলাম। ছবি দেখে ওঁরা খুশি হয়েছিলেন। যে ক’জন দেখেছেন সকলে রেকমেন্ড করেছেন ছবিটা দেখার জন্য। এবার তো দর্শক বঞ্চিত হচ্ছেন ছবিটা দেখার থেকে।”

অন্যদিকে ছবির পরিচালক অনীক দত্ত বলেছেন, “এগুলো আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছেন। আমার ছবিটা ওরা নেয়নি। আমাদের ওরা হল দেয়নি। সেরকমই আমি শুনেছি প্রযোজকের থেকে। ওদের স্ক্রিনিং কমিটি কিন্তু ছবিটা অ্যাপ্রুভ করেছিল। এবং সকলে আমাকে মেসেজ করেছিল। বলেছিল দারুণ লেগেছে। তারমধ্যে সরকারের কাছের লোকও আছে। কিন্তু তারপরও কেন ছবিটা দেখানো হবে সেটা আমি জানি না। যারা ছবিটাকে জায়গা দিল না তাদের জিজ্ঞেস করা উচিত কী কারণে নিল না।”

অনীক দত্তর সঙ্গে কথা বলার পর TV9 বাংলা কথা বলার চেষ্টা করে নন্দন কর্তৃপক্ষ মিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু তাঁর থেকে কোনও উত্তর মেলেনি। মেসেজেরও উত্তর দেননি তিনি।

এই মুহূর্তে নন্দনে চলছে বেশ কিছু বাংলা ছবি। যে ছবির তালিকায় রয়েছে ‘কিশমিশ’ ও ‘রাবণ’।