Obesity Surgery: ৮০ বছরের বৃদ্ধের দেহে সফল হল ওবেসিটি সার্জারি, ৩ দিনে ৫ কেজি ওজন কমালেন রোগী
Bariatric surgery: উন্নত প্রযুক্তি, অ্যানাস্থেসিয়া, যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই সার্জারি করা হয়। যা বৃদ্ধদের জন্য সুরক্ষিত। তাঁদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় না
অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা কে এম সফিউল্লাহ, বয়স ৮০,বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং অনন্তপুরের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং কোমর, পিঠ, হাঁটুর সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সঙ্গে ওজন ১১৫ কেজি। এছাড়াও গত ৫-৬ বছর ধরে তিনি ভুগছিলেন শ্বাসকষ্টের সমস্যায়। এরপরই চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেন ওয়েট লস সার্জারির। চিকিৎসা পরিভাষায় যা ল্যাপ্রোস্কোপিক স্লিভ গ্যাসট্রেকটমি নামে পরিচিত। ৮ সেপ্টেম্বর পুনের Poona Hospital And Research Center- এ তাঁর অপারেশন হয়। ব্যারিয়াট্রিক সার্জেন ডাঃ শশাঙ্ক শাহের তত্ত্বাবধানেই পুরো সার্জারিটি হয়। সার্জারির তিন দিনের মধ্যেই তাঁর ৫ কেজি ওজন কমে গিয়েছে। চিকিৎসকদের আশা আগামী ৮-৯ মাসের মধ্যে ৪০ কেজিরও বেশি ওজন কমে যাবে। এই পুরো সার্জারিতে সময় লেগেছে মাত্র ৩০ মিনিট।
এই সার্জারি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ডাঃ শাহ বলেন, এর আগে আমেরিকাতে ৮৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার এই ওবেসিটি সার্জারি হয়। বর্তমানে তাঁর বয়স ৯১। তিনি সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। উন্নত প্রযুক্তি, অ্যানাস্থেসিয়া, যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই সার্জারি করা হয়। যা বৃদ্ধদের জন্য সুরক্ষিত। তাঁদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় না। সফিউল্লাহ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। সার্জারির পর তাঁর ব্লাড সুগারের মাত্রা ক্রমশ কমতে থাকে। এখন তা অনেকটাই স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। আমাদের আশা, আগামী কয়েক মাসে তাঁর আরও কিছুটা ওজন কমে যাবে। ওজন কমে গেলেই হাই ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে তিনি খানিকটা মুক্তি পাবেন।
৮ সেপ্টেম্বর সার্জারির পর ১০ সেপ্টেম্বর- রবিবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সার্জারির পর মন থেকে ভীষণই খুশি তিনি। সফিউল্লাহের কথায়, ‘আমার এখন আগের চাইতে অনেক বেশি হালকা বোধ হচ্ছে। সার্জারির পর রোজকার ইনসুলিনের ডোজ কমেছে। আগে আমাকে ৪২ ইউনিট ইনসুলিন নিতে হত। সেই সংখ্যাটা এখন দাঁড়িয়েছে ৮ ইউনিটে। আশা করি তা আরও কমবে। আপারেশনের কয়েকদিন আগেই আমার সঙ্গে পরিচয় হয় ডাঃ শাহের। তিনি আমাক বেশ কিছু আত্মীয়ের ক্ষেত্রেও এই সার্জারি করেছিলেন। আমি জানতাম এই সার্জারির উপকারিতা কতখানি। এরপরই পুনেতে এসে এই সার্জারির সিদ্ধান্ত নিই’।
সফিউল্লাহের সবচেয়ে বেশি চিন্তা ছিল তাঁর বয়স নিয়ে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ওজন, হাঁটুর ব্যথা, শ্বাসকষ্ট সহ-একাধিক সমস্যা শরীরে জাঁকিয়ে বসেছিল। সঙ্গে অতিরিক্ত সুগার, রোজ ইনসুলিন নেওয়ায় অন্যান্য অনেক চিকিৎসাতেও সমস্যা হচ্ছিল। অর্থোপেডিক সার্জনের পরামর্শে তিনি বেরিয়াট্রিক সার্জারির (Bariatric Surgery) সিদ্ধান্ত নেন। স্পাইনে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। যার প্রাথমিক শর্ত ছিল ওজন কমানো। ওজন কম না হলে কিছুতেই কোনও সমস্যার সমাধান হচ্ছিল না। চিকৎসক জানিয়েছেন, সফিউল্লাহ যাতে সুস্থ থাকেন, হাঁটু-স্পাইনের সমস্যা থেকে মুক্তি পান এই বিষয়টি নিয়েই সচেতন ছিলেন তাঁর বাড়ির লোকেরা। আর তাই তাঁর ৮০ বছরের জন্মদিনেই এই সার্জারির দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। সফিউল্লাহর মেয়ে জানান, ‘জন্মদিনে এর থেকে ভাল উপহার বাবার জন্য আর কিছু হতে পারে না’। মাত্র ৩০ মিনিটের অ্যানাস্থেসিয়াতেই পুরো অপারেশন হয়ে যায়। চিকিৎসক শাহ এর আগেও বহু বৃদ্ধকে এই ওবেসিটি সার্জারির মাধ্যমে সুস্থ করে তুলেছেন। কেউ ৭৫ কেউ আবার ৭৮ বছর বয়সে এই সার্জারি করিয়েছেন। তবে সকলেই এখন সুস্থ আছেন।