Heart Disease: ভাতের থালায় একমুঠো নুন না হলে মুখে রোচে না! এতে স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ছে অজান্তেই, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

Best Eating Habit: সমীক্ষার পরিচালকরা বলছেন, প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা অন্তত ১০০০ মিলিগ্রাম পরিমাণেও কমাতে পারলে হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা রুখে সম্ভব হবে।

Heart Disease: ভাতের থালায় একমুঠো নুন না হলে মুখে রোচে না! এতে স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ছে অজান্তেই, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 11, 2022 | 9:22 AM

আমরা সকলেই জানি সুষম খাদ্য (Healthy Food) খেলে শরীর ভাল থাকে। অর্থাৎ চিকিৎসকরা বলেন এমন খাদ্য খান যার মধ্যে থাকবে সঠিক মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ। সমস্যা হল বেশিরভাগ ব্যক্তিই সুষম খাদ্যের সংজ্ঞা জানেন না। এর ফলে লোভের বশবর্তী হয়ে ফ্যাট এবং সোডিয়ামযুক্ত নোনতা খাদ্য (Salty Food) বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেলেন যা তাঁদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যার দিকে ঠেলে দেয়। মার্কিন মুলুকের একদল গবেষক জানাচ্ছেন খাদ্যাভ্যাসে (Healthy Diet) সামান্য পরিবর্তনই কিন্তু গড়ে দিতে পারে বিরাট ফারাক। তাঁরা জানাচ্ছেন, গাইডলাইন অনুসারে আমেরিকার প্রাপ্তবয়স্কদের উচিত প্রতিদিন খাদ্যের মাধ্যমে ২৩০০ মিলিগ্রামেরও কম সোডিয়াম গ্রহণ করা। অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মার্কিনি গড়ে প্রায় ৩৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করেন।

মার্কিন মুলুকের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানাচ্ছে, সোডিয়াম গ্রহণ সম্পর্কিত গাইডলাইন সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যই তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই আলোচনায় উঠে এসেছে নতুন একটি সমীক্ষা। সমীক্ষার পরিচালকরা বলছেন, প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা অন্তত ১০০০ মিলিগ্রাম পরিমাণেও কমাতে পারলে হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোকের মতো সমস্যা রুখে সম্ভব হবে।

গবেষণা

কিছু দিন আগে একদল গবেষক চিনের ৫০০০ মানুষের উপর রোজকার সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা সম্পর্কিত সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। ওই গবেষকদলের সংগ্রহ করা তথ্য নিয়ে আবার অন্য একদল গবেষক ওই তথ্যভাণ্ডারকে বিশ্লেষণ করেছেন একটি মডেলের সাহায্যে। তাঁরা ওই মডেলের সাহায্যে গবেষকদল দেখিয়েছেন প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম, ৩২০০ মিলিগ্রাম ও ৫০০০ মিলিগ্রাম মাত্রায় সোডিয়াম গ্রহণ কমাতে পারলে মানবদেহে তার সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে! দ্বিতীয় দলের গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল, সোডিয়াম গ্রহণ কমালে কীভাবে তা ব্লাড প্রেশার, হার্টের অসুখ, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় তা বোঝা।

দেখা যায়, মাত্র ১০০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ কমালেই হার্ট ডিজিজ ও স্ট্রোকের মতো ৯০ লক্ষ দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ লক্ষ প্রাণহানির ঘটনাও আটকানো সম্ভব হবে।

করবেন কী?

বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন, এই স্টাডি বিস্ময় জাগায়। কারণ এই সমীক্ষা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, সামান্য সোডিয়াম গ্রহণও কীভাবে সম্ভাব্য অসুখের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে!

এই সমীক্ষার ফলে বহু মানুষ সোডিয়াম বর্জনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

তবে কিছু বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, স্টাডির মধ্যে বেশ কিছু ফাঁক রয়ে. গিয়েছে।

বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ানরা বলছেন, গভীরভাবে স্টাডির রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ বোঝা যাবে খুব অল্প সময়ের জন্যই আগের সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়েছিল। এরপর একটি মডেলে ওই তথ্য ফেলে সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যা পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। তাঁরা বলছেন, সোডিয়াম গ্রহণ কীভাবে সময়ের সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে তা পরিষ্কার করে দেখানো হয়নি এই সমীক্ষায়। এছাড়া সোডিয়াম বর্জনের সঙ্গে রক্তচাপ হ্রাস পাচ্ছে ঠিকই তবে তা যে স্থায়ী হবে সেই বিষয়ে নিশ্চিত করছে না সমীক্ষা। তবে সামান্য মাত্রায় সোডিয়াম বর্জন করলেও যে সামগ্রিক স্বাস্থ্যে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে তা একপ্রকার স্পষ্ট।

কীভাবে সোডিয়াম গ্রহণ কমাবেন

ডায়েটিশিয়ানরা জানাচ্ছেন, স্টাডিতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়নি। বরং একটি ছক বা মডেলের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। ফলে এই স্টাডির ফলাফল কী হতে পারে তার সম্পর্কে আন্দাজ করাই যাচ্ছিল। তবে এরপরেও সোডিয়াম গ্রহণের মাত্রা কমানোর পক্ষেই জোর দিচ্ছেন ডায়েটিশিয়ানরা। সোডয়াম গ্রহণের মাত্রা কমাতে কিছু নিয়ম মেনে চলার কথা বলছেন তাঁরা—

• হট ডগ, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পট্যাটো চিপস, নাগেটস, প্রিজারভেটিভ দেওয়া যে কোনও মুচমুচে খাদ্য, ভাজাভুজি খাওয়া যাবে না বা কমাতে হবে।

• রান্নায় নুনের ব্যবহার যতটা সম্ভব কমাতে হবে।

• পাতে কাঁচা নুন নেওয়া চলবেই না। এমনকী খোলায় ভাজা নুন, বিটনুনও খাওয়া যাবে না।

সাধারণ কতকগুলি নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ-এর ঝুঁকি কমবে অনেকগুণ— জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।