Singer KK Death: সময়ে CPR দিলে বেঁচে যেতেন কেকে! কী এই সিপিআর?
Cardiac Health: যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বাভাবিকভাবে শরীর তার স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসের কাজ শুরু করতে পারছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রিসাসিটেশন করা হয় ব্রেনের রক্ত পৌঁছনো এবং তার কার্যক্ষমতা বজায় রাখার জন্য।
গত ৩১ মে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠান চলাকালীন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (Singer K K) সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের (SCA) কারণে মারা যান। প্রায় ১ ঘণ্টা অনুষ্ঠান চলার পর তিনি শরীরে অস্বস্তি অনুভব করছিলেন। হোটেলে পৌঁছনোর পর শরীর ভারী ভারী লাগছিল বলেও জানিয়েছিলেন। খুব দ্রুত তিনি এলিয়ে পড়েন। নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে ব্রট ডেড বলেল ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান, এই বিখ্যাত গায়কের প্রাণহানি ঘটেছে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (Cardiac Arrest) এবং দীর্ঘদিনের ফুসফুসের অসুখের কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাতে আসা তথ্য থেকে পরিষ্কার যে প্রথম ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে যদি কেউ তাঁকে সিপিআর দিত, তাহলে সম্ভবত গায়ককে বাঁচানোর একটা সুযোগ বেড়ে যেতে ৪০-৫০ শতাংশ অবধি।
সিপিআর (CPR) কী?
• কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) অন্যতম আপদকালীন চিকিৎসাপদ্ধতি যা কৃত্রিম ভেন্টিলেশন এবং চেস্ট কম্প্রেশনের (বুকের উপর চাপ তৈরি) উপর নির্ভর করে।
• ব্রেনের কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ এবং রক্ত সঞ্চালন ক্রিয়া পুনরুদ্ধার করতে পারে সিপিআর।
• সিপিআর অত্যন্ত সহজ জীবনদায়ী প্রক্রিয়া যা যে কোনও ব্যক্তি প্রয়োগ করতে পারেন। শুধু সিপিআর দেওয়ার সঠিক পদ্ধতিটি জানতে হবে।
কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন এমন এক আপদকালীন পরিস্থিতি যা কৃত্রিম ভেন্টিলেশন এবং চেস্ট কম্প্রেশনের উপর নির্ভর করে। যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বাভাবিকভাবে শরীর তার স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসের কাজ শুরু করতে পারছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রিসাসিটেশন করা হয় ব্রেনের রক্ত পৌঁছনো এবং তার কার্যক্ষমতা বজায় রাখার জন্য। সিপিআর নিশ্চিতভাবে জীবনদায়ী এক প্রক্রিয়া যা সঠিকভাবে করতে জানলে যে কেউ প্রাণ বাঁচাতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে রোগীকে প্রথমে সমতল জায়গায় শুইয়ে দিতে হয়। এরপর যিনি সিপিআর দেবেন তাঁকে রোগীর পাশে নীল ডাউন পদ্ধতিতে বসতে হবে। তারপর এক হাতের তালু অন্য হাতের উপর রেখে নীচের হাতের তালু দিয়ে রোগীর বুকের মাঝখানে এমনভাবে চাপ দিতে হবে যেন প্রতি মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ টি প্রেশার পড়ে। পরপর প্রতিটি পদক্ষেপ বলা হল—
১) আশপাশ দেখে নিন কোনও আলাদা বিপদ নেই তো? ২) সম্ভব হলে একটি পিপিই কিট পরে নিন। ৩) রোগী যদি সাড়া না দেয় তাহলে রোগীর শরীরে কোথাও রক্তপাত হচ্ছে কি না দেখুন। এছাড়া রোগী অল্প অল্প শ্বাস নিচ্ছে কি না তাও খেয়াল করুন। ৪) রোগী কোনওরকম প্রশ্নের উত্তর না দিলে বা শ্বাস না নিলে, দ্রুত হাসপাতালে খবর দিন। ৫) হাসপাতাল থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত না সাহায্য এসে পৌঁছাচ্ছে ততক্ষণ অবধি রোগীকে সমতল জায়গায় চিত করে শুইয়ে রাখুন। ৬) আগেই বর্ণিত পদ্ধতিতে দুই হাতের সাহায্যে প্রতিবার ৩০ টি করে বুকে চাপ প্রয়োগ করুন ও রোগীর মুখে মুখ লাগিয়ে দু’বার শ্বাস দিন রোগীর মুখে। এই ভাবে ৩০ টি চাপ ও দু’বার শ্বাস দেওয়াকে একটি সেট বলে। এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যান যতক্ষণ না পর্যন্ত সাহায্য আসছে। ৭) মনে রাখবেন শরীরের সকল ওজন যেন হাতের সাহায্যে বুকের ওপর পড়ে। ৮) মুখে মুখ লাগিয়ে ফুঁ দিন ও ফুসফুসে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করুন। ৯) রোগীর চারপাশে ভিড় জমাবেন না বা রোগীর যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। মনে রাখতে হবে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পর প্রথম তিন মিনিটের মধ্যেই সিপিআর শুরু করতে হবে। না হলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে ও রোগীর প্রাণহানি অবধি ঘটতে পারে।