AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

করোনা জয়ীদের শরীরে থাবা বসাচ্ছে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’, কীভাবে সতর্ক হবেন?

এই 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' আসলে কী? কতটা ক্ষতি করছে এই ফাঙ্গাল ইনফেকশন? এর উপসর্গই বা কী?

করোনা জয়ীদের শরীরে থাবা বসাচ্ছে 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস', কীভাবে সতর্ক হবেন?
ছবি প্রতীকী
| Updated on: May 10, 2021 | 5:39 PM
Share

একা করোনায় রক্ষা নেই, সঙ্গে দোসর ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’। বিরল ধরণের এই গুরুতর ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিচ্ছে কোভিড আক্রান্ত এবং কোভিড সারভাইভারদের দেহে। আপনার ত্বক, ফুসফুস এমনকি মস্তিষ্ক পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই mucormycosis অথবা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’- এর প্রভাবে। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতে এই ফাঙ্গাল ইনফেকশনে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। নড়েচড়ে বসেছেন দেশের চিকিৎসকরা। রবিবার একটি অ্যাডিভাইসরি জারি করা হয়েছে। সেখানে এই নতুন রোগের লক্ষণ, কীভাবে সতর্ক হবেন, কী করবেন-কী করবেন না ও আরও নানা নিয়মকানুন বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে।

mucormycosis অথবা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’- এর প্রভাবে কী ধরণের ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে?

একটি বিশেষ প্রজাতির moulds বা ফাঙ্গাস হল mucormycetes। সাধারণত পরিবেশে এমনিই ছড়িয়ে থাকে এই ছত্রাক। মূলত যাঁরা কোনও অসুখের পর চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, অর্থাৎ ওষুধপত্র চলছে এবং শরীর দুর্বল, যথেষ্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই, তাঁদেরকেই আক্রমণ করে এই ফাঙ্গাস। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফাঙ্গাল ইনফেকশন। যাঁদের সদ্য কোনও অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ধরণের ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা যায়। তবে যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সুদৃঢ়, তাঁদের ভয়ের কোনও কারণ নেই। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিনে যে ক’টি ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কোভিড সারভাইভার।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং আইসিএমআর- এর গাইডলাইন

সরকারি অ্যাডভাইসরিতে এই রোগের বিভিন্ন উপসর্গের কথা বলা হয়েছে। কী কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে এই ফাঙ্গাল ইনফেকশনে-

১। চোখ এবং নাকের চারপাশ লাল হয়ে যাওয়া ও যন্ত্রণা।

২। জ্বর, মাথাব্যথা, সর্দি-কাশি, শ্বাস নিতে সমস্যা, রক্তবমি।

৩। নাক বন্ধ হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া।

৪। গালে ব্যথা হওয়া, মুখের একপাশে যন্ত্রণা, মুখ ফুলে যাওয়া।

৫। নাকের উপরের অংশে কালচে দাগ হয়ে যাওয়া।

৬। দাঁত দুর্বল হয়ে যাওয়া, চোয়াল-দাঁতে ব্যথা।

৭। যন্ত্রণায় চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।

৮। গলা-ঘাড়-কাঁধে যন্ত্রণা, চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া।

৯। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়া।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাক বন্ধ হয়ে গেলেই এটা ভাবার কারণ নেই যে আপনার ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়েছে। তবে যেহেতু করোনার সঙ্গে এই ইনফেকশনের উপসর্গের বেশ কিছু মিল রয়েছে, তাই অস্বস্তি বোধ করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি।

কারা বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকবেন?

যাঁদের মাত্রাছাড়া ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, স্টেরয়েড নেন এবং তার কিছুটা প্রভাব রয়েছে, অনেকদিন ধরে আইসিইউতে ছিলেন, বিভিন্ন ধরণের কোমর্বিডিটি রয়েছে, অঙ্গ-প্রত্যং প্রতিস্থাপন হয়েছে— এই ধরণের মানুষরা একটু বেশি সতর্ক থাকুন।

কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

ধুলোবালির জায়গায় গেলে অতি অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। এমনিতেও করোনার প্রভাবে মাস্ক আমাদের নিত্যসঙ্গী। এই মাস্ককে কখনই ভুলে যাওয়া চলবে না। লম্বা হাতাওয়ালা জামা এবং ফুল প্যান্ট পরুন। হাতে গ্লাভস আর পায়ে জুতোও যেন থাকে। বিশেষ করে যাঁদের বাগান করার শখ রয়েছে এবং মাটি ঘাঁটেন, তাঁরা এগুলো বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন। বাগান থেকে ফিরে বা বাইরে থেকে বাড়ি এসে ভাল করে স্নান করে নিন।

আরও পড়ুন- টাক পড়ে যাওয়া পুরুষদের ক্ষেত্রে মারাত্মক রূপ নিতে পারে কোভিড, জানাচ্ছে মার্কিন গবেষণা

কী কী করবেন-

১। হাইপারগ্লাইসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ করা।

২। স্টেরয়েড নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণ, সঠিক পদ্ধতি এবং সঠিক সময়ের দিকে খেয়াল রাখা।

৩। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত খেয়াল রাখা।

৪। অক্সিজেন থেরাপির সময় পরিষ্কার জল ব্যবহার করা।

৫। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়া।

কী কী করবেন না- 

১। যদি লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ভয় না পেয়ে ডাক্তারের কাছে যান।

২। নাকে কালচে ভাব দেখা দেওয়া মানেই ফাঙ্গাল ইনফেকশন নয়। অতএব অযথা আতঙ্কিত হবেন না।

৩। শরীরে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়েছে কি না তা বুঝতে, KOH staining & microscopy, culture, MALDITOF এইসব পরীক্ষা করান। ভয় পাবেন না।