AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মহেশ মঞ্জরেকরের মতো আপনিও ব্লাডার ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন! এই কর্কটরোগের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার- সব জানুন এখানে…

এই কর্কট রোগের অন্যান্য উপসর্গ হল, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়া, ঘন ঘন বা জরুরি অবস্থায় প্রস্রাব পাওয়া, প্রস্রাব করার সময় তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করা, পেটে অস্বস্তি, অসঙ্গত প্রস্রাব,পিঠের নিচের অংশে ব্যাথার মতো লক্ষণ হলে, অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

মহেশ মঞ্জরেকরের মতো আপনিও ব্লাডার ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন! এই কর্কটরোগের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার- সব জানুন এখানে...
ছবিটি প্রতীকী
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 1:19 PM
Share

৬৩ বছরে পা দেওয়ার পরই জীবনের সবচেয়ে বড় অঘটনটি ঘটে গিয়েছে। সম্প্রতি জন্মদিন পালন করার এক সপ্তাহ পরই বলিউডের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা মহেশ মঞ্জরেকর জানতে পারেন, তিনি কর্কট রোগে আক্রান্ত। তবে ক্যান্সারের অস্ত্রোপচার করে তিনি এখন বাড়িতেই রয়েছেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাত্‍কারে জানা গিয়েছে, বলিউড সিনেমা জগতে এই অভিনেতা কিছুদিন ধরেই মূত্রাশয়ের ক্যানসার নিয়ে ভুগছিলেন। শেষে অস্ত্রোপচার করার তিনি আপাতত সুস্থ। রিপোর্ট অনুসারে, কয়েক সপ্তাহ ধরেই মারণরোগের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। জানা গিয়েছে, পরিচালক ও অভিনেতা মুম্বইয়ের গুরগাঁওয়ের এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে অস্ত্রোপাচার করেছিলেন। সফল অস্ত্রোপচারের পর তিনি বাড়িতেই রয়েছেন। তবে এই অভিনেতার মতো সারা বিশ্বে কয়েকলক্ষ মানুষ মূত্রাশয়ের ক্যানসারের আক্রান্ত।

মূত্রাশয় ক্যানসার কী

মূত্রাশয় ক্যান্সার ইংরেজিতে ব্ল্যাডার ক্যান্সার (Urinary Bladder Cancer)নামে পরিচিত। যখন মূত্রাশয় কোষগুলির অস্বাভাবিকভাবে বিকাশ ঘটে, তখনই ক্যানসারের আকার ধারণ করে। প্রাথমিকভাবে পেটে ব্যাথার উপসর্গ তৈরি হয়। উপেক্ষা করলে শারীরিক নানান সমস্যা তৈরি হয়। সমস্যা জটিল হতে শুরু করে। মূত্রাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষদের আরও ব্যথা এবং ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়। ভারতে প্রতি বছর মূত্রাশয় ক্যান্সারের ২ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভোগেন। এই কর্কটরোগের কারণে বহু মানুষ মারাও যান।

সমস্ত বিশ্বজুড়ে ৩,৫০,০০০ মানুষের ৩% এর ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের কারণে মূত্রাশয় ক্যান্সার হয়। এটি প্রতি বছর নির্ণয় করা হয়। এটা সব বয়সের মধ্যে হয় কিন্তু ৫০-৬০ এর মধ্যে বয়সি পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে বেশি প্রবণতা দেখা যায়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মূত্রাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

ট্রানজিশনাল সেল কার্সিনোমা: এটি মূত্রাশয়ের ভেতরের স্তরের ট্রানজিশনাল কোষে শুরু হয়। যখন টিস্যু প্রসারিত হয়, ট্রানজিশনাল কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে রূপান্তরিত হয়।

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা: যখন পাতলা, সমতল স্কোয়ামাস কোষ মূত্রাশয়ে দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ বা জ্বালাপোড়ার পরে তৈরি হয়, তখন বিরল ক্যান্সারের সূত্রপাত ঘটে ।

অ্যাডেনোকার্সিনোমা: যখন দীর্ঘস্থায়ী মূত্রাশয়ের জ্বালা এবং প্রদাহের ফলে গ্রন্থি কোষ বৃদ্ধি পায়, তখন বিরল এই মূত্রাশয়ের ক্যান্সার এই ধরনের মূত্রাশয়ে বিকাশ করে ।

মূত্রাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ

ক্লান্তি, ওজন হ্রাস এবং হাড়ের ব্যাথা মূত্রাশয় ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। এছাড়া এই কর্কট রোগের অন্যান্য উপসর্গ হল, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়া, ঘন ঘন বা জরুরি অবস্থায় প্রস্রাব পাওয়া, প্রস্রাব করার সময় তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করা, পেটে অস্বস্তি, অসঙ্গত প্রস্রাব,পিঠের নিচের অংশে ব্যাথার মতো লক্ষণ হলে, অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণ

নিম্নলিখিত কারণগুলি মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, দেখে নিন একঝলকে,

ধূমপান করা- ধূমপান সিগারেট, সিগার বা পাইপ মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। সিগারেটের বিপজ্জনক পদার্থ মূত্রাশয়ের আস্তরণকে ধ্বংস করতে পারে, আপনার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার মূত্রাশয় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যদিও মূত্রাশয় ক্যান্সার যে কোন বয়সে যে কারোর হতে পারে, তবে যাদের নির্ণয় করা হয় তাদের অধিকাংশই ৫৫ বছরের বেশি বয়সী হয়।

উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া- জার্নাল ইনভেস্টিগেটিভ অ্যান্ড ক্লিনিকাল ইউরোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে অস্বাস্থ্যকর চর্বি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়- গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের এই ধরনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

পারিবারিক ইতিহাস- যদিও মূত্রাশয় ক্যান্সার খুব কমই পরিবারগুলিতে দেখা যায়, তবুও রক্তের সম্পর্কে অটুট আত্মীয়দের মধ্যে একজন পিতা -মাতা, ভাইবোন বা সন্তানের এই রোগ হয়, তাহলে আপনি এটি হওয়ার ঝুঁকিতে থাকতে পারে।

জল পান করা কম হলে– তরল বা জল হজম, শোষণ, পরিবহন এবং বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের টক্সিন এবং বর্জ্য পদার্থও জলের মাধ্যমে নির্মূল হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সিস্টেমে জলের অভাবে মূত্রাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী মূত্রাশয় সংক্রমণ- দীর্ঘস্থায়ী বা পুনরাবৃত্তিমূলক মূত্রনালীর সংক্রমণ বা প্রদাহ (সিস্টাইটিস), যেমন একটি দীর্ঘ সময়ের জন্য মূত্রনালীর ক্যাথিটার ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট, স্কোয়ামাস সেল ব্লাডার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিকের সংস্পর্শ- কিডনিতে রক্ত ​​সঞ্চালন থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলিকে ফিল্টার করে মূত্রাশয়ে পরিবহনের জন্য দায়ী। ফলস্বরূপ, এটি সম্ভব যে নির্দিষ্ট রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা মূত্রাশয় ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।

প্রতিকার কী

এখন ঘরে ঘরে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই কর্কটরোগ। কে কখন এই মারণরোগের শিকার হবেন, তা অনিশ্চিত। তবে মূত্রাশয় থলিতে ক্যানসারের প্রবণতা যাতে বৃদ্ধি না হয়. তার জন্য কিছু জিনিসের উপর নজর রাখলেই হবে। সেগুলি কী কী, তা দেখে নিন একনজরে…

-ধূমপান পরিহার করুন -প্রচুর জল পান কর -কার্সিনোজেনিক রাসায়নিকের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন -সেকেন্ডহ্যান্ড সিগারেট এড়িয়ে চলতে হবে -বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি বেছে নিন

আরও পড়ুন: অনিদ্রা কাটাতে প্রতিদিন ঘুমের ওষুধ খাচ্ছেন? রাতে ভাল ঘুমের জন্য এই টিপস মানলে উপকার মিলবে দ্রুত