Women Sleep Disorders: পুরুষের চেয়ে ঠিক কত মিনিট ঘুম বেশি দরকার মহিলাদের?
World Sleep Day: পুরুষদেরও কখনও স্ত্রী নাক ডাকেন, এই অভিযোগ করতে শোনা যায়। অথচ, পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই কম ঘুমোন। তাঁদের ঘুমের সমস্যাও নেহাত কম নয়। গবেষণাও বলছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ঘুম বেশি দরকার। কতটা বেশি দরকার? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

মেঘা মণ্ডল
ঘুম—এই একটা কাজ করার জন্য কসরত করার কথা নয়। কিন্তু আজকাল এই ঘুমের জন্যই অনেককে কষ্ট করতে হয়। এমনকি ঘুমের মধ্যেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে। অনেক মহিলাই তাঁদের স্বামী বা পার্টনারের নাক ডাকাকে কেন্দ্র করে অভিযোগ করেন। কিন্তু নাক ডাকাটাই একমাত্র সমস্যা নয়। উপরন্তু পুরুষদেরও কখনও স্ত্রী নাক ডাকেন, এই অভিযোগ করতে শোনা যায়। অথচ, পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই কম ঘুমোন। তাঁদের ঘুমের সমস্যাও নেহাত কম নয়। গবেষণাও বলছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ঘুম বেশি দরকার।
বিশ্বজুড়ে আজ, ১৫ মার্চ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ঘুম দিবস। এই বিশেষ দিনকে কেন্দ্র করে ঘুম দিবসের ঠিক আগের দিন, ১৪ মার্চ, বৃহস্পতিবার ‘ইনস্টিটিউট অফ স্লিপ সায়েন্স’ আয়োজন করেছিল একটি সেমিনার ‘ডিপস্লিপ’। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ইএনটি স্পেশালিস্ট ও স্লিপ অ্যাপনিয়া সার্জেন ডাঃ দীপঙ্কর দত্ত, স্লিপ ফিজিশিয়ান ডাঃ অরূপ হালদার, পালমোনোলজিস্ট ডাঃ দেবরাজ জাশ, নিউরোসাইক্রিয়াট্রিস্ট ও স্লিপ ফিজিশিয়ান ডাঃ রাজশ্রী নিয়োগী, পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাঃ পল্লব চ্যাটার্জি, পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাঃ গৌতম ঘোষ এবং পেডিয়াট্রিশিয়ান ডাঃ সংযুক্তা দে। আলোচনার বিষয় ছিল মহিলাদের মধ্যে ঘুমের সমস্যা।
অফিসের কাজ শেষ হওয়ার পর ক্লান্ত হয়ে প্রয়োজনীয় বিশ্রামটুকু নেওয়ার অবকাশ নেই মহিলাদের। বাড়ি ফিরে সংসারের দায়িত্বও পালন করতে হয়। স্বামী-সন্তানের ঘুমনোর পরও মাথায় চলতে থাকে, কাল সকালে কী রান্না হবে, সন্তানকে টিফিনে কী দেবেন, অফিসের কোন-কোন কাজ বাকি আছে ইত্যাদি, প্রভৃতি। ওয়ার্কিং উইমেন না হলেও এক হাতে সংসার সামলাতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় মেয়েদের। আর এই সবকিছুর মাঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁদের ঘুম।
গবেষণা বলছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ১১ মিনিট বেশি ঘুমনো দরকার। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মস্তিষ্ক আলাদাভাবে কাজ করে। মহিলাদের মধ্যে দশভূজা সত্ত্বা কাজ করে (multitasking)—বলা ভাল সমাজ আর পারিপার্শ্বিক সেভাবে ‘তৈরি’ করে দিয়েছে মহিলাদের। একহাতে অনেক কাজ করাটাই যেন দস্তুর। শরীরকে rejuvenate অর্থাৎ চাঙ্গা করার জন্য ঘুম বেশি দরকার। তবেই, পরদিন আবার এনার্জি সঙ্গে করে তিনি কাজ করতে পারবেন। শুধু তাই-ই নয়, গবেষণা এটাও বলছে, যে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে ইনসোমনিয়া, অ্যানজ্যাইটি, ডিপ্রেশনে ভোগার প্রবণতা বেশি। এছাড়া হরমোন ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে লড়াই করার জন্য ঘুম অপরিহার্য।
মহিলারা দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। আর গাঢ় ঘুম হয়। এই ২টোই ভাল ঘুমের লক্ষণ। কিন্তু দেখতে গেলে, মানসিক চাপ, কাজের চাপ থেকে শুরু করে মেন্সট্রুয়াল স্বাস্থ্য, প্রেগন্যান্সি, পোস্টপার্টেম, মেনোপজ়ের মতো অবস্থাগুলো মহিলাদের মধ্যে ঘুমের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। ঠিক যেমন ৩৮-৬০% মহিলা মেনোপজ়ে পৌঁছে অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন।
এখানেই শেষ নয়। মহিলারাও অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভোগেন। কিন্তু তাঁরা নাক ডাকেন না। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হল ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের একটি রোগ। যেখানে ঘুমানোর সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাস অনিয়মিত হয়ে যায়। কখনও নিঃশ্বাস শুরু হয়, আবার কখনও আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। নাক ডাক, মুখ খুলে ঘুমানো এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। কিন্তু মহিলারা পুরুষদের তুলনায় কম নাক ডাকেন। কিন্তু এমন নয় যে, তিনি অবসট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগছেন না। অর্থাৎ, পাশে শুয়ে থাকা স্ত্রী নাক ডাকছে না, কিংবা আপনি তাঁর ঘুমকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ করছেন না—এতে বাড়ছে স্ত্রীর ঘুমের সমস্যা।





