‘ভূতেদের আস্তানা’য় মেলে শরীরকে সুস্থ রাখার মন্ত্র! গরমে বেলের শরবতের জুড়ি নেই…

নিয়মিত বেলের শরবত খেলে শরীর শুধু ঠান্ডা আর হজমশক্তি বাড়াতেই সাহায্য করে তা নয়, ক্যানসারের মতো মারণরোগের থেকেও বাঁচাতে বেল অত্যন্ত উপকারী। দক্ষিণ এশিয়ায় বেলের ব্যবহার প্রায় সর্বত্র। তাই বেলের উপকারিতা ও বেলে নানান প্রচলিত শরবতের রেসিপি জানুন এখানে...

'ভূতেদের আস্তানা'য় মেলে শরীরকে সুস্থ রাখার মন্ত্র! গরমে বেলের শরবতের জুড়ি নেই...
ছবিটি প্রতীকী
Follow Us:
| Updated on: Apr 08, 2021 | 12:50 PM

সারা ভারতেই পাকা বেল (Bel) অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রাচীনকাল থেকেই বেলের উপকারিতা নিয়ে আয়ুর্বেদশাস্ত্রে পাকা জায়গা করে নিয়েছে। তাই গরমে বেল শরীরের পক্ষে কতটা উপকারী তা অনেকেরই জানা। সাধারণত আমের শরবত, আম পান্না- এই সবই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে শিশু থেকে প্রবীণদের দেওয়া হয়। আমের পরিবর্তে এবার বেলের শরবত বানান, বাড়িতেই। তপ্ত গরমে টক-মিষ্টি মিশেলে গলা ভেজাতে এই স্বাস্থ্যকর বেলের শরবত সকলের কাছেই গ্রহণীয়। দুধ, চিনি, বরফের টুকরো দিয়ে বেলের শরবত, এই গরমে একদম পারফেক্ট হেলথ ড্রিংকস।

বাংলায় যাকে বেলের শরবত (Bel Sherbet) বলে, ওড়িষাতে তাকে বেল পান্না বলে। সারা ভারতেই বেলের শরবত বানানোর নানান উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। বেলের শাঁসের সঙ্গে লেবুর রস, গোলমরিচ, মিন্ট পাতা, বরফের টুকরো আর জল। মহাবিষুব সংক্রান্তির দিন ঐতিহ্য মেনে বেল পান্না (Bel Panna) পরিবেশন করা হয়। এছাড়া ওড়িয়া নববর্ষেও বেলের সঙ্গে পনির, গুড় আর বিভিন্ন ধরণের ফল দিয়ে একটি রেসিপি পরিবেশন করা হয়। ফলের মধ্যে থাকে কলা,বেদানা দেওয়া হয়। এছাড়া বেলের মজাদার স্মুদি বানাতেও পারেন, ঘরে বসেই। আমন্ড মিল্ক বা দই দিয়ে বেলের আইসক্রিম বা স্মুদি বানাতে পারেন। ডায়েটেও বেলের স্যালাদ রাখতে পারেন।

শুধু ভারতেই নয়, নেপাল, ভূটানেও সমান জনপ্রিয় পাকা ও কাঁচা বেল। নেওয়ারি সমাজে বিয়ের অনুষ্ঠানে বেল (Bel) একটি পবিত্র ফল হিসেবে পূজিত হয়। এছাড়া বেল নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে একটি আধ্যাত্মিক প্রবাদ রয়েছে। বহুজনের বিশ্বাস, ব্রাহ্মদৈত্য নামক ব্রাহ্মণ শ্রেণির ভূতদের (spirit) থাকার জায়গা হিসেবে প্রথম পছন্দ এই বেল গাছই। তাই বেলতলা দিয়ে যাতায়াতের সময় অনেকেই রাম-নাম জপতে থাকেন। এইসব যদিও অলৌকিক মতভেদ।

বেলের উপকারিতা

– বেলের শরবত হজম ক্ষমতা শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। – কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। আধ-পাকা সিদ্ধ বেল আমাশয়ের জন্য উপকারী।নিয়মিত টানা ৩ মাস যদি আপনি বেল খান, তাহলে আপনি সহজেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। – বেলের পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে চোখের ছানি ও জ্বালা উপশম হয়। – বেল পাতার রস, মধু ও গোল মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে জন্ডিস রোগ নিরাময় হয়। – শিশুর স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য বেল অত্যন্ত উপকারী। – পাকা বেলের শাঁসে যে ফাইবার থাকে তা আলসার উপশমে খুবই কার্যকরী। সপ্তাহে তিনদিন খান বেলের শরবত। – ডায়াবেটিস রোগীদের সুগার কন্ট্রোল করতে বেল খাওয়া ভাল। পাকা বেলে আছে মেথানল নামের একটি উপাদান, যা ব্লাড সুগার কমাতে অনবদ্য কাজ করে। – আর্থ্রারাইটিস কমাতে দারুন কার্যকরী বেল। – এনার্জি বাড়াতে বেলের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১০০ গ্রাম বেলে রয়েছে ১৪০ ক্যালোরি এনার্জি। বেলে প্রচুর ভিটামিন-সি আছে। এই ভিটামিন-সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। – ক্যানসারেও খুব উপকারী বেল। এতে রয়েছে অ্যান্টি-প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন উপাদান। যা ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়।