Kidney Failure Symptoms: খিদে কমার সঙ্গে ক্লান্তিও কি বাড়ছে? এড়িয়ে যাবেন না, গুরুতর কিডনি সমস্যার লক্ষণ…
Health Tips: দুর্বলতা যে কোনও রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। সেই দুর্বলতা যদি এক সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে তা হালকা ভাবে নেবেন না
শরীরের যাবতীয় ছাঁকনি প্রক্রিয়ার কাজ করে আমাদের কিডনি। যে কারণে শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি। আর তাই কিডনিকে সুস্থ রাখা আমাদের কর্তব্য। প্রাথমিকভাবে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ যেমন ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন, যাবতীয় ক্ষতিকর অ্যাসিড জমা হয় কিডনিতেই। এছাড়াও প্রস্রাব এবং রেচক পদার্থ উৎপন্ন হয় কিডনিতে। কিডনি আমাদের শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে। সেই সঙ্গে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে কাজ চালিয়ে যায় কিডনি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু হরমেন উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ভূমিকা রয়েছে কিডনির। কিডনির কাজ যে কতখানি জটিল তা নিশ্চয় এই পর্যন্ত পড়ে বুঝতেই পারছেন। কিডনির নানা সমস্যা নিয়ে অনেকোই ভুগছেন কিন্তু তাঁদের অধিকাংশের ধারণাই নেই। খুব বাড়াবাড়ি পর্যায়ে না গেলে কিডনির সমস্যা বুঝতেই পারা যায় না। যে কারণে এই রোগটিকে বলা হয় নীরব ঘাতক।
তবে যাঁরা নিয়মিত ভাবে রক্তচাপ, ব্লাডসুগার, ক্রিয়েটিনিন এসব পরীক্ষা করেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই জটিলতা আসে না। নিজের শরীর বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে নিজেকেই। আজকাল রোগের কোনও বয়স নেই। আর তাই ৬ মাস অন্তর কিছু রক্ত পরীক্ষা করাতেই হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ডায়াবেটিসে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে কিডনির উপরেই। ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলে, রক্তচাপ বাড়লে কিংবা ক্রিয়োটিনিনের পরিমাণ বাড়লে সতর্ক হতেই হবে। সেই সঙ্গে শরীরে কোনও সমস্যা হলে শরীর আগে থেকেই জানান দেয়। অধিকাংশই তা হালকা বলে উড়িয়ে দেন। যে সব উপসর্গ দেখলে অবশ্যই সতর্ক হবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তা হল-
দুর্বলতা যে কোনও রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। সেই দুর্বলতা যদি এক সপ্তাহের বেশি থাকে তাহলে তা হালকা ভাবে নেবেন না। চিকিৎসকের কাছে যান, সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরীক্ষাও করান। রেনাল ডিসফাংশন হলে এই সমস্যাটি প্রকট হয়ে ওঠে। এর মূল কারণ রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়ে যাওয়া। শরীরে টক্সিন জমলে কিডনির উপর যেমন চাপ বাড়ে তেমনই শরীরে ক্লান্তি আসে।
শরীরে টক্সিন জমতে শুরু করলে খিদেও কমে যায়। কিডনির সমস্যা হলে খিদে কমে যায়, কোনও খাবারে রুচিও থাকে না। শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খনিজ জমতে থাকবে বলেই কিন্তু এমনটা হয়।
শরীরে কোনও রকম ক্ষত ছাড়াই যদি রক্ত কমে যায়, অ্যানিমিয়ার সমস্যা হয় তাও কিন্তু কিডনি রোগের লক্ষণ। অ্যানিমিয়ার কারণ হল মাল্টিফ্যাক্টোরিয়াল। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হল কিডনিতে কম পরিমাণ এরিথ্রোপয়েটিন তৈরি হওয়া। এর ফলে শরীরে আয়রনের মাত্রা কমে যায়, সেই সঙ্গে অস্থিমজ্জাতেও প্রভাব পড়ে। এর ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। ফলে তখন বার বার প্রস্রাব পায়। কিন্তু প্রস্রাব করতেও কষ্ট হয়।
যদি প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনা হয় তাহলেও কিন্তু সাবধান। কিডনির ফিল্টারিং প্রক্রিয়া যখন একেবারেই নষ্ট হয়ে যায় তখনই এইভাবে প্রোটিন বেরিয়ে আসে। প্রোটিন এবং রক্তকণিকা বেরিয়ে আসে বলেই প্রস্রাব এরকম ফেনা ফেনা হয়।
ভোরবেলা বমি বমি ভাব কিংবা বমি হয়ে যাওয়াও কিন্তু রেনাল সমস্যারই লক্ষণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দাঁত ব্রাশ করতে গিয়েই সমস্যা হয়। তাই সকালে বমি হলে সাবধান। তা কিন্তু কিডনির জটিল সমস্যারই লক্ষণ। খিদে কমে যাওয়া এবং বমি অবধারিত ভাবে কিডনির সমস্যারই ইঙ্গিত।
রেনাল ফাংশন ঠিকমতো না হলে এবং শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ টক্সিন জমতে শুরু করলে তখন চুলকানির সমস্যা বাড়ে। চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকে দুর্গন্ধ থাকে। পিঠে বা তলপেটে ব্যথা, গোড়ালি, পায়ের পাতা ফুলে যাওয়া জটিল কিডনি সমস্যারই ইঙ্গিত।