Nail Biting: চাপে থাকলেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন? ছোটবেলার এই ‘অভ্যাস’ কোনও রোগ নয় তো!
Autocannibalism: চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, দাঁত দিয়ে নখ কাটা কোনও 'অভ্যাস' নয়। এটা এক প্রকার ডিসঅর্ডার। বলতে পারেন, এক প্রকার মানসিক সমস্যা।
প্রচণ্ড মানসিক চাপে আছেন আর দাঁত দিয়ে নখ কাটছেন? মনের ভুলে দাঁত দিয়ে নখ কেটে ফেলেন? এমনকী দাঁত দিয়ে নখ কাটতে গিয়ে কখন কাঁচা নখ কেটে ফেলেন, খেয়াল থাকে না? আবার আঙুলের চামড়া সমেত নখ কেটে ফেলেন? আপনার মনে হতে পারে এটা বদঅভ্যাস। ছোটবেলা থেকে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে এই অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই বড় বয়সে এসে এর থেকে পিছু ছাড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, দাঁত দিয়ে নখ কাটা কোনও ‘অভ্যাস’ নয়। এটা এক প্রকার ডিসঅর্ডার। বলতে পারেন, এক প্রকার মানসিক সমস্যা। যাকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ‘অটোক্যানিবালিজম’ বলা হয়।
‘অটোক্যানিবালিজম’ শব্দটির সঙ্গে খুব বেশি মানুষ পরিচিত নয়। কিন্তু এই অটোক্যানিবালিজমের কারণে মানুষের মধ্যে যে আচরণগুলো দেখা যায়, সেটা সম্পর্কে কমবেশি আমরা সকলেই অবগত। এই যেমন দাঁত দিয়ে নখ কাটা। তেমনই রয়েছে নিজের চুল খাওয়া, হাতের চামড়া কামড়ানো ইত্যাদি। অটোক্যানিবালিজম হল এমনই একটি রোগ, যেখানে মানুষের মধ্যে নিজেকে (শারীরিক অঙ্গ) খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
অটোক্যানিবালিজমকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। অ্যালোট্রিওফ্যাগিয়া, যেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিজের শরীর খারাপ করে ফেলার প্রবণতা দেখা যায়। এই অবস্থাকে ইটিং ডিসঅর্ডার বললেও খুব একটা ভুল হবে না। কারণ আপনি জেনে শুনেই ওই অপুষ্টিকর খাবারগুলো খান এবং তারপর শারীরিক অসুস্থতায় ভোগেন। এই ডিসঅর্ডার ছিল রাজকুমারী ডায়নার মধ্যেও। দাঁত দিয়ে নখ কাটার ‘অভ্যাস’কে বলা হয় অনিকোফাগিয়া। এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা নিজের চুল খান। এটাকে বলা হয় ট্রাইকোফ্যাগিয়া। ট্রাইকোফ্যাগিয়ায় চুল চিবিয়ে খেলেও তা হজম হয় না। তখন পরিপাকতন্ত্রে গণ্ডগোল, সংক্রমণ দেখা দেয়। আঙুল বা হাতের চামড়া খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে কিছু মানুষের মধ্যে। তাকে বলে ডার্মাটোফ্যাগিয়া। ডার্মাটোফ্যাগিয়ায় হাত বা আঙুলের চামড়া চিবানোর সময় কোনও কিছুরই খেয়াল থাকে না। এমনকী রক্ত বেরিয়ে গেলেও তাঁরা থামেন না।
নার্ভাস থাকলে অনেকেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন। উদ্বেগ হয়ে পড়লে, কী করবে ভেবে না পেলে অনেকেই দাঁত দিয়ে নখ কাটতে শুরু করে দেন। বিশেষজ্ঞেরা বলছে, অটোক্যানিবালিজম অ্যানজাইটি, ডিপ্রেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে, শুধু যে মানসিক সমস্যায় ভুগলেই এই সমস্যা দেখা দেয় তা নয়। অনেক সময় পরিবারের মধ্যে এই ধরনের রোগের ইতিহাস থাকলেও অটোক্যানিবালিজম ট্রিগার করতে পারে। আবার ইমশোন বা আবেগ থেকেও এই রোগ আপনাকে ট্রিগার করতে পারে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে এই লক্ষণগুলো আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন। সেলেবদের মধ্যেও কিন্তু এই উপসর্গ দেখা যায়। শাহরুখ খান, করিনা কাপুর খান থেকে শুরু করে সৌরভ গাঙ্গুলি, গৌতম গম্ভীর, হার্দিক পান্ডিয়ার মতো ক্রিকেটারদের মধ্যেও দাঁত দিয়ে নখ কাটার প্রবণতা রয়েছে। অটোক্যানিবালিজমকে গুরুতর রোগ বললেও ভুল হবে। তবে, এটাও ঠিক যে, এখান থেকে আপনার পেট ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে। কিন্তু হতে পারে কোনও মানসিক সমস্যা থেকে আপনি এই কাজটা না চাইতেও করে ফেলেন। সাধারণত অবচেতন মনেই অটোক্যানিবালিজমে আক্রান্ত মানুষ দাঁত দিয়ে নখ কাটে কিংবা চুল চিবিয়ো। আর এগুলো কম বয়স থেকেই মানুষের মধ্যে দেখা দেয়। সুতরাং, অভ্যাস ভেবে সহজে ছাড়ানো যায় না।