নিপা আক্রান্ত হয়ে কিশোরের মৃত্যুর পর অনেকের শরীরেই দেখা দিচ্ছে উপসর্গ

কয়েকদিন আগেই এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।

নিপা আক্রান্ত হয়ে কিশোরের মৃত্যুর পর অনেকের শরীরেই দেখা দিচ্ছে উপসর্গ
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 10:46 PM

কোঝিকোড়: কেরলে নতুন করে করোনা উদ্বেগ বেড়েছে। এরই মধ্যে নিপা ভাইরাসে এক কিশোরের মৃ্ত্যু ঘিরে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিশেষ তৎপরতা দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে আরও ১১ জনের শরীরে নিপা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা গিয়েছে কেরলে। মৃত কিশোরের মায়ের শরীরেও ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ। প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যেই রিপোর্ট চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

১২ বছরের ওই কিশোরীর বাড়ির আশেপাশে থাকা গবাদি পশুদের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। দুটি ছাগলের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই এলাকায় ফল গাছে বাদুড়ের আস্তানা রয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে বিশেষজ্ঞ টিম।

গতকাল, রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ মৃত্যু হয় নিপা আক্রান্ত কিশোরের। শনিবার থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রবিবার সকালে ব্যর্থ হয় চিকিৎসকদের শেষ চেষ্টা। গত শুক্রবার প্রথম ওই কিশোরের মধ্যে নিপা ভাইরাসের কিছু উপসর্গ দেখা যায়। এরপরই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। দু’দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় তার। ওই কিশোরের শরীরে যে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল তা নিশ্চিত করেছে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির রিপোর্ট। জানা গিয়েছে ওই কিশোরের শরীরে এনসেফালাইটিস এবং মায়োকার্ডিটিসের মতো উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিনা জর্জ জানিয়েছেন ১২ বছরের ওই কিশোরকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই কিশোরকে।

স্বাভাবিকভাবেই এই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন কেরলের প্রশাসন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বীনা জর্জ জানিয়েছেন, নিপা ভাইরাস নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন তিনি ইতিমধ্যেই। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক রাও ছিলেন সেই বৈঠকে। কী ভাবে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয় তাদের মধ্যে। নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে নজরদারি চালানোর জন্য বিশেষ আধিকারিকও নিয়োগ করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষকে আশ্বাস দিয়ে বিনা জর্জ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত আতঙ্ক ছড়ানোর কিছু হয়নি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

সাধারণত পশু ও মানুষের মাধ্যমে একে অপরের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে নিপা। শূকর, বাদুড়ের মাধ্যমেও ছড়ায় এই মারণ ভাইরাস। বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পাই এই অতি মারণ ভাইরাস। তাই বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। বিজ্ঞানের ভাষায় এটি একটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর জুনটিক ভাইরাস। নিপায় মৃত্যুহারও অত্যন্ত বেশী। মাঝারি থেকে অধিক জ্বর মস্তিষ্কে সমস্যা নিপার প্রভাবে হয়ে থাকে। ৪ থেকে ১৪ দিন উপসর্গ থাকে। চরম পরিণতি মৃত্যু। নিপার ফলে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, কফ জমা, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও বমি হতে পারে। আরও পড়ুন: ১ কেজি ঢ্যাঁড়সের দাম ৮০০ টাকা! বাড়ির বাগানেই এই ‘মহার্ঘ’ ফলিয়েছেন ভোপালের যুবক