সিংঘু সীমানা থেকে কৃষক আন্দোলন সরানোর আবেদন শুনলই না সুপ্রিম কোর্ট
বিতর্কিত ৩ টি কৃষি আইন সংশোধনী নিয়ে চলা এই আন্দোলন এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হলে বিচারপতিরা মামলাকারীদের হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন।
নয়া দিল্লি: সিংঘু সীমানা থেকে আন্দোলনরত কৃষকদের সরানোর দাবিতে দায়ের হওয়া আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার সোনিপথের জনাকয়েক বাসিন্দাদের একটি মামলা শীর্ষ আদালতে ওঠে। যেখানে আবেদন জানানো হয়, দিল্লি ও হরিয়ানার সংযোগকারী রাজপথ থেকে যেন পঞ্জাবের কৃষকদের সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আবেদনই সোমবার খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত ৩ টি কৃষি আইন সংশোধনী নিয়ে চলা এই আন্দোলন এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হলে বিচারপতিরা মামলাকারীদের হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন।
আন্দোলনের স্বাধীনতা, এবং সাধারণ সুবিধা গ্রহণের স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকা জরুরি। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিক্রম নাথ এবং হিমা কোহলির একটি ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আবেদনকারীরা যেন একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে হাইকোর্ট এবং রাজ্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলাটি প্রত্যাহার এবং মামলাটি নিয়ে অন্য আদালতে হাজির হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় মামলাকারীদের।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন লোভনীয়। কিন্তু রাজ্যে হাইকোর্ট রয়েছে যারা হস্তক্ষেপ করতে পারে। এই বলে হরিয়ানা ও পঞ্জাব হাইকোর্টে যাওয়ার জন্য আবেদনকারীদের সামনে দরজা খুলে দেয় আদালত। একই সঙ্গে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়। তা হল- এই ধরনের মামলাগুলির ক্ষেত্রে প্রথমে যেন সোজা সুপ্রিম কোর্টে না এসে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবা হয়।
“ধরুন, কাল কর্নাটক এবং কেরলের বা অন্যান্য কোনও রাজ্যের মধ্যে সীমানা নিয়ে গন্ডগোল বাঁধল। তখন যদি প্রথমেই সুপ্রিম কোর্টে আসা হয়, তখন তো এর কোনও মীমাংসাই হবে না। প্রথমবারই আবেদন জানানোর জায়গা এই আদালত নয়। স্থানীয় সমস্যা মেটানোর জন্য হাইকোর্ট রয়েছে। আমাদের ব্যবস্থা অত্যন্ত সুদৃঢ়”, বলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি।
আবেদনকারীরা এ দিন আদালতে জানান, সিংঘু সীমানাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যোগসূত্রের মতো কাজ করে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই আন্দোলনের কারণে তাঁদের স্বাভাবিক যাতায়াত স্তব্ধ হয়ে পড়ছে। বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে না থাকলেও রাস্তা আটকে থাকার কারণে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
সেই সময় আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “আপনারা যখন সোনিপতের বাসিন্দা তখন সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না কেন? এই মামলাটি কি প্রচারের জন্য শীর্ষ আদালতে দায়ের করা হয়েছে? আপনারা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সেটা সম্পর্কে যখন স্থানীয় আদালত সবটাই জানে, তখন আমাদের হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই। হাইকোর্টের উপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে।” আরও পড়ুন: ‘কোন মায় কা লালের হিম্মত আছে দেখি’, ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে বললেন অভিষেক