ধর্মান্তকরণের সন্দেহে খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনীদের হেনস্থা, মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে তদন্তের প্রতিশ্রুতি শাহের

শুক্রবার দিল্লির হজরত নিজ়ামুদ্দিন থেকে হরিদ্বার-পুরী উৎকাল এক্সপ্রেসে ওঠেন দুই খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী (Nun) ও দুই সঙ্গী। সহযাত্রী এবিভিপি(ABVP)-র সদস্যরা তাঁদের ধর্মান্তকরণের সন্দেহে ধাক্কা দিয়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

ধর্মান্তকরণের সন্দেহে খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনীদের হেনস্থা, মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে তদন্তের প্রতিশ্রুতি শাহের
ঝাঁসি স্টেশনে জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয় দুই সন্ন্যাসিনীকে।
Follow Us:
| Updated on: Mar 24, 2021 | 5:29 PM

নয়া দিল্লি: হরিদ্বার-পুরী উৎকাল এক্সপ্রেসে চেপে দিল্লি থেকে ওড়িশার রৌরকেল্লায় যাচ্ছিলেন দুই খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী ও তাঁদের দুই সঙ্গী। তবে মাঝপথেই জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হল তাঁদের। কারণ ট্রেনেই সহযাত্রী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ছাত্রদের সন্দেহ হয় যে, সন্ন্যাসিনীদের সঙ্গে যে দুই মহিলা রয়েছেন, তাঁদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চলছে। ঝাঁসি স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ জেরার পর অবশেষে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের। এদিকে, গোটা ঘটনায় কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অভিযোগ জানাতেই বুধবার তিনি পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ মার্চ, শুক্রবার দিল্লির হজরত নিজ়ামুদ্দিন থেকে হরিদ্বার-পুরী উৎকাল এক্সপ্রেসে ওঠেন দুই খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই মহিলা, যাঁরা সন্ন্যাসিনী হওয়ার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সেই ট্রেনেই ফিরছিলেন এবিভিপির একাধিক সদস্য। তাঁরা ঋষিকেশের একটি প্রশিক্ষণ শিবির থেকে ফিরছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সন্ন্যাসিনীদের মধ্যে বার্তালাপ শুনেই বিজেপির ছাত্র সংগঠনের সন্দেহ হয় যে তাঁরা ওই দুই মহিলার ধর্মান্তকরণের চেষ্টা করছেন। এরপরই তাঁরা ওই সন্ন্যাসিনীদের ঘিরে ধরেন ও ট্রেন থেকে নেমে যাওয়ার হুমকি দিতে থাকেন।

আরও পড়ুন: কমিশনারের পর বদলি আরও ৮৬ পুলিশকর্মীর, সুপ্রিম কোর্টে মুখ পুড়ল পরমবীরের

ঝাঁসি স্টেশনে তাঁদের নামিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা রেল সুরক্ষা বাহিনীকে খবর দেন। সেখান থেকে রেল পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। এমনকি লিখিত অভিযোগও জানান এবিভিপির সদস্যরা। তবে পুলিশ তদন্তে ২০০৩ সালের ব্যপটিজম শংসাপত্র খুঁজে পান। জানা যায়, জন্ম থেকেই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওই দুই মহিলা।

গোটা ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, “এইধরনের ঘটনা গোটা দেশের ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করে। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া পদক্ষেপ করা প্রয়োজন। আমি আপনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি দ্রুত যেন এই ঘটনার তদন্ত করা হয় ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।”

কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি পাওয়ার পরই এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “ঝাঁসিতে সন্ন্যাসিনীদের হেনস্থা করার ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন: মহামান্য আদালত যখন দলিতের সুবিধালাভে বিচলিত হন, বোঝা যায় আয়োজন সম্পূর্ণ