‘আশা’র আলো: ঝাঁটা হাতে যোধপুরের রাস্তা সাফ করা মহিলা আজ সিভিল সার্ভিস অফিসার!

Asha Kandara: আট বছর আগে স্বামী ছেড়ে চলে যান। তখন সন্তান খুব ছোট। অকুলপাথারে পড়েন আশা। কিন্তু যাঁর নামের মধ্যেই বাঁচার তাড়না তাঁর কি থেমে গেলে চলে? সন্তান সামলাতে সামলাতে ফের শুরু করেন পড়াশোনা। সাফাইকর্মী আজ অফিসার।

'আশা'র আলো: ঝাঁটা হাতে যোধপুরের রাস্তা সাফ করা মহিলা আজ সিভিল সার্ভিস অফিসার!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 18, 2021 | 12:17 AM

দেশ: দুই সন্তানই তখন দুধের শিশু। আচমকা তাঁকে ছেড়ে চলে যান স্বামী। তাদের একা হাতে মানুষ করতে গিয়ে পুরসভার সাফাইকর্মীর কাজ নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর জীবন যুদ্ধ এখানেই শেষ নয়। শত প্রতিবন্ধকতা পার করে নিজের লক্ষ্য পূরণ করেই ছাড়লেন ৪০ বছরের আশা কান্দারা। রাজস্থান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন তিনি।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে রাজস্থান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস পরীক্ষার ফল। আর তাতে নাম রয়েছে এই ‘সিঙ্গেল মাদার’ ওই সাফাইকর্মীর। রাজস্থান সরকারের আমলা হিসাবে পেশা শুরু করলেন আশা।

আট বছর আগে স্বামী ছেড়ে চলে যান। তখন দুটি সন্তানই খুব ছোট। অকুলপাথারে পড়েন আশা। কিন্তু যাঁর নামের মধ্যেই বাঁচার তাড়না তাঁর কি থেমে গেলে চলে? সন্তান সামলাতে সামলাতে ফের শুরু করেন পড়াশোনা। পাশে পেয়েছিলেন বাবা-মাকে। এভাবেই গ্র্যাজুয়েট হন আশা কান্দারা। তার পর বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। তবে ২০১৮ সাল থেকেই তাঁর পাখির চোখ ছিল এক জায়গা, সেটা হল রাজস্থান সিভিল সার্ভিস।

২০১৮ সাল। পরীক্ষা ভালই হয়েছিল। দুটো পর্যায় পেরিয়ে যখন রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করছেন আশা, তখন শুরু হল অতিমারি করোনার দাপট। ফলপ্রকাশ মুলতুবি হয়ে গেল। কী করবেন এখন?

না এবারও ভেঙে পড়েননি আশা। বরং অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। এমন একটা কাজ খুঁজছিলেন, যেখানে সংসার খরচটাও উঠে আসবে এবং মানুষের জন্য কিছু করা হবে। সুযোগ এলো। যে মেয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ক্র্যাক করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি নিলেন জোধপুর কর্পোরেশনের স্যানিটেশনের কাজ। এতে বিন্দুমাত্র খেদ নেই আশার। ঝাঁটা হাতে যোধপুরের রাস্তা সাফ করা মহিলাই আজ সিভিল সার্ভিস অফিসার!

কেমন ছিল তাঁর প্রস্তুতি? এক সংবাদমাধ্যমকে আশা বলেন, ২০১৯ সালে মেইন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই পরীক্ষার ফল ঘোষণার আগেই সাফাইকর্মীর কাজ পান তিনি। সেই কাজ করতে করতেই সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছেন। অবশেষে জানতে পারলেন তাঁর লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।

আশা জানান, নিজের বাবাকে আদর্শ করে এগিয়েছেন তিনি। শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বাবা রাজেন্দ্র কান্দারা ফুড কর্পোরেশনে চাকরি করেছেন। রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করেছেন বাবা। সেই বাবার মেয়ে যে তিনি! তাঁর কী অল্পেতেই হাল ছাড়লে চলে। আশার কথায়, “আমি বিশ্বাস করি, যদি মানুষ আপনাকে ইট-পাটকেল ছোড়ে, সেগুলি জমিয়ে রেখে সেতু তৈরি করতে হবে। সেটাই উত্তর। আর শিক্ষাই সেই উত্তর। শিক্ষাই একের পর এক সুযোগের দরজা খুলে দেয়।” আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে কানোয়ার যাত্রা বাতিল করল যোগী সরকার

COVID third Wave