টিকাকরণে ‘লাস্ট বয়’-এর হাতে মজুত ১১ লক্ষ ভ্যাকসিন, ভাল পারফর্মেন্স সত্ত্বেও ভাঁড়ার খালি বাংলার

টিকাকরণে যাদের পারফর্মেন্স ভাল, যে সব রাজ্যে ভাঁড়ার প্রায় শূন্য হওয়ার পথে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন টিকা বণ্টনে এহেন বৈষম্য করা হচ্ছে?

টিকাকরণে 'লাস্ট বয়'-এর হাতে মজুত ১১ লক্ষ ভ্যাকসিন, ভাল পারফর্মেন্স সত্ত্বেও ভাঁড়ার খালি বাংলার
ছবি- পিটিআই
Follow Us:
| Updated on: May 14, 2021 | 10:09 PM

কলকাতা: ভ্যাকসিনের সঙ্কট তো রয়েছেই। কিন্তু এই আকালের মধ্যেও টিকা বণ্টনে বৈষম্য বড়সড় অসুবিধার মুখে ফেলে দিচ্ছে একাধিক রাজ্যকে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোউইন পোর্টাল জানাচ্ছে, টিকাকরণে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের হাতেই মজুত হয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভ্যাকসিন। অন্যদিকে টিকাকরণে যাদের পারফর্মেন্স ভাল, যে সব রাজ্যে ভাঁড়ার প্রায় শূন্য হওয়ার পথে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, কেন টিকা বণ্টনে এহেন বৈষম্য করা হচ্ছে?

মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে টিকাকরণের ছবিটা একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়। রাজ্য সরকারের প্রস্তুতি এবং পরিকাঠামোর কোনও অভাব না থাকলেও টিকার অপ্রতুল জোগানই স্তব্ধ করেছে টিকা দেওয়ার গতি। অথচ উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে টিকাকরণের পারফর্মেন্স খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে জমে রয়েছে লাখো লাখো টিকা। খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্যেই উঠে এসেছে বৈপরিত্যের এই ছবি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, টিকাকরণের নিরিখে এই মুহূর্তে দেশের ‘লাস্ট বয়’ উত্তর প্রদেশ। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে টিকাদান সবচেয়ে কম হয়েছে যোগী রাজ্যেই। তা সত্ত্বেও ১১.৫ লক্ষ ভ্যাকসিনের ডোজ় বর্তমানে মজুত রয়েছে সেখানে। প্রায় ২০ কোটি জনসংখ্যার এই রাজ্যে একটি ডোজ় পেয়েছেন ৪.৭৫ শতাংশ মানুষ। তামিলনাড়ুতে একটি ডোজ় পেয়েছেন ৬.৩৯ শতাংশ মানুষ। সেখানে মজুত রয়েছে ৭.৮ লক্ষ ডোজ়। বিহারে একটি ডোজ় পাওয়া মানুষের হার ৫.২৭ শতাংশ। কিন্তু ৫.২ লক্ষ ডোজ় টিকা মজুত রয়েছে সেখানে।

আরও পড়ুন: পাওয়ার কথা ছিল ৭০টি, রাজ্য পেয়েছে ৪! অক্সিজেন প্লান্টের সঙ্কট মেটাতে মোদীকে মমতার চিঠি

বাংলার তুলনায় উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হলেও এ রাজ্যে টিকাকরণের গতিবেগ অনেকটাই ইতিবাচক। পশ্চিমবঙ্গের আনুমানিক জনসংখ্যা ১০ কোটির কাছাকাছি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ৮৯ লক্ষের বেশি মানুষ একটি ডোজ় নিয়ে ফেলেছেন বাংলায়। অর্থাৎ, প্রায় ৯ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন। এই হার উত্তর প্রদেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে যে পরিমাণ টিকা মজুত রয়েছে, তার অর্ধেকও কখনও থাকে না বাংলায়।

টিকা বণ্টনে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এর আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ ছিল, বেছে বেছে দু-তিনটি রাজ্যের বেশি পরিমাণ ভ্যাকসিন ও অক্সিজেন দিচ্ছে কেন্দ্র। তাঁর দাবি করেন, প্রত্যেক রাজ্যকে যেন ন্যায্য পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন বণ্টন করা হয়। বলাই বাহুল্য, খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্যই এখন মমতার বৈষম্যের অভিযোগকে আরও দৃঢ় করছে।

আরও পড়ুন: জুনেই বাজারে আসছে স্পুটনিক লাইট! মাত্র এক ডোজ়েই হবে কেল্লা ফতে