কখন সময় আসবে নম্বর! মৃতদেহ নিয়ে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে আত্মীয়দের
মৃতদেহের ভিড় উপচে যাচ্ছে দিল্লির একাধিক সমাধিস্থল। দেহ নিয়ে রাস্তায় হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে আত্মীয়দের।
নয়া দিল্লি: ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ নয় বলা হচ্ছে করোনার সুনামি চলছে দেশে। আর গত কয়েকদিন ধরে যে ছবিটা গোটা দেশকে বিচলিত করেছে, তা হল বিভিন্ন সমাধিস্থলের ছবি। পরপর আসছে দেহ, ভস্মীভূত করা হচ্ছে কিংবা কবরস্থ করা হচ্ছে। প্রত্যেকদিন সংবাদমাধ্যমে আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সব ছবি কার্যত রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে সাধারন মানুষের। ফের রাজধানীতে ধরা পড়ল আরও এক মর্মান্তিক ছবি। দাহ করার জন্য মৃতদেহ নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত। এত বেশি মৃতদেহের ভিড় যে তার আগে দাহ করার সময় আসছে না।
পরিসংখ্যান বলছে, চলতি মাসে দিল্লিতে মৃত্যু হয়েছে ৩৬০১ জনের , আর তার মধ্যে কেবল মাত্র গত সাত দিনে মৃত্যু হয়েছে ২২৬৭ জনের। এই দিল্লিতে গত ফেব্রুয়ারিতে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৭ আর মার্চে এই সংখ্যা ছিল ১১৭। এই পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে দিল্লির প্রত্যেকটা সমাধিস্থলে কিভাবে বাড়ছে দেহের ভিড়। দেহ সৎকার হবে কিভাবে, এটা ভাবতে গিয়ে কার্যত শোক প্রকাশ করার সময় পাচ্ছেন না মৃতদের আত্মীয়রা।
মঙ্গলবারও দিল্লির এক সমাধিস্থলে দেখা যায় পরপর পড়ে আছে দেহ। একটা একটা করে সৎকারের কাজ চলছে। চার পাশ ঢেকে যাচ্ছে কালো ধোঁয়ায়। বাতাস ভরে উঠছে পরিবারের হাহাকারে। কখন সৎকারের সময় আসবে তার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে আত্মীয়দের। মৃতদের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, ১৬ থেকে ২০ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অক্সিজেনের অভাব মেটাতে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন মোদী-শাহ, সুপ্রিম কোর্টকে হলফনামায় জানাল কেন্দ্র
দিল্লির ‘মাসে ফিউনারেল’-এর মালিক বিনীতা মাসে জানিয়েছেন, এমন দৃশ্য তিনি তার জীবনে আগে কখনও দেখেননি। তিনি বলেন, ‘প্রিয়জনের দেহ নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আত্মীয়রা। সব সমাধিস্থল ভেসে যাচ্ছে মৃতদেহের ভিড়ে। একটা সমাধিস্থলে নিয়ে গিয়ে জায়গা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে অন্য জায়গায়। নিথর দেহ নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে গোটা শহর। কারও মা, বাবা, সন্তান কিংবা অন্য কোনও আত্মীয়ের শেষকৃত্যটুকু করার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে তাঁদের।