Madhya Pradesh: ভয়ঙ্কর মৃত্যু: দুই হাতে প্যাঁচানো ইলেকট্রিক তার, ঝাঁটা দিয়ে অন করা হয়েছিল সুইচ
Bhopal man electrocuted to death: দুই হাতে জড়ানো খোলা তার। তারের অন্য প্রান্ত লাগানো প্লাগে। খোলা আছে সুইচ। আর সামনে পড়ে একটি ঝাঁটা। মধ্যপ্রদেশ ভোপালে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মিলল এক যুবকের মৃতদেহ।
ভোপাল: দুই হাতে জড়ানো খোলা তার। তারের অন্য প্রান্ত লাগানো প্লাগে। খোলা আছে সুইচ। আর সামনে পড়ে একটি ঝাঁটা। এই অবস্থাতেই মধ্যপ্রদেশ ভোপালে মিলেছে এক যুবকের মৃতদেহ। প্রাথমিকভাহে ভোপাল পুলিশ মনে করছে, ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। আর আত্মহত্যার এক ভয়ঙ্কর উপায় বেছে নিয়েছিলেন তিনি! তড়িদাহত হয়ে ঘটনাস্থলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তবে পাওয়া যায়নি কোনও সুইসাইড নোট। তাই, তিনি নিজেই এই ভয়ঙ্কর যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যু বেছে নিলেন, না এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ভোপাল পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যায়। মৃত যুবক, ২০ বছরের কুলদীপ ভার্মা বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি আদতে মধ্য প্রদেশের সেহোর জেলার বাসিন্দা। ভোপাল শহরের রতিবাদ এলাকার নীলবাদে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এই বছরই তিনি বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। সম্প্রতি, ভোপালের এক কলেজে বি ফার্মা ডিগ্রি কোর্সে ভর্তির জন্য নিবন্ধন করেছিলেন। সোমবারই তাঁর ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ পুলিশ খবর পেয়েছিল যে কুলদীপ তাঁর ঘরের দরজা খুলছেন না।
পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেছিল। কুলদীপকে মাটিতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, কুলদীপ প্রথমে একটি ইলেকট্রিক তার নিয়ে, তার উপরে যে অপরিবাহী পদার্থের পরত থাকে, সেটি ছাড়িয়েছিল। তারপর সেই খোলা তার নিজের দুই হাতে ভাল করে পেঁচিয়ে নিয়েছিল। তারটির অন্য প্রান্ত প্লাগেই লাগানো ছিল। এরপর সে হাতে তুলে নিয়েছিল একটি ঝাঁটা। সেই ঝাঁটা দিয়েই প্লাগের সুইচ অন করেছিল। সুইচ অন হওয়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল কুলদীপ ভার্মার।
এই ঘটনা দেখে হতবাক পুলিশও। এই রকমভাবে নিজেকে যন্ত্রনা দিয়ে কেউ আত্মঘাতী হতে পারে, তা একপ্রকার বিশ্বাস করতে পারছে না তারা। সাধারণত আত্মহত্যার ক্ষেত্রে গলায় দড়ি দেওয়া, কীটনাশক বা ঘুমের বড়ি খাওয়া, হাতের শিড়া কাটার মতো ঘটনা দেখতেই অভ্যস্ত তারা। রতিবাদ থানার পুলিশ জানিয়েছে, কোনও সুইসাইড নোট না পাওয়ায় ওই যুবক সত্যিই আত্মহত্যা করেছেন নাকি এই মৃত্যুর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে, সেই বিষয়েও এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
পুলিশ জানিয়েছে, কুলদীপের বাবা গ্রামে কৃষিকাজ করেন। ২৬ অগস্ট সন্ধ্যাতেই বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। সেই সময় তাঁর বাবা কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাননি। তবে, শনিবার সকাল থেকে কুলদীপের ফোন বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা। কুলদীপের এক তুতো ভাই জানিয়েছেন, মাত্র এক মাস আগেই কুলদীপ ভোপালে এসেছিলেন। বি ফার্মা পড়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি, নিউ ম্যাক্স হাসপাতালের মেডিক্যাল স্টোরে কাজও করছিলেন তিনি। মেডিক্যাল স্টোরের অপারেটরকে ফোনে মেসেজ করে তিনি শনিবার ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন গ্রামের বাড়িতে যাবেন। আরও জানা গিয়েছে, বি ফার্মা কোর্সে ভর্তির জন্য তাঁর ৩৪,০০০ টাকা প্রয়োজন ছিল। ইতিমধ্যেই তিনি ১০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন।
এই অবস্থায় এই ঘটনার বিষয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, তার আগে পুলিশ আত্মহত্যা বা হত্যার কারণ খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে। কুলদীপের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, তার ভিতরে এই মৃত্যু রহস্যের কোনও সূত্র থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।