INDIA জোটে বড় ফাটল? খোদ নীতীশের গলায় হতাশার সুর
Nitish Kumar: বৃহস্পতিবার পটনায় সিপিআইয়ের এক ব়্যালিতে যোগদান করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারেই এই ব়্যালিতে যোগদান করেন জেডি(ইউ) প্রধান। সেই ব়্যালি থেকেই ইন্ডিয়া জোটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
পটনা: ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ; করে জোট বেঁধেছিল অবিজেপি দলগুলি। জনগণকে আকৃষ্ট করতে জোটের নাম রাখা হয়েছিল ‘ইন্ডিয়া’ (INDIA)। কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে গঠিত ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম হোতা ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি(ইউ) প্রধান নীতীশ কুমার। এবার এই জোট নিয়ে আক্ষেপের সুর শোনা গেল তাঁর গলায়। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বিশেষ কোনও ‘অগ্রগতি হয়নি’ বলে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন তিনি। আর এর জন্য কংগ্রেসকেই তোপ দেগেছেন নীতীশ (Nitish Kumar)।
বৃহস্পতিবার পটনায় সিপিআইয়ের এক ব়্যালিতে যোগদান করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারেই এই ব়্যালিতে যোগদান করেন জেডি(ইউ) প্রধান। সেই ব়্যালি থেকেই ইন্ডিয়া জোটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি। জেডি(ইউ) প্রধান বলেন, “জোটের আমরা সকলে অন্যতম বড় সদস্য হিসাবে কংগ্রেসকে প্রধান ভূমিকা দিতে সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু দেখা যায়, এই জোটের বিশেষ কোনও অগ্রগতি হয়নি। তারা (কংগ্রেস) এখন এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বরং কংগ্রেস এখন ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়েই বেশি ব্যস্ত। রাজ্যগুলির বিধানসভা ভোটের পরই তারা জোটের পরবর্তী বৈঠক ডাকবে।”
‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রধান মুখগুলির মধ্যে যাঁরা রয়েছেন, জোটের অগ্রগতিতে যাঁদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে মনে করা হয়েছিল, তাঁদের অধিকাংশই বর্তমানে নীরব। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রধান দলগুলির অবস্থান খতিয়ে দেখলে দেখা যায়, বর্তমানে কংগ্রেস ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়ে ব্যস্ত। আর এই বিধানসভা ভোটের আসন নিয়ে সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের সঙ্গে কংগ্রেসের দ্বৈরথ প্রকট হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, এনসিপি প্রধান তথা প্রবীণ রাজনীতীক শরদ পাওয়ারকেও জোটের অগ্রগতি নিয়ে বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। শিবসেনাও মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা ও দলীয় কোন্দল নিয়ে ব্যস্ত। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বর্তমানে জোট নিয়ে কার্যত নীরব। আবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা নিয়ে কার্যত ব্যতিব্যস্ত আপ। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবালকেও তলব করেছে ইডি। এর উপর রয়েছে বিধানসভা ভোটের তৎপরতা। সবমিলিয়ে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অগ্রগতির বিষয়ে দলগুলির তৎপরতা বর্তমানে একেবারেই তলানিতে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই নীতীশ কুমারের একার পক্ষে জোটকে টেনে তোলা সম্ভব নয়। এর মধ্যে আবার সম্প্রতি নিজের সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে রাজ্যবাসীর কাছে লালু-জমানার উদাহরণ তুলে ধরেছেন। যা সাধারণত জোট-বিরোধী। দিন কয়েক ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টির নেতা ওমর আবদুল্লাহও জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। সবমিলিয়ে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভবিষ্যৎ আদৌ কী হবে, তা নিয়ে এখনই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৮টি অবিজেপি দল নিয়ে গঠিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। যদিও ইতিমধ্যে এই জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে ‘টুকরে-টুকরে জোট’ বলে তোপ দেগে বিজেপি নেতা শেহজদ পুনাওয়ালার কটাক্ষ, “এই জোটের না আছে কোনও লক্ষ্য, না রয়েছে উদ্দেশ্য। রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা নয়, ইন্ডি জোড়ো যাত্রা করা উচিত।”