Bihar: ওটি থেকে রোজ ভেসে আসত মহিলাদের আর্তনাদ, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই রোজ চলত এই ঘৃণ্য কাজ
Bihar Health Centre: এক মহিলা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সম্পূর্ণ সময়ই তিনি সচেতন ছিলেন। চিকিৎসক যখন ব্লেড দিয়ে চামড়া কাটছিলেন, সেই অনুভূতি-যন্ত্রণা তিনি অনুভব করেছিলেন।
পটনা: অপারেশন থিয়েটার থেকে রোজই ভেসে আসত মহিলাদের চিৎকার। জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর মিলত, ভিতরে অস্ত্রোপচার চলছে। জনসংখ্য়া নিয়ন্ত্রণে মহিলাদের স্থায়ী বন্ধ্যাত্বকরণের জন্যই টিউবেক্টোমি (Tubectomy) করা হত সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (Government Health Centre)। কিন্তু সেই অস্ত্রোপচার নিয়েই নানা অভিযোগ, গুজব রটে যায়। জেলাশাসকের কানে সেই গুজব পৌঁছতেই নিজে গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্ত নেন। গ্রামের যে সমস্ত মহিলারা ওই দুই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিউবেক্টোমি বা বন্ধ্যাত্বকরণের জন্য অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গেই প্রথমে কথা বলতে চান জেলাশাসক। অস্ত্রোপচার নিয়ে ওই মহিলাদের অভিজ্ঞতা শুনে হতবাক জেলাশাসক। মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারলেন, টিউবেক্টোমির সময় তাদের দেহ অবশ করার জন্য কোনও অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়া হয়নি। অস্ত্রোপচারের টেবিলে শুয়ে মহিলারা চিকিৎসকের শরীরের উপরে ছুরি-কাঁচি চালানোর যাবতীয় ব্যাথ্যা অনুভব করতেন। চিৎকার-চেঁচামেচি করলেও, ব্যাথ্যা কমানোর জন্য কোনও ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দেওয়া হত না।ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের খাগারিয়া জেলায়।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতিই বিহারের খাগারিয়া জেলার জেলাশাসকের কাছে বেশ কিছু মহিলা সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিউবেক্টোমি করার পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ জানান। এরপরই জেলাশাসক গ্রামের প্রায় ২৪ জন মহিলা, যারা ওই দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই টিউবেক্টোমি করিয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের মুখ থেকেই জানতে পারেন যে অস্ত্রোপচারের সময় তাদের অজ্ঞান করা হয়নি। লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া না দিয়েই তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। ব্যাথ্যা-যন্ত্রণায় তারা চিৎকার করলে, নার্স ও সহকারীরা হাত-পা চেপে ধরে রাখত। চিকিৎসক ওই অবস্থাতেই অস্ত্রোপচার করত।
কয়েকজন মহিলা জানান, অস্ত্রোপচারের পর শরীর অবশ করার জন্য তাঁকে কিছু একটা দেওয়া হয়েছিল। এরপরই তিনি ঘুূমিয়ে পড়েন। অপর এক মহিলা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সম্পূর্ণ সময়ই তিনি সচেতন ছিলেন। চিকিৎসক যখন ব্লেড দিয়ে চামড়া কাটছিলেন, সেই অনুভূতি-যন্ত্রণা তিনি অনুভব করেছিলেন।
জানা গিয়েছে, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত একটি অলাভজনক সংস্থা বা এনজিও-র তরফেই এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। মোট ৫৩ জন মহিলা টিউবেক্টোমি করেছিলেন। তাদের মধ্যে ২৪ জন এই অভিযোগ জানিয়েছেন। জেলাশাসক অলোকরঞ্জন ঘোষ বিষয়টি জানতে পেরেই সিভিল সার্জনকে গোটা বিষয়টির তদন্ত করতে ও দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডঃ অমরনাথ ঝা-ও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ওই দুই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নামক এনজিওকে ‘ব্ল্যাকলিস্ট’ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।