‘প্রধানমন্ত্রী টাকা পাঠিয়েছে, ফেরত দেব কেন?’, ব্যাঙ্কের সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে নারাজ ব্যক্তি!
Bihar Man Refuses to Return Money Wrongfully sent by Bank: যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ভুল করে বক্তিয়ারপুরের ওই বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা চলে যায়। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একাধিকবার ওই ব্যক্তিকে নোটিস পাঠালেও তিনি কোনও জবাবই দেননি।
পটনা: ঘুম থেকে উঠেই মোবাইলে একটি মেসেজ দেখেই চমকে উঠেছিলেন। রাতারাতি ব্যাঙ্ক আক্যাউন্টে (Bank Account) ঢুকেছে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা (5.5 Lakh Rupees)। কিন্তু কারোর কাছেই তো এত টাকা পাওনা ছিল না তাঁর, অনেক ভাবনা-চিন্তা করে অবশেষে বুঝলেন ওই টাকা কেথা থেকে এসেছে। মনের সুখে সেই টাকা খরচও করে ফেললেন। তবে মাস পেরতেই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক (Gramin Bank) থেকে নোটিস আসতে শুরু করল যে, ভুল করে টাকা ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে, তিনি যেন টাকা ফেরত দিয়ে যান। নাজোড় ওই ব্যক্তিও, তাঁর দাবি, “প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ওই টাকা দিয়েছেন, তিনি কেন টাকা ফেরত দেবেন?”
বিহার(Bihar)-র খাগাড়িয়া জেলার বাসিন্দা রঞ্জিৎ দাসের অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের মার্চ মাসেই সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ঢোকে। প্রথমে সেই টাকা ঢোকার মেসেজ দেখে চমকে গিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন এই বিপুল পরিমাণ টাকা কে পাঠাল তাঁকে। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে ওই টাকা এসেছে, জানতে পেরেই রহস্যের সমাধান করে নেন নিজেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা এতদিন বাদে তিনি পূরণ করেছেন বলেই ধরে নেন ওই ব্যক্তি। তিনি মনে করেন, ১৫ লক্ষ টাকার প্রথম কিস্তি হিসাবেই তাঁর অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে।
এ দিকে, গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বিপাকে পড়ে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ভুল করে বক্তিয়ারপুরের ওই বাসিন্দার অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা চলে যায়। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একাধিকবার ওই ব্যক্তিকে নোটিস পাঠালেও তিনি কোনও জবাবই দেননি। শেষমেশ বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা।
ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে রঞ্জিৎ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানায় গিয়ে ওই ব্যক্তিকে টাকা ফেরত দিতে বলা হলে তিনি জানান, সব টাকা তিনি খরচ করে ফেলেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, “চলতি বছরের মার্চ মাসে আমি যখন ওই টাকা পাই, তখন খুব খুশি হয়েছিলাম। প্রথমে কীসের টাকা এসেছে, বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই টাকা দিয়েছেন। তিনি কথা দিয়েছিলেন যে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে পাঠাবেন। আমি ভেবেছি, সেই টাকারই প্রথম কিস্তি পাঠিয়েছেন তিনি। পরেও আবার টাকা আসবে, এই আশাতেই আমি সমস্ত টাকা খরচ করে ফেলি। এখন আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর কোনও টাকা নেই।”
মানসি থানার স্টেশন হাউস অফিসার দীপক কুমার বলেন, “গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছি। গোটা বিষয়ের তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: হামলা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দাউদের ভাই! ৬ জঙ্গিকে জেরার পরই প্রকাশ্যে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য