চিঠি দিয়ে রাজীব কুমারের আগাম জামিন খারিজের আর্জি সিবিআই-এর
রাজীব কুমার-সহ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও একাধিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে, সিবিআই সে কথাও লেখা হয়েছে ২৩ ডিসেম্বরের এই চিঠিতে। সূত্রের খবর, গত কয়েকমাসে এই সংক্রান্ত এমন কিছু প্রমাণ তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে এসেছে যা রাজ্য এবং রাজীব, উভয়কেই বেকায়দায় ফেলতে পারে
কলকাতা: ভোটমুখী বাংলায় ফের কলকাতা পুলিসের প্রাক্তন নগরপাল রাজীব কুমারকে (Rajeev Kumar) হেফাজতে নেওয়ার তৎপরতা শুরু করল সিবিআই (CBI)। সূত্রের খবর, সারদা মামলায় গত ২৩ ডিসেম্বর সলিসিটর জেনারেলকে একটি চিঠি দিয়েছে সিবিআই। সেই চিঠিতে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে পাওয়া রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আদেশ খারিজ করার আবেদন যাতে করা হয়, সেই কথা বলা হয়। এ বাদেও একটি পৃথক আবেদনের শুনানি আটকে রয়েছে শীর্ষ আদালতে। যেখানে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদে বাধা দিয়ে রাজ্য সরকার আদালত অবমাননা করেছে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই মামলাটিরও দ্রুত শুনানির আবেদন যাতে করা হয়, সেই উল্লেখ করা হয়েছে।
এই দুই মামলাই বহুদিন ধরে ঠান্ডা ঘরে। করোনা-সহ আরও একাধিক কারণে আদালতের কার্যপ্রণালীও বাধাপ্রাপ্ত হয়। যার জেরে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। রাজীব কুমার-সহ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও একাধিক তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছে, সিবিআই সে কথাও লেখা হয়েছে ২৩ ডিসেম্বরের এই চিঠিতে। সূত্রের খবর, গত কয়েকমাসে এই সংক্রান্ত এমন কিছু প্রমাণ তদন্তকারী সংস্থার হাতে উঠে এসেছে যা রাজ্য এবং রাজীব, উভয়কেই বেকায়দায় ফেলতে পারে। নতুন করে এই নথি দেখিয়েই রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করা সম্ভব হবে এবং এক বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকা রাজ্যের বিরুদ্ধে ওঠা আদালত অবমাননার মামলার শুনানিও হবে, আশাবাদী সিবিআই।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে দেওয়া চিঠিতে সিবিআইয়ের বক্তব্য, তাদের পক্ষ থেকে আগেও রাজীব কুমারের আগাম জামিন খারিজ করার আবেদন জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার অভিযোগ রয়েছে। এই দুটি মামলাই এক বছরের উপর সময় ধরে সুপ্রিম কোর্টে পড়েই আছে। নতুন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যাতে সেই শুনানি দ্রুত শুরু হয়। এমনই আবেদন সিবিআইয়ের।
আরও পড়ুন: ‘বিস্ফোরক ২১ পাতার চিঠি’ দিলেন সুদীপ্ত সেন, সারদাকাণ্ডে নয়া মোড়?
প্রসঙ্গত, সারদা মামলায় প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্য সরকার যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল, যার শীর্ষ দায়িত্বে ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিস কমিশনার রাজীব কুমার। পরবর্তীকালে মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। সিবিআই তদন্ত করতে নেমে অভিযোগ করে, রাজীব কুমার প্রাথমিক পর্যায়ে বহু তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছেন। এই মর্মে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই শীর্ষ আইপিএস কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। কিন্তু রাজ্য সরকার এবং স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাধার জেরে সে যাত্রায় আর জিজ্ঞাসাবাদ সম্ভব হয়নি। এরপর একাধিকবার কলকাতা হাইকোর্টে রক্ষাকবজ পেয়ে যান রাজীব। তদন্তে সহযোগিতার শর্তে তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এবং আদালতের নির্দেশেই শিলংয়ে সিবিআই দপ্তরে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় রাজীব কুমারকে।
এরপর থেকেই কোভিড পরিস্থিতি ও আরও কিছু কারণে সারদা মামলার তদন্তের গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে যায়। তবে এবার পোক্ত কিছু প্রমাণ নিয়েই তাঁর আগাম জামিন খারিজ করার আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: এনডিএ-তে ফের ভাঙন, সৌজন্যে কৃষক আন্দোলন