জাল ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যকে সতর্ক কেন্দ্রের, জানাল চিহ্নিতকরণের উপায়ও
COVID Vaccination: দেশজুড়ে নকল কোভিশিল্ড ভ্য়াকসিন নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য়গুলিকে পাঠানো হয়েছে সতর্কবার্তা। স্বাস্থ্য়মন্ত্রীর দাবি প্রমাণ পাওয়া গেলে নেওয়া হবে যথাযথ ব্য়বস্থা।
নয়া দিল্লি: দেবাঞ্জন কাণ্ডের ক্ষত এখনও শুকায়নি। নকল ভ্য়াকসিন সম্পর্কে অল্পবিস্তর অভিজ্ঞতা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। তবে, গোটা বিশ্বেই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে জাল ভ্য়াকসিনের কারবার। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ বার কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল নয়া দিল্লিও। শনিবার রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যেখানে নকল ভ্য়াকসিন চিহ্নিতকরণে বেশ কিছু মাপদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।
ভ্য়াকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির দ্বারা ব্য়বহৃত রং, লেভেল এবং অন্য়ান্য় খুঁটিনাটি বিস্তারিতভাবে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের চিঠিতে। রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে উল্লেখিত মাপদণ্ডগুলি ভ্য়াকসিন আসল না নকল তা চিহ্নিত করতে সাহায্য় করবে। কোভিশিল্ড, কোভাক্সিন এবং স্পুটনিক ভি ভ্য়াকসিন উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির তথ্য দিয়ে এই তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। ভারতীয় বাজারে বর্তমানে এই তিনটি ভ্য়াকসিনই ব্য়বহৃত হচ্ছে। বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গত জুলাই-অগস্ট মাসে ভারত-সহ দক্ষিণ-এশিয়া ও আফ্রিকায় নকল কোভিশিল্ড ভ্য়াকসিন উদ্ধার করা হয়েছে। যা উদ্বেগের কারণ বলে উল্লেখ করেছে হু।
সরকার এই সব রিপোর্টগুলির ভিত্তিতে একটি তদন্তও শুরু করেছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দারিয়া। তিনি বলেন,”দাবি করা হচ্ছে দেশে কোভিশিল্ডের নকল সংস্করণ বিক্রি করা হচ্ছে। সরকার এই দাবি খতিয়ে দেখছে। যদি এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে যথাযথ ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।” সম্প্রতি স্বাস্থ্য়মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন মান্দারিয়া। তাঁর কথায়, “দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য় আরও ভ্য়াকসিন আসতে চলেছে। এই মুহূর্তে ভারতে কোভিশিল্ড, কোভাক্সিন এবং স্পুটনিক এই তিনটি ভ্য়াকসিন পাওয়া যাচ্ছে। আগামিদিনে আরও তিনটি ভ্য়াকসিন আসবে, যার মধ্য়ে একটি জিড্য়াস ক্য়াডিলার”।
প্রসঙ্গত গত জানুয়ারি মাস থেকে দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় মিলিয়ে ৬৮ কোটি উপভোক্তাদের ভ্য়াকসিন দেওয়া হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত আরও ৬২.২৫ লাখ ভ্য়াকসিনের ডোজ় দেওয়া হয়েছে। গত জানুয়ারি মাস থেকে দেশজুড়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাকরণের অভিযান চালাচ্ছে ভারত। বড় রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্য প্রদেশ টিকা দানে এগিয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে ৩১ লক্ষে একটু বেশি। দ্বিতীয় ডোজ় মিলেছে প্রায় ১২ লক্ষ।
এই মুহূর্তে টিকা দানের ক্ষেত্রে রাজ্য়গুলির মধ্য়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। আদিত্য়নাথ যোগীর রাজ্য়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ় মিলিয়ে মোট ৬৮৪,৬৬৯,৫২১ ডোজ় টিকাকরণ হয়েছে। অন্য়দিকে মহারাষ্ট্রে এই সংখ্য়াটা ৬২,৭৫৭,১০২। রাজধানী দিল্লিতে এই সংখ্য়াটি ১৪,০৯৫,৮০৫। পশ্চিমবঙ্গের পাশের তিনটি রাজ্য় বিহার, ছত্তীসগঢ় এবং ঝাড়খণ্ডে এই সংখ্য়াটি যথাক্রমে ৩৯,৩৮৬,৪৬৮, ১৪,৪৮৩,৫৫৯, ১৩,৬৭১,১২৬। টিকাদানের তালিকায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে লাক্ষাদ্বীপ। সেখানে দুটি ডোজ় মিলিয়ে মোট টিকা দানের সংখ্য়া ৭৮,৮৭৬। আরও পড়ুন:২ স্বাস্থ্যকর্মীর দেহেও দেখা দিল নিপার উপসর্গ, কিশোর মৃত্যুর পরই অতি তৎপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী