ফের অবস্থান বদল কেন্দ্রের, জানাল, পিএম কেয়ার্স ‘সরকারি তহবিল’ তবে ‘আরটিআই’-র আওতায় নয়

আরটিআই আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, "পিএম কেয়ার্স একটি সংস্থা, যা প্রতিষ্ঠা করেছে ভারত সরকার। এই সংস্থার মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই রয়েছে। তবে বিভিন্ন ব্যক্তিগত অনুদান মেলায় এটি তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পড়ে না।"

ফের অবস্থান বদল কেন্দ্রের, জানাল, পিএম কেয়ার্স 'সরকারি তহবিল' তবে 'আরটিআই'-র আওতায় নয়
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Dec 25, 2020 | 7:16 PM

নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রীর তহবিল আপাতত পরিণত হয়েছে গোলকধাঁধায়। এর আগে জানানো হয়েছিল, করোনা সংক্রমণ (Coronavirus) ও লকডাউনের (Lockdown) ক্ষতি সামাল দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি পিএম কেয়ার্স ফান্ড (PM-CARES Fund) সরকারি নয়। আজ ফের অবস্থান বদলে জানানো হল, এটি একটি সরকারি ফান্ড। তবে আরটিআই (RTI)-র আওতায় পড়ে না এই ত্রাণ তহবিল।

সম্প্রতি পিএম কের্য়াস ফান্ডে জমা পড়া অর্থের হিসাব চেয়ে আরটিআই আবেদন জমা পড়লে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এই তহবিল সরকারি সংস্থার অধীনে নয়। শুক্রবার অপর একটি আরটিআই আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, “পিএম কেয়ার্স একটি সংস্থা, যা প্রতিষ্ঠা করেছে ভারত সরকার। এই সংস্থার মালিকানা, নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই রয়েছে। তবে বিভিন্ন ব্যক্তিগত অনুদান মেলায় এটি তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পড়ে না।”

কেন্দ্র আরও জানায়, এই তহবিলকে সম্পূর্ণরূপে সরকারি ভাবা উচিত নয় কারণ “এই তহবিলে ব্যক্তিগত, বিভিন্ন সংস্থা, প্রবাসী ভারতীয় ও সংগঠন থেকে অনুমোদন এসেছে। এতে কোনও সরকারি অনুদান নেই। এই সংস্থা পরিচালনের জন্য ট্রাস্টিও রয়েছেন। তাই তথ্যের অধিকার আইনের (Right to Information) ২(এইচ) ধারা অনুযায়ী এটি আরটিআইয়ের আওতায় পড়ে না।”

আরও পড়ুন: ‘এনআরসি অসম্পূর্ণ, হিন্দুদের সুবিচার বাকি’, বিতর্ক উসকে দিলেন অসমের বিজেপি নেতা

চলতি বছরের ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী “প্রাইম মিনিস্টার্স অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন এমার্জেন্সি সিচুয়েশন ফান্ড” তৈরি করেন, এটিই সংক্ষেপে পিএম কেয়ার্স ফান্ড নামে পরিচিত। করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়, তা সামাল দেওয়ার জন্যই এই আর্থিক তহবিল তৈরি করা হয়।

কেন্দ্রের তরফে এই তহবিলকে সরকারি মালিকানাধীন বলে দাবি করা হলেও ট্রাস্ট তৈরি হওয়ার দিন অর্থাৎ ২৭ মার্চ স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, পিএম কেয়ার্স ফান্ডটি সরকারি মালিকানাধীন বা সরকারি নিয়ন্ত্রিত নয়। এর পরের দিনই কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক (Ministry of Corporate Affairs)  বিভিন্ন কর্পোরেট অনুমোদন গ্রহণের জন্য এটিকে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা ( Corporate Social Responsibility) উদ্যোগের আওতায় আনে। এই পদ্ধতিতেও পিএম কেয়ার্স ফান্ড সরকারি প্রতিষ্ঠানেই পরিণত হয়। দুই মাস ধরে এই আর্থিক তহবিলের মালিকানা নিয়ে টানাপোড়েন চলার পর ২৬ মে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক এটিকে কোম্পানিস আইনের আওতায় আনে।

তথ্যে আরও জানা গিয়েছে, দিল্লির রেভিনিউ বিভাগের (Revenue Department of Delhi) অধীনে এই ফান্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্রাস্টের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে একাধিক মন্ত্রীর নামও রয়েছে।

বারংবার সরকারি নথিতে অসঙ্গতি প্রকাশ পাওয়ায় তহবিল নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই তহবিল সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে কোটি কোটি টাকা অনুদান পেলেও, প্রয়োজন অনুযায়ী এই তহবিল সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য নয়।

তহবিল তৈরির পরই দেশ বিদেশ থেকে আর্থিক অনুদান জমা পড়ে এই তহবিলে। কিন্তু সেই টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে, বা কারা অনুদান দিয়েছেন, সেই বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশিত না হওয়ায় তহবিলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে বিরোধীরা। তথ্যের অধিকার আইনে একের পর এক আবেদনও জমা পড়তে শুরু করে। আজকের নির্দেশিকায় সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, আবেদনগুলির জবাব দেবে না কেন্দ্র।

আরও পড়ুন: ব্যারিকেড ভাঙল প্রতিবাদী ট্রাক্টর! পুলিসি বাধার মুখে চাষিদের রুদ্রমূর্তি