মাওবাদীদের চক্রব্যূহে আটকে পড়েছিল জওয়ানরা? কী হয়েছিল সে দিন?
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দুই তরফের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মাওবাদীরা রকেট লঞ্চার, হ্যান্ড গ্রেনেড ও অন্যান্য অস্ত্রও ব্যবহার করেছিলেন। তিনদিক থেকে আক্রমণ চালানোর পরই নিহত ও আহত জওয়ানদের কাছ থেকে প্রায় এক ডজন অস্ত্র লুট করে পালায় মাওবাদীরা।
রায়পুর: জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছেন পিপলস লিবারেশন গরিলা আর্মির প্রথম ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডার মাধবি হিদমা ও তাঁর সহযোগী সুজাতা। গোপন সূত্রে এই খবর পেতেই শনিবার ছত্তীসগঢ়(Chhattisgarh)-র সুকমা ও বিজাপুরের জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় যৌথ বাহিনী। তবে এর পিছনে যে মাওবাদীদের গোপন ছক ছিল, তা বুঝতেও পারেননি জওয়ানরা। ফলে মাওবাদীদের ইউ আকারের পাতা ফাঁদেই পা দিয়ে ফেললেন তাঁরা। যদিও সিআরপিএফ ডিরেক্টর কুলদীপ সিং (Kuldeep Singh) এই দাবি মানতে নারাজ।
সূত্র অনুযায়ী, সুকমা ও বিজাপুরের জঙ্গলে “মোস্ট ওয়ান্টেড” মাওবাদী নেতার উপস্থিতির খবর পেতেই সিআরপিএফ(CRPF)-র কোবরা শাখা, ডিআরজি (DRG) ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্স(Special Task Force)-র দুই হাজার কর্মী জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। গভীর জঙ্গলে গাছপালাহীন অঞ্চলে পৌঁছতেই প্রায় ৪০০ মাওবাদী তিনদিক থেকে তাঁদের ঘিরে ফেলে। নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। জওয়ানরা পাল্টা গুলি চালালেও অতর্কিত হানায় তাঁরা কিছুটা হকচকিয়ে যায়। সেই সুযোগটিই কাজে লাগায় মাওবাদীরা। ব্যাপক সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২২ জওয়ান। আহত হন ৩০ জনেরও বেশি জওয়ান। বর্তমানে তাঁরা রায়পুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘বিরাট এখন বেসরকারি সম্পত্তি’, ফের কি ধ্বংসের দিকে এগোবে ‘কার্গিল নায়ক’?
যদিও মাওবাদী উপস্থিতির ভুয়ো তথ্য বা নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থ হওয়ার তথ্য মানতে নারাজ ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিং। সিআরপিএফ কর্তা জানান, গোয়েন্দা বিভাগের বা অভিযানের ব্যর্থতা ছিল না। যদি তথ্যের গাফিলতি থাকত, তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী তল্লাশি অভিযানেই যেত না। আর যদি বাহিনীর ব্যর্থতা থাকত, তবে এতজন মাওবাদীকে খতম করাও সম্ভব হত না। তিনি জানান, শনিবারের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন মাওবাদীকে খতম করা সম্ভব হয়েছে। আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। সংঘর্ষস্থল থেকে তাঁদের আনতে তিনটি ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়েছিল।
Chhattisgarh: Union Home Minister Amit Shah and Chief Minister Bhupesh Baghel lay wreath at the coffins of 14 security personnel who lost their lives in the Naxal attack, in Jagdalpur. https://t.co/vlDGKokhVe pic.twitter.com/MQjHOY0RIq
— ANI (@ANI) April 5, 2021
এ দিকে সংঘর্ষের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে নকশাল বিরোধী অভিযানের প্রধান অশোক জুয়েজা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দুই তরফের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মাওবাদীরা রকেট লঞ্চার, হ্যান্ড গ্রেনেড ও অন্যান্য অস্ত্রও ব্যবহার করেছিলেন। তিনদিক থেকে আক্রমণ চালানোর পরই নিহত ও আহত জওয়ানদের কাছ থেকে প্রায় এক ডজন অস্ত্র লুট করে পালায় মাওবাদীরা।
Chhattisgarh Chief Minister Bhupesh Baghel today met security forces who were injured in the Naxal attack in Bijapur yesterday, at Ramkrishna Care Hospital in Raipur. pic.twitter.com/S1LvdAUEEo
— ANI (@ANI) April 4, 2021
মাওবাদী হামলার খবর পেতেই অসম সফরের মেয়াদ কমিয়ে এ দিন সকালেই বিজাপুরে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে, তারপর মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে। কড়া জবাীব দেওয়া হবে তাঁদের। আর সেই লড়াইতে সাফল্য আসবেই।”
I held a review meeting with Chhattisgarh CM Bhupesh Baghel & officers of security forces. The officers said that this fight should not weaken, which shows that the morale of our jawans is intact: Union Home Minister Amit Shah in Jagdalpur pic.twitter.com/qxjSXNSK4Z
— ANI (@ANI) April 5, 2021
তবে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এ দিন তিনি টুইট করে লেখেন, “যদি গোয়েন্দাদের তথ্যে কোনও গাফিলতি না থাকে, তবে সম পরিমাণ মৃত্যু হারের অর্থ হল অভিযানটি পরিকল্পনায় গাফিলতি ছিল। আমাদের জওয়ানরা তোপের গুলি নয় যে তাঁদের শহিদ বানানো যাবে।”
আরও পড়ুন: পরমবীরের দাবিতেই সম্মতি আদালতের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে তদন্ত করবে সিবিআই