Supreme Court: ‘সৎ ও সাহসী বিচারকের বদলির কারণ জানার অধিকার রয়েছে’, প্রধান বিচারপতির বদলি নিয়ে জল গড়াল ‘সুপ্রিম’ দরবারে
Madras High Court CJ Transfer Matter in Supreme Court: ৭৫ জন বিচারপতির মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরিয়ে ২০১৩ সালে তৈরি মেঘালয় হাইকোর্ট, যেখানে বিচারপতির সংখ্যা মাত্র দুইজন, সেখানে বদলি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
নয়া দিল্লি: মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেঘালয় হাইকোর্টে বদলি নিয়ে টানাপোড়েন পৌঁছল সুপ্রিম কোর্টের দোরগোড়ায়। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রায় ২০০ জনেরও বেশি আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ ও কলোজিয়ামের চার সদস্যকে চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের কলোজিয়ামের তরফে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার তা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা নিয়েও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন ও সন্দেহ।
মাদ্রাজ হাইকোর্টের ২৩৭ জন আইনজীবীর স্বাক্ষর করা ওই স্মারকলিপিটি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ, বিচারপতি ইউইউললিত, বিচারপতি এএম খানউইলকর, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি জনস্বার্থে করা হচ্ছে নাকি আরও সুষ্ঠ বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য করা হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে এই কথাও উল্লেখ করা হয়েছে যে মাত্র ১০ মাস আগেই মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তার বদলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্যায়কে মাদ্রাজ হাইকোর্টে বদলি করা হয়। তবে মাত্র ১০ মাস সময়ের মধ্যেই ফের কেন তাকে বদলি করা হচ্ছে। বিচারপতি সঞ্জাব বন্দ্য়োপাধ্যায় নিজেও যে বদলির কারণ একাধিকবার জানতে চেয়েছেন, তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
৭৫ জন বিচারপতির মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সরিয়ে ২০১৩ সালে তৈরি মেঘালয় হাইকোর্ট, যেখানে বিচারপতির সংখ্যা মাত্র দুইজন, সেখানে বদলি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। স্মারকলিপিতে প্রশ্ন করা হয়েছে, “ন্যায়বিচার এবং আরও ভাল প্রশাসনের জন্য স্থানান্তর নীতিগতভাবে প্রয়োজনীয় হতে পারে। তবে বারের সদস্যদের জানার অধিকার রয়েছে কেন একজন দক্ষ, নির্ভীক বিচারক যিনি একটি বৃহৎ উচ্চ আদালতের প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন, যেখানে এই বছরই ৩৫ হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে, তাকে এমন একটি আদালতে স্থানান্তর করা হচ্ছে, যেখানে এক মাসে মোট মামলার সংখ্যা গড়ে ৭০থেকে ৭৫টি।”
অতীতেওকলোজিয়ামের এইধরনের বদলির সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় মূল দুটি প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, বিচারপতিক অদক্ষতার কারণে কী তাকে বদলি করা হয়েছে এবং দ্বিতীয়ত, এই বদলির সিদ্ধান্তের পিছনে বাহ্যিক কোনও কারণ রয়েছে কিনা। এই ধরনের বদলির কারণে নির্দিষ্ট ওই বিচারপতির ভাবমূর্তি খারাপ হওয়ার পাশাপাশি গোটা আইন ব্যবস্থারও ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগেও মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ভিকে তাহিলরামানিকে মেঘালয় আদালতে বদলি করা হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় তিনি বদলির সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে সরাসরি ইস্তফা দিয়েছিলেন।
প্রধান বিচারপতির বদলির কারণ জানতে চেয়ে আইনজীবীদের তরফে বলা হয়, “সুপ্রিম কোর্টের কলোজিয়ামের তরফে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, তা গত ৯ নভেম্বর জনসমক্ষে আনা হয়েছে। এতে সুপ্রিম কোর্টের কলোজিয়ামের সিদ্ধান্ত নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। যদি কলোজিয়ামের এই কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের গোপনীয়তা বজায় রাখার অধিকার থাকে, তবুও জনসাধারণ ও বার সদস্যদের বদলির কারণ জানার অধিকার রয়েছে। যদি তা জানানো না হয়, তবে মনে করা হবে যে সুষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালনের জন্যই বিচারপতিকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তিরস্কার করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: Rail Service: বড় ঘোষণা! করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ২০ মাস পর ফের স্বাভাবিক হচ্ছে রেল পরিষেবা