Mahua Moitra: মহুয়ার জন্য হুমকির মুখে জাতীয় নিরাপত্তা? ৫ পয়েন্টে এথিক্স কমিটির ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট

Mahua Moitra: তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার সময় এথিক্স কমিটি জাতীয় নিরাপত্তার সংক্রান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মহুয়ার কর্মকাণ্ডে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে ৫০০ পৃষ্ঠার এক রিপোর্ট তৈরি করেছে বিনোদ সোনকারের নেতৃত্বাধীন কমিটি। কী রয়েছে এই ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে?

Mahua Moitra: মহুয়ার জন্য হুমকির মুখে জাতীয় নিরাপত্তা? ৫ পয়েন্টে এথিক্স কমিটির ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট
মহুয়া মৈত্র (ফাইল ছবি)Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2023 | 7:30 AM

নয়া দিল্লি: মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে, মহুয়া মৈত্রকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সংসদীয় এথিক্স কমিটি। শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে তাঁর সংসদীয় অ্যাকাউন্টের লগইন ডিটেইলস ভাগ করে নেওয়ার জন্য, মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করেছে কমিটি। তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার সময় এথিক্স কমিটি জাতীয় নিরাপত্তার সংক্রান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মহুয়ার কর্মকাণ্ডে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে ৫০০ পৃষ্ঠার এক রিপোর্ট তৈরি করেছে বিনোদ সোনকারের নেতৃত্বাধীন কমিটি। কী রয়েছে এই ৫০০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে? জেনে নিন ১০ পয়েন্টে –

জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে তাঁর সংসদীয় ইমেইল অ্যাকাউন্টের লগইন পাসওয়ার্ড ভাগ করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। এথিক্স কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে হিরানন্দানি বিদেশে থাকেন। তাঁর সঙ্গে লগইন ডিটেইলস শেয়ার করলে দেশের গোপন তথ্য বিদেশী সংস্থার হাতে চলে যেতে পারে। অর্থাৎ, মহুয়ার কাজে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারত। কমিটি আরও বলেছে, সংসদীয় লগইন ডিটেইলস শেয়ার করার অর্থ অননুমোদিত ব্যক্তিদের পাসওয়ার্ড দেওয়া। অনেক সংবেদনশীল নথিই সাংসদদের সংসদীয় ইমেইল অ্যাকাউন্টে আগাম ভাগ করে নেয় সরকার। সেই তথ্য ওই অননুমোদিত ব্যক্তির হাতে চলে যেতে পারে।

ফাঁস হতে পারে সংবেদনশীল নথি

উদাহরণ হিসাবে, কমিটি জম্মু ও কাশ্মীর সীমানা বিল, ২০১৯-এর কথা উল্লেখ করেছে। এই বিলের খসড়াটি লোকসভায় পেশ করার আগেই সাংসদদের ইমেইল করে পাঠানো হয়েছিল। এই ধরণের খসড়া বিলগুলি যেগুলি প্রকাশ্যে আনা হয় না, কিন্তু সাংসদদের সঙ্গে আগাম ভাগ করে নেওয়া হয়। কমিটির আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের জানিয়েছে, তিন তালাক নিষিদ্ধ করা, দেউলিয়া বিধির মতো অন্তত ২০ টি গুরুত্বপূর্ণ বিল আগে থেকেই সংসদীয় পোর্টালে আপলোড করা হয়েছিল। কমিটি বলেছে, এই জাতীয় নথি ফাঁস হয়ে গেলে, জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সন্ত্রাসবাদী হামলা?

আবার উল্টোদিকে, সাংসদরা যদি অননুমোদিত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁদের সংসদীয় ইমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়ে দেন, সেই ক্ষেত্রে হ্যাকাররা সেই লগইন ডিটেইলস ব্যবহার করে সংসদীয় পোর্টালে এমন কিছু নথি আপলোড করতে পারে, যা থেকেও দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এমনকি, লগইন ডিটেইলস ভাগ করে নেওয়া, সংসদে সন্ত্রাসবাদী হামলার কারণও হতে পারে।

মানি ট্রেইলের তদন্ত

২০১৯-এর জুলাই থেকে ২০২৩-এর এপ্রিল মাসের মধ্যে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ৪৭ বার মহুয়া মৈত্রর অ্যাকাউন্টে লগইন করা হয়েছিল। একই আইপি অ্যাড্রেস থেকে কেউ ৪৭বার লগ ইন করেছিল। কিন্তু, ওই সময়ের মধ্যে মহুয়া নিজে মাত্র চারবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গিয়েছিলেন। সংসদে এখনও পর্যন্ত মহুয়া মৈত্র ৬১ টি প্রশ্ন করেছেন। এর মধ্যে পঞ্চাশটিই ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির আগ্রহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মহুয়া নগদ টাকা পেয়েছিলেন কিনা, তা তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানিয়েছে কমিটি। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘মানি ট্রেইল’ অর্থাৎ, কোন পথে টাকা ঢুকেছে বা আদৌ ঢুকেছে কিনা, তা তদন্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

দোষ স্বীকার করেছেন মহুয়া, হিরানন্দানিও

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মহুয়া মৈত্র তাঁর লগইন ডিটেইলস দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, অনেক সাংসদই তাঁদের লগ-ইন ডিটেইলস অন্যদের সঙ্গে ভাগ করেন। তিনি আরও বলেছেন, লোকসভায় তিনি কখনও হিরানন্দানির নির্দেশে কোনও প্রশ্ন করেননি। গত সপ্তাহে এথিক্স কমিটির বৈঠকের মাঝপথে কক্ষত্যাগ করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, কমিটির চেয়ারম্যান তাঁকে অপ্রাসঙ্গিক এবং অনৈতিক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেছেন। উল্টোদিকে, এথিক্স প্যানেলের প্রধান বিনোদ কুমার সোনকার তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ করেছিলেন। সংসদের অন্দরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করার জন্য মহুয়া মৈত্রকে অর্থ প্রদান করেছেন ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির বলে অভিযোগ রয়েছে। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, হিরানন্দানিও হলফনামা দিয়ে স্বীকার করেছেন, মহুয়া তাঁকে লগইন ডিটেইলস দিয়েছিলেন।