‘কেন্দ্রের অপরিকল্পিত পদক্ষেপের ফল ভুগছে দেশবাসী’, করোনা নিয়ে ফের আক্রমণ কংগ্রেসের

কংগ্রেসের দাবি, আত্মনির্ভর ভারত বানানোর নামে বহু বিদেশি ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, যা আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপ ও জাপান সহ একাধিক দেশে ছাড়পত্র পেয়েছে। রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে টিকাও দেওয়া হয়নি।

'কেন্দ্রের অপরিকল্পিত পদক্ষেপের ফল ভুগছে দেশবাসী', করোনা নিয়ে ফের আক্রমণ কংগ্রেসের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 17, 2021 | 5:54 PM

নয়া দিল্লি: দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লাখ ছুঁতে চলেছে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ব্যপক হারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ফের একবার এনডিএ সরকারকেই দোষারোপ করল কংগ্রেস। একই সঙ্গে জানানো হল, দরিদ্র মানুষদের সাহায্যের জন্য একটি হেল্পলাইন সেন্টার তৈরি করা হবে।

শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। ভিডিয়ো কনফারেন্সে আয়োজিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী সহ একাধিক কংগ্রেস  নেতারা। সাধারণ বৈঠকে গত বছরে করোনার সূচনা থেকে দেশের টিকাকরণ ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে পরিসংখ্যানের হিসাব দিয়ে মোদী সরকারের গাফিলতিকেই তুলে ধরা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও চিন্তাভাবন ও পরিকল্পনা না করাতেই দেশে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৪৫ লাখ ও মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ল হাজারের গণ্ডি পার করেছে। বিগত এক বছর থেকেও কোনও শিক্ষা না নেওয়াতেই সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার।

গতকালই জনতা কার্ফুর দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর থালা বাজানোর উপদেশের কটাক্ষ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। আজকের বৈঠকেও সেই প্রসঙ্গ তুলে আনা হয়। গতবছরে করোনা টিকা না থাকায় কন্টেনমেন্ট ও পরীক্ষার মাধ্যমেই একমাত্র সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ছিল। সেখানে সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের কারণে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিককে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়, পথেই মৃত্যু প্রায় ২০০ জনের।

রাজ্যগুলিকে আর্থিক সহায়তা না করার অভিযোগও তোলে কংগ্রেস। কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলা হয়, “প্রথমত, সরকার সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে সচেতনতাই তৈরি করতে পারেনি। দুটি ভ্যাকসিনের উৎপাদন প্রক্রিয়াতেও গতি আনতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। টিকাকরণের প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মী ও করোনা যোদ্ধাদের টিকাপর্ব মেটার পরও দেশের বাকি জনগণকে টিকাকরণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। আটকানো বা কমানো যায়নি টিকা নষ্ট হওয়ার হারও। পরীক্ষা, ট্রেসিং ও ট্রাকিংয়েও ব্যর্থ হয়েছে সরকার।”

বিদেশি ভ্যাকসিনগুলিকে ছাড়পত্র না দেওয়ার প্রসঙ্গে জানানো হয়, আত্মনির্ভর ভারত বানানোর নামে বহু বিদেশি ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি, যা আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপ ও জাপান সহ একাধিক দেশে ছাড়পত্র পেয়েছে। রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে টিকাও দেওয়া হয়নি। সরকারি নথিতেই দেখা যায় যে বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলিতে কম সংখ্যক ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। পিএম কেয়ার ফান্ডে লক্ষ-কোটি টাকা জমা পড়লেও করোনা ভাইরাস ও আর্থিক ঘাটতির সঙ্গে লড়াই করতে রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে অর্থ সাহায্যও করা হয়নি।

দেশের বৃহত্তম টিকাকরণ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও একাধিক রাজ্যের টিকাকরণের ঘাটতির অভিযোগ অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে দাবি করে কংগ্রেস। সরকারের অপরিকল্পিত পদক্ষেপের ফলই ভোগ করতে হচ্ছে দশের কোটি কোটি বাসিন্দাকে।

আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: ‘যো ভি হোগা দেখা যায়েগা’, করোনা রোগীদের মনোবল বাড়াতে নাচ স্বাস্থ্যকর্মীদের