AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

সংক্রমণের মাঝেও শিশুদের জন্য খানিক স্বস্তি, কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাচ্চাদের অনেক বেশি বলছে গবেষণা

COVID-19: এর আগে আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গবও বলেছিলেন, ছোটদের করোনা সামলানোর ক্ষমতা বেশি।

সংক্রমণের মাঝেও শিশুদের জন্য খানিক স্বস্তি, কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাচ্চাদের অনেক বেশি বলছে গবেষণা
অবশেষে মিলল শিশুদের ভ্যাকসিনের অনুমতি (ফাইল চিত্র)
| Edited By: | Updated on: Aug 20, 2021 | 2:02 PM
Share

কমলেশ চৌধুরী: ছোটদের শ্বাসনালীতে কড়া পাহারাদার বসে। করোনা ঢুকলেই কাত। তাই ছোটদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতার হারও অনেক কম। ধীরে ধীরে যখন স্কুল খোলার পথে হাঁটছে বাংলা-সহ গোটা দেশ, তার আগেই সামনে এল ইতিবাচক খবর। সৌজন্যে, প্রথম সারির গবেষণাপত্র নেচারে প্রকাশিত জার্মান রিপোর্ট। কিন্তু কীভাবে কাত করোনা? প্রথম সারির বিজ্ঞান পত্রিকা নেচার বায়োটেকনোলজিতে তারই ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা।

৪ সপ্তাহ থেকে ৭৭ বছর বয়সি করোনা পজিটিভদের উপর গবেষণা করেছেন বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা পরীক্ষা করেছেন ২ লক্ষ ৬৮ হাজার কোষের উপর। নাক থেকে নমুনা নিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ছোটদের শ্বাসনালির উপরের অংশে ভাইরাসের বিরুদ্ধে রক্ষণ বেশ মজবুত। একেবারে ইউরো-জয়ী ইতালির জমাটি ডিফেন্সের মতোই। করোনাভাইরাস ঢুকতে না ঢুকতেই কুপোকাত হচ্ছে সেই ডিফেন্সে। যেহেতু শরীরে ঢুকতে বেগ পেতে হচ্ছে, তাই বংশবৃদ্ধির সুযোগও পাচ্ছে না করোনাভাইরাস। বংশবৃদ্ধির সুযোগ না-পেলে স্বাভাবিক ভাবেই গুরুতর অসুস্থতার জমি তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে ভাইরাস। কতকটা এই কারণেই নাবালকরা আক্রান্ত হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গহীন।

ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ জোয়ারদার বলছেন, ‘শিশুদের শ্বাসনালির উপরের অংশে কিছু কোষীয় গ্রাহক বা প্যাটার্ন রেকগনিশন রিসেপ্টর রয়েছে, যারা দ্রুত ভাইরাসকে চিনতে পারে। এবং সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারফেরন নামে জৈব-অণু নিঃসরণ করে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।’ গবেষণাপত্র অনুযায়ী রিসেপ্টরগুলি হল MDA5, RIG-I, শ্বাসনালির উপরের অংশের এপিথেলিয়াল কোষে যাদের উপস্থিতি অনেকটাই বেশি। করোনা ঢুকলেই চেনার কাজ শুরু করে দেয় এই সেন্সরগুলি। তার পর শুরু হয়ে যায় রোগ প্রতিরোধী কোষকে চাগানোর কাজ। সিদ্ধার্থবাবুর কথায়, ‘এই কাজের মূল কারিগর ম্যাক্রোফাজ ও ডেনড্রাইটিক কোষ নামক দু-ধরনের ইমিউন সেল, যারা শিশুদের শ্বাসনালিতে প্রচুর পরিমাণে থাকে। এ ছাড়াও, শিশুদের শ্বাসনালিতে এক বিশেষ ধরনের রিসেপ্টরযুক্ত টি-সাইটোটক্সিক সেল ও মেমোরি লিম্ফোসাইটের খোঁজ মিলেছে, যাদের অস্তিত্ব আগে জানা ছিল না।’ এই ধরনের কোষ থাকায় করোনাকে অনেক দিন পর্যন্ত চিনে রাখতে পারে শিশু-শরীর। ফলে রিইনফেকশনেও বিপত্তির আশঙ্কা কম।

এর আগে আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গবও বলেছিলেন, ছোটদের করোনা সামলানোর ক্ষমতা বেশি। তাই স্কুল খোলার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। আইসিএমআর কর্তার দাবি, সেরোসার্ভের চতুর্থ রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, বড়দের মতোই শিশুদের শরীরেও অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। মোটামুটি ৬৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৬-৯ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ, ১০-১৭ বছরে ৬১ শতাংশ। এখানে আরও একটি যুক্তি রয়েছে, এই সমীক্ষায় যে সমস্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের যুক্ত করা হয়েছে, তাদের অনেকে সংক্রমণের প্রতিষেধকও ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন।

Corona

দেশ তো বটেই, গোটা বিশ্বেই দেখা যাচ্ছে, ছোটদের ক্ষতি কম। যা স্পষ্ট বাংলার সংক্রমণ রিপোর্টেও।

বাংলায় মৃত্যুহার

(প্রতি ১০ হাজার আক্রান্তে মৃত্যু)

বয়স ০-১৫: ৭ বয়স ১৬-৩০: ৯ বয়স ৩১-৪৫: ৩১ বয়স ৪৬-৬০: ১২১ বয়স ৬১-৭৫: ৩৪৩ বয়স ৭৫+: ৭৪৮

** তথ্য: পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর, হিসেব ১৮ অগস্ট পর্যন্ত

মোট মৃত্যুর আনুপাতিক হারে ছোটদের সংখ্যা একেবারেই নগন্য। বয়স্কদের সংখ্যা অনেক, অনেক বেশি।

ছোটদের মৃত্যু নগন্য

(মোট মৃত্যুতে অনুপাত)

বয়স ০-১৫: ০.৩% বয়স ১৬-৩০: ১.৭% বয়স ৩১-৪৫: ৭.৯% বয়স ৪৬-৬০: ২৬.৫% বয়স ৬১-৭৫: ৪১.৭% বয়স ৭৫+: ২১.৯%

** তথ্য: পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর, হিসেব ১৮ অগস্ট পর্যন্ত

এদিনই আশার কথা শুনিয়েছে আইসিএমআর। ২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তারা। এর আগে অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়াও শিশুদের টিকা নিয়ে এই সময় সীমার কথাই বলেছিলেন। এরই মধ্যে নেচারে প্রকাশিত এই রিপোর্ট আশা জাগাবে। দূর করবে অনেক ভয়ও। আরও পড়ুন: আফগান-নারীদের চিন্তায় উদ্বিগ্ন মালালা, মনে পড়ছে কী ভাবে তাঁকে মারতে চেয়েছিল তালিব-শক্তি