India-China Relation: ‘ভারতও জবাব দেবে যদি…’, নাম না করেই চিনকে কড়া বার্তা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
Rajnath Singh on India-China Relation: প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমি খোলাখুলি বলতে পারিনা যে ভারতীয় জওয়ানরা কী করেছেন এবং আমরা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আমি এই বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারি যে (চিনের কাছে) বার্তা পৌঁছে গিয়েছে যে ভারতকে যদি কেউ আঘাত করতে চায়, তবে ভারতও তাদের ছাড়বে না।"
ওয়াশিংটন: প্রতিবেশী দেশ চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যে আদায়-কাঁচকলায়, তা বলা বাহুল্য। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে চরমে ওঠে সেই বিরোধ। গালওয়ানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দফায় দফায় বৈঠক হলেও, এখনও বরফ গলেনি। সম্প্রতিই ভারত সফরে এসে চিনা বিদেশমন্ত্রী যাবতীয় সংঘাতের দ্রুত সমাধান চেয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় চিনের ‘মুখে এক, কাজে আর এক’ অবস্থান সম্পর্কে অবগত ভারত। সেই কারণেই হুমকি দেওয়া হলে, তার কড়া জবাব দেবে ভারতও, নাম না করেই চিনকে ফের একবার এই কথা মনে করিয়ে দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
স্যান ফ্রান্সিসকোতে ভারতীয়-আমেরিকান জনগোষ্ঠীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত একটি শক্তিশালী দেশ হিসাবে উঠে এসেছে এবং বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তিন অর্থনীতির দেশের মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। একদিকে তিনি যেমন চিনের উদ্দেশে পাল্টা জবাব দেওয়ার বার্তা দেন, তেমনই আবার আমেরিকার উদ্দেশেও বলেন যে, ভারত “জ়িরো সাম গেম” নীতিতে বিশ্বাসী নয় এবং এক দেশের সম্পর্কের বদলে আরেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে রাজি নয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি খোলাখুলি বলতে পারিনা যে ভারতীয় জওয়ানরা কী করেছেন এবং আমরা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আমি এই বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারি যে (চিনের কাছে) বার্তা পৌঁছে গিয়েছে যে ভারতকে যদি কেউ আঘাত করতে চায়, তবে ভারতও তাদের ছাড়বে না।”
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মে মাসে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরে চিন ও ভারতের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘর্ষওই আরও বড় আকার ধারণ করে জুন মাসে, গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন সংঘর্ষে, চিনের তরফেও অগুনতি জওয়ানের মৃত্যু হয়। এই সংঘর্ষের পরই দফায় দফায় কূটনৈতিক ও সেনাস্তরে আলোচনায় বসে ভারত ও চিন। এখনও অবধি ১৫ দফা বৈঠক হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার একাধিক সংঘর্ষস্থল থেকে সেনা সরলেও, এখনও বেশ কিছু জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই আমেরিকা ইউক্রেনের পক্ষ নিলেও, ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। এই বিষয় নিয়ে আমেরিকা অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, বিদেশমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, “একটি দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে, তার অর্থ এই নয় যে আরেক দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হবে। ভারত কখনও এই ধরনের নীতি গ্রহণ করেনি, আর কখনও করবে না। আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আমরা জিরা-সাম গেমে বিশ্বাসী নই।”