কার্ফু নয়, করোনা রোধে এক সপ্তাহের লকডাউন জারি দিল্লিতে
আজ রাত ১০টা থেকে আগামী সোমবার ভোর ৫টা অবধি লকডাউন জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নয়া দিল্লি: সপ্তাহ শেষে কার্ফু নয়, করোনা সংক্রমণ রোধে এ বার সপ্তাহ জুড়েই জারি থাকবে লকডাউন। রাজধানীতে একদিনেই ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য কড়া লকডাউন জারির সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। সোমবার রাত ১০টা থেকে আগামী সপ্তাহের সোমবার ভোর পাঁচটা অবধি লকডাউন জারি থাকবে।
রেকর্ড হারে রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ দিন সকালেই লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। এরপরই লকডাউনের ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সরকার আপনাদের সম্পূর্ণ খেয়াল রাখবে। সমস্ত দিক বিচার করেই আমরা এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ছয়দিনের লকডাউন আমাদের আরও শয্যা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে।”
In the next 6 days, we will make arrangements for more beds in Delhi. We thank Central govt for helping us. The lockdown period will be used to arrange oxygen, medicine. I request everyone to follow the guidelines: Delhi CM Arvind Kejriwal pic.twitter.com/NAdiHHH9bN
— ANI (@ANI) April 19, 2021
আজ, সোমবার রাত ১০টা থেকে লকডাউন শুরু হবে, চলবে আগামী সপ্তাহের সোমবার ভোর পাঁচটা অবধি। এই সময়কালে কেবল জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও
- খাবার ডেলিভারি, ওষুধ ডেলিভারি চালু থাকবে।
- কার্ফুর নিয়ম মতোই বিয়েবাড়ির ক্ষেত্রে ৫০ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবে, সেক্ষেত্রে বিশেষ পাসের ব্যবস্থা করা হবে।
- ইতিমধ্যেই সমস্ত বেসরকারি অফিসের কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- খোলা থাকবে বেশ কিছু সরকারি অফিস।
- পরীক্ষার্থীরাও আইডি কার্ড দেখিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে পারবে।
- এছাড়াও যারা করোনা পরীক্ষা বা টিকা নিতে যাচ্ছেন, তাঁদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে।
- গর্ভবর্তী বা অসুস্থ কোনও ব্যক্তিও চিকিৎসার কাগজ দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।
- বিমানবন্দর কিংবা বাস, ট্রেনে আগত ব্যক্তিরাও টিকিট দেখালে তাঁদের যেতে দেওয়া হবে।
- খোলা থাকবে ব্যাঙ্ক, বিমা অফিস ও এটিএমগুলি।
- টেলিকমিউনিকেশন, ইন্টারনেট ও কেবল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও লকডাউনের নিয়ম থেকে ছাড় পাবেন।
- পেট্রল পাম্প, এলপিজি, সিএনজি ও গ্যাসের দোকান খোলা থাকবে।
- ধর্মীয় স্থানগুলি খোলা থাকলেও তাতে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন না।
- অত্যাবশ্যকীয় পণ্য উৎপাদন চালু থাকবে, সেখানে কর্মীদের যাতায়াতেও কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
- বেসরকারি নিরাপত্তা পরিষেবাও চালু থাকবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্পর্কে তিনি বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে প্রায় সাড়া ২৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তার আগের দিন সাড়ে ২৫ হাজার। অর্থাৎ বিগত তিন-চারদিন ধরেই গড়ে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। যেকোনও জায়গাতেই একদিনেই যদি ২৫ হাজার রোগী উপস্থিত হন, তবে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় তার প্রভাব তো পড়বেই। আমরা আপনাদের ভয় দেখাতে চাইছি না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, তা বলব না, তবে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের বেডের সংখ্যা ক্রমশ কমেই চলেছে। আইসিইউ বেড নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।”
#WATCH| In the last 24 hours, around 23,500 cases were reported. In last 3-4 days, around 25,000 cases have been reported. Positivity rate&infection have increased. If 25,000 patients come every day then system will crumble, there’s a shortage of beds:Delhi CM Arvind Kejriwal pic.twitter.com/P3xEszFkke
— ANI (@ANI) April 19, 2021
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্য ছেড়ে না যাওয়ার অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল। তিনি হাত জোড় করে বলেন, “লকডাউনের সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে দিন মজদুরদের উপরই। গতবছর আমরা তা দেখেছি। তবে আমি আপনাদের অনুরোধ করে বলছি এটি মাত্র ছয়দিনের জন্য লকডাউন। দয়া করে রাজ্য ছেড়ে যাবেন না। রাজ্যেই থাকুন, এভাবে বারবার যাতায়াতে আপনাদেরই টাকা নষ্ট হবে। আশা করছি লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতে হবে না। দিল্লি সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে সর্বক্ষণ।”
#WATCH | Delhi CM Arvind Kejriwal appeals to the migrant labourers. He says, “I appeal to you with folded hands. It’s a small lockdown, only for 6 days. Don’t leave Delhi & go. I’m very hopeful that we won’t need to further extend the lockdown…Govt will take care of you.” pic.twitter.com/OsFCytHCNu
— ANI (@ANI) April 19, 2021
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরু থেকেই লকডাউনের বিরোধিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেই বলেছিলেন, লকডাউন কোনও সমাধান নয়। তবে চলতি মাস থেকে যে হারে রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, তাতে বিভিন্ন সময়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। প্রথমে নৈশ কার্ফু ও পরে সপ্তাহ শেষে সম্পূর্ণ কার্ফু জারি করা হয়। বিগত তিন-চার দিন ধরে দৈনিক ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাধ্য হয়েই এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করতে হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল।