‘একটা আইসিইউ বেড হবে?’ মিললেও করোনার গ্রাসে হারিয়ে গেলেন জামিয়া মিলিয়ার অধ্যাপিকা

গত ২৩ এপ্রিল তিনি টুইট করে লিখেছিলেন, "একদিনেই কতজন পরিচিতের মৃত্যু হল"। পরেরদিনই তিনি ফের টুইট করে লেখেন, "কত কমবয়সী ও পরিচিত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠছি মৃত্যুর খবর শুনে।"

'একটা আইসিইউ বেড হবে?' মিললেও করোনার গ্রাসে হারিয়ে গেলেন জামিয়া মিলিয়ার অধ্যাপিকা
ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 20, 2021 | 10:15 AM

নয়া দিল্লি: করোনা আক্রান্ত হয়ে নিজেই আইসিইউ বেডের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন টুইটারে। সাহায্য মিললও, কিন্তু ততক্ষণে দেরী হয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। করোনা সংক্রমণে ফুসফুস এতটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গিয়েছিল যে, চিকিৎসকদের হাজারো প্রচেষ্টাতেও বাঁচানো গেল না দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা নাবিলা সাদিককে। সোমবার রাতেই সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয় তাঁর।

নাবিলার বিগত কয়েক সপ্তাহের টুইট দেখেই বোঝা যায় যে তিনি করোনা সংক্রমণ নিয়ে কতটা উদ্বেগে ছিলেন এবং নিজে আক্রান্ত হওয়ার পর কতটা ভেঙে পড়েছিলেন। গত ২৩ এপ্রিল তিনি টুইট করে লিখেছিলেন, “একদিনেই কতজন পরিচিতের মৃত্যু হল”। পরেরদিনই তিনি ফের টুইট করে লেখেন, “কত কমবয়সী ও পরিচিত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠছি মৃত্যুর খবর শুনে। মানসিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখা যাচ্ছে না। কবে এগুলি শেষ হবে?”

এরপর ২৬ এপ্রিল প্রথমবার নিজের জ্বর আসার কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, “প্রার্থনা করছি যে আগামিকাল যেন শরীর সুস্থ হয়ে যায়। জ্বর কমে গিয়েছে, কেবল গলাতেই সমস্যা রয়েছে”। ১ ও ২ মে-ও তিনি টুইট করেন। কখনও লেখেন, তাঁর ও তাঁর পরিবারের জন্য প্রার্থনা করতে, কখনও আবার লেখেন, এইভাবে চলতে থাকলে দিল্লিতে কেউ বেঁচে থাকবে না।

৪ মে তিনি আইসিইউ বেডের খোঁজে টুইট করেন, সেদিনই আবার টুইট করে জানান যে বেড পাওয়া গিয়েছে। সেটিই তাঁর শেষ টুইট ছিল। জানা গিয়েছে, তিনটি হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখিত হওয়ার পর তিনি চার নম্বর হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছিলেন।

নাবিলার এক ছাত্র জানান, ফরিদাবাদের ফর্টিস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে, কিন্তু আচমকাই অক্সিজেন লেভেল ৩২ শতাংশে নেমে যায়। সিটি স্ক্যান করে জানা যায়, সংক্রমণে তাঁর ফুসফুস গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ দিকে, নাবিলার মৃত্যুতে সম্পূর্ণ একা হয়ে গিয়েছেন তাঁরবৃদ্ধ বাবা। কারণ ৪ মে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৭ মে নাবিলার মা করোনা সংক্রমণের জেরেই প্রাণ হারান। ১০ দিনের মধ্যে স্ত্রী ও সন্তানকে হারিয়ে শোকে মূহ্যমান ৮৬ বছরের বৃদ্ধ।

আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: মাস্ক না পরার অপরাধে রাস্তায় ফেলে মারধর পুলিশের, মহিলার কপালে জুটল ঘুসি-লাথিও!