মা মারা গেলে ‘ডিভোর্সি’ মেয়েকে চাকরি নয়, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court : কমপ্যাশনেট চাকরির ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মেয়েকে বিধবা বা অবিবাহিত মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করা হবে না। জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
নয়াদিল্লি : কমপ্যাশনেট চাকরির ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মেয়েকে বিধবা বা অবিবাহিত মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করা হবে না। জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কর্নাটক সিভিল সার্ভিসেসের ‘কমপ্যাশনেট’ নিয়োগের ক্ষেত্রে সে রাজ্যের হাইকোর্ট নির্দেশে দিয়েছিল, বিবাহ বিচ্ছিন্না মেয়েকেও অবিবাহিত কিংবা বিধবা মেয়ে হিসেবে চাকরি দিতে হবে কর্নাটক সিভিল সার্ভিসেস রুলস, ১৯৯৬ অনুযায়ী।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম আর শাহ এবং অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চে বলা হয়েছে, দরখাস্তের নিয়োগের দাবির বিবেচনার ভিত্তি হতে হবে আবেদনের বিবেচনা।
এই ক্ষেত্রে আবেদনকারীর মা কর্নাটক সরকারের মান্ডিয়া জেলার কোষাগারে সেকেন্ড ডিভিসন অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর মারা যাওয়ার পর আবেদনকারী কমপ্যাশনেট নিয়োগের দাবিতে দরখাস্ত জমা করেন। সেই দরখাস্ত প্রথমে খারিজ হয়ে যায়। কারণ, বিবাহ বিচ্ছিন্না মেয়ের চাকরির জন্য কোনও নিদান কর্নাটক সিভিল সার্ভিসেস রুলস, ১৯৯৬ অনুযায়ী নেই।
পরে কর্নাটক হাইকোর্ট আবেদনটি খতিয়ে দেখে। আদালত, রুল নম্বর তিন ব্যাখ্যা করে তার পর্যবেক্ষণে জানায়, বিবাহ বিচ্ছিন্ন মেয়েরাও অবিবাহিত অথবা বিধবা মেয়েদের সঙ্গে একই তালিকাভুক্ত। সেই জন্য বিবাহ বিচ্ছিন্না মেয়েকেও সুযোগ দিতে হবে ওই একই তালিকায়।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে বলছে, একমাত্র অবিবাহিত মেয়েরা এবং বিধবা মেয়েরা যাঁরা, মৃত সরকারি কর্মীর শেষকাল পর্যন্ত তাঁর উপর নির্ভরশীল, তাঁদেরকেই উপযুক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে ওই নির্ভরশীল মেয়ে মৃত কর্মীর সঙ্গে থাকতেন কিনা, তাও দেখতে হবে। একমাত্র তাঁরাই মৃত মহিলা কর্মীর ‘কমপ্যাশনেট’ চাকরি পাওয়ার যোগ্য।
আদালত আরও জানিয়েছে, ওই মহিলা সরকারি কর্মী মারা যাওয়ার পরপরই তাঁর মেয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, শুধুমাত্র সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার জন্য এই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করা হয়েছিল। আদালত আরও জানিয়েছে, যেদিন ওই মহিলা কর্মী মারা গিয়েছেন, অর্থাৎ ২৫ মার্চ, ২০১২ সাল পর্যন্ত তাঁর মেয়ে বিবাহিতই ছিলেন।
উল্লেখ্য, কর্নাটক সিভিল সার্ভিসেসের চাকরি পাওয়ার জন্য এই মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। প্রথমে সরকার পক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দেওয়া যাবে না বললে, মামলা গড়ায় কর্নাটক হাইকোর্ট পর্যন্ত, সেখানে বিবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মেয়েকেও অবিবাহিত কিংবা বিধবা মেয়ে হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়। কিন্তু পরে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, শুধুমাত্র সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার জন্য এই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন ওই মৃত মহিলা কর্মচারীর মেয়ে। কমপ্যাশনেট চাকরি কাদের কাদের দেওয়া যাবে সেই সংজ্ঞাও তৈরি করে দেয় শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন : ‘কালো কোর্ট পরা মানেই জীবন মূল্যবান নয়’, ক্ষতিপূরণের আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টের