Mumbai Extortion Case: সচিনকেই দেওয়া হত বার মালিকদের নামের তালিকা! কীভাবে চলত তোলাবাজি, জানাল ইডি

Anil Deshmukh Money Extortion Case: অনিল দেশমুখের হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে ইডির তরফে জানানো হয়, জেরার সময় এনসিপি নেতা সঠিকভাবে কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি এবং বারবার বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।

Mumbai Extortion Case: সচিনকেই দেওয়া হত বার মালিকদের নামের তালিকা! কীভাবে চলত তোলাবাজি, জানাল ইডি
স্পষ্ট হচ্ছে সচিন ভাজ়ের ভূমিকা। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 07, 2021 | 6:52 AM

মুম্বই: লক্ষ্য ছিল মুম্বইয়ের বারগুলি। সেখান থেকেই প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা তোলাবাজির ( লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ (Anil Deshmukh)। এই তোলাবাজির কাজে বড় ভূমিকা পালন করতেন পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়ে (Sachin Waze)। এক ব্যক্তি তাঁকে বার ও অর্কেস্ট্রা বারের মালিকদের নাম ও ফোন নম্বর দিতেন, সেই তালিকা ধরেই বাকি কাজটুকু সারতেন সচিন ভাজে, শনিবার বিশেষ আদালতে এমনটাই জানাল ইডি (ED)।

একই মামলায় অনিল দেশমুখের হেফাজত আরও ৯দিন বাড়ানোর আবেদন করা হলেও, বিচারপতি পিআর সিতরে সেই আবেদন খারিজ করে দেন এবং তার বদলে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত।

অনিল দেশমুখের হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে ইডির তরফে জানানো হয়, জেরার সময় এনসিপি নেতা সঠিকভাবে কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি এবং বারবার বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। গত ১ নভেম্বরই ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (NCP) নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন গৃহমন্ত্রী অনিল দেশমুখকে গ্রেফতার করেন ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। টানা ১২ ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার আর্থিক তোলাবাজির অভিযোগ এনেছিলেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং।

ঘটনার সূত্রপাত হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি থেকে ২৫টি জিলোটিন স্টিক উদ্ধার করা হয়। তদন্ত শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই সচিন ভাজ়ে নামক এক পুলিশকর্মীর নাম জড়াতেই আচমকা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ পুলিশ কমিশনার পদ থেকে পরমবীর সিংকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কাছে পত্রবোমা পাঠান পরমবীর সিং।

৬ পাতার সেই চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা তোলাবাজির লক্ষ্যমাত্রা দিতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। অম্বানী কাণ্ডে জড়িত পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়ে এই তোলাবাজির কাজটি সামলাতেন। এরজন্য মুম্বইয়ের বহু রেস্তরাঁ, বার-পাবও চিহ্নিত করা হয়েছিল।

সরকার বনাম প্রাক্তন পুলিশকর্তার বিবাদ গড়ায় হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্ট অবধি। অবশেষে অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে তোলাবাজি কাণ্ডের তদন্তভার নেয় সিবিআই ও ইডি। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন অনিল দেশমুখ। এ দিকে, গত ২৩ জুলাই থানের একটি পুলিশ স্টেশনে পরমবীর সিংয়ের বিরুদ্ধেও তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন তিন ব্যবসায়ী।

তদন্তে নেমে ইডি জানতে পারে, ২৭টি সংস্থাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন অনিল দেশমুখ ও তাঁর পরিবার। এই সংস্থাগুলিকেও ব্যবহার করা হত তোলবাজির টাকা হাত বদলের মাধ্যমে সাদা টাকায় পরিণত করতে। যে ব্যক্তি বার মালিকদের নাম ও ফোন নম্বর জোগাড় করে দিতেন, তাকেও সমন পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

গতকালই আদালতে ইডি জানায়, অনিল দেশমুখের দুই ছেলে ঋষিকেশ দেশমুখ, সলিল দেশমুখ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে এই সংস্থাগুলিতে টাকা আসত। এই আর্থিক তছরুপেই বিশেষ ভূমিকা পালন করতেন সচিন ভাজ়ে। তিনিই অনিল দেশমুখের নির্দেশে মুম্বইয়ের বিভিন্ন বার থেকে প্রতি মাসে তোলাবাজির টাকা আদায় করে আনতেন।

গত ৫ নভেম্বর ইডি এনআইএ আদালতে সচিন ভাজ়ের বয়ান রেকর্ডের আবেদন জানায়। অনিল দেশমুখের কাছ থেকে যে তথ্য প্রমাণগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই তাঁকে জেরা করার আবেদন জানানো হয়। বর্তমানে মুম্বই পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন সচিন ভাজ়ে। তাঁর বিরুদ্ধে গোরেগাঁওয়ে দায়ের হওয়া একটি তোলাবাজির অভিযোগের তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন: Mumbai Fire: মুম্বইয়ের বহুতলে বিধ্বংসী আগুন, মৃত ২