Wedding: শৈশব থেকে বার্ধক্যেও ফিকে হয়নি প্রেম, ৬৪ বছর পর হ্যাপি এন্ডিং পেল যুগল
Wedding: এখন সন্তান, নাতি-নাতনিদেরদের নিয়ে সুখের সংসার হর্ষ এবং মৃণুর। কিন্তু সেই সাধের পরিবারই যে জীবনের সবচেয়ে বড় 'না পাওয়া'টাকে ফিরিয়ে দেবে তাঁদের, তা বোধহয় নিজেরাও কল্পনা করেননি।

সমাজে বাধার মুখে একদিন পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল তরুণ-তরুণী। সেই দিনটা ছিল ৬৪ বছর আগের কথা। অবশেষে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হলেন গুজরাটের বাসিন্দা হর্ষ এবং মৃণু। আসলে একে অপরকে ছোটবেলা থেকেই ভালোবাসতেন হর্ষ এবং মৃণু। তবে ৬৪ বছর আগে আন্তঃবর্ণ বিয়ের কথা কল্পনাও করতে পারতেন না অনেকে। তার উপর আবার প্রেম করে বিয়ে। যদিও আজও বিষয়টা সর্বত্র খুব একটা সহজ নয়। তবে মন যে জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ বোঝে না। তাই দুজন, একে অপরের হাত ধরে পাড়ি দিয়েছিলেন অজানা-অচেনা ভবিষ্যতের উদ্দেশে। বিয়ে করেছেন। সংসার পেতেছেন। ছেলেমেয়ের জন্ম দিয়েছেন। তাঁদের মানুষ করে তুলেছেন। সময়ের নিয়মে নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন তাঁরাও।
এখন সন্তান, নাতি-নাতনিদেরদের নিয়ে সুখের সংসার হর্ষ এবং মৃণুর। কিন্তু সেই সাধের পরিবারই যে জীবনের সবচেয়ে বড় ‘না পাওয়া’টাকে ফিরিয়ে দেবে তাঁদের, তা বোধহয় নিজেরাও কল্পনা করেননি। সেই দিন সমাজের চাপে, পরিবারের বাধার কারণে এবং ভালবাসার টানে বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। যদিও এটা কোনও দিনও চাননি তাঁরা। ইচ্ছা ছিল সকলের মতোই ধুমধাম করে সামাজিক বিয়ে হবে হর্ষ এবং মৃণুর। সেই ইচ্ছা ৬৪ বছর অপূর্ণ থেকে গেলেও অবশেষে তা পূরণ করলেন হর্ষের পরিবার, তাঁর সন্তান নাতি-নাতনিরা। ৬৪ বছরে এসে নতুন করে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হলেন বৃদ্ধ দম্পতি। তাঁদের স্বপ্নের সেই বিয়ের ভিডিয়ো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছে ‘দ্য কালচার গালি’।
একেই ভিন্ন ধর্মের ছেলের প্রেমে পড়েছেন মৃণু। সকলের চোখ কড়া পাহাড়া পেড়িয়ে আড়ালে চলত প্রেম। দেওয়া নেওয়া হত নিজের হাতে লেখা প্রেম পত্রের। তবে বিষয়টি জানাজানি হতেই মৃণুর পরিবার তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে। সাহসী মৃণু সিদ্ধান্ত নেয় ভাল যখন বেসেছেন তখন যাই হয়ে যাক, জীবন কাটাবেন তাঁর সঙ্গেই। এক বন্ধুর কাছে একটি চিরকুট রেখে পালিয়ে যান দুজনে। সেই চিরকুটে লেখা ছিল, “আমি আর ফিরে আসছি না।”
View this post on Instagram
এরপর কেটে গিয়েছে ৬৪ বছর। হর্ষ এবং মৃণুর সন্তান- নাতি-নাতনিরা পূরণ করলেন দাদু-দিদার বিয়ের স্বপ্ন।
ভিডিয়োটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, “হর্ষ এবং মৃণু ছিল ভিন্ন ধর্মের ছোটবেলার বন্ধু। পরিবার তাঁদের বিয়ের বিরুদ্ধে ছিল, কারণ ১৯৬০-এর দশকে প্রেমের বিয়ে চল ছিল না। তাঁরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে এবং একসঙ্গে জীবন গড়ে তোলে। আজ, তাঁদের পরিবার, নাতি-নাতনিরা, সন্তানরা তাঁদের সুন্দর অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিয়েছে। মৃণু এবং হর্ষের স্বপ্ন ছিল এই বিয়ে।”
অনেক ব্যবহারকারী এই দম্পতির প্রতি তাদের প্রশংসা, বিস্ময় এবং আন্তরিক অভিনন্দন প্রকাশ করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “খুব সুন্দর! একজন জৈন এবং অন্যজন ব্রাহ্মণ হওয়া সত্ত্বেও তারা বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল – আপনাকে বুঝতে সাহায্য করে যে আন্তঃবর্ণ বিবাহের জন্য এখনও কতটা সাহসের প্রয়োজন।”
আরেকজন লিখেছেন, “এই বিয়ে যে কোনও হাই-প্রোফাইল সেলিব্রিটি অনুষ্ঠানকে ছাড়িয়ে গেছে। কী অসাধারণ প্রেমের গল্প। এই অসাধারণ দম্পতির আরও অনেক বছরের ভালোবাসা এবং সুখ কামনা করছি।”
অন্য আরেকজন বলেন, “কখনও কখনও, সময়, দূরত্ব এবং পরিস্থিতি প্রেমের পরীক্ষা নেয়, তবুও সবচেয়ে শক্তিশালী বন্ধন কখনও ভাঙে না। তাদের গল্পটি একটি সুন্দর স্মারক যে সত্যিকারের ভালোবাসা অবিচল থাকে, তা সে যত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিই হোক না কেন। তারা একসাথে থাকার জন্য পালিয়ে গিয়েছিল, নিজের শর্তে জীবন গড়ে তুলেছিল, এবং এখন, কয়েক দশক পরে, একই পরিবার যারা একসময় তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল তারা তাদের ভালোবাসা উদযাপন করছে। সত্যিকারের ভালোবাসা ম্লান হয় না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও শক্তিশালী হয়। এটাই তার প্রমাণ।”





