ভোটের মুখেই রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন শশীকলা
এআইএডিএমকে-র জয়ের জন্য ভগবান ও জয়ললিতার (Jayalalitha) কাছে প্রার্থনা করবেন বলে উল্লেখ করলেন শশীকলা (Sashikala)
চেন্নাই: ‘ক্ষমতার লোভ আমার কোনোদিনই ছিল না। জয়ললিতা (Jayalalithaa) জীবিত থাকাকালীনও ক্ষমতার লোভ করিনি। তাঁর মৃত্যুর পরও করব না।’ চিঠিতে একথা লিখেই রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানালেন নিলেন শশীকলা।
জয়ললিতার এক সময়ের সঙ্গী শশীকলা তামিলনাড়ুর শাসক দল এআইডিএমকে থেকে বহিষ্কৃত হন। গত জানুয়ারিতে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন তামিলনাড়ুতে। আর তার আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে শশীকলার উদয় আবার হবে দক্ষিণি রাজনীতিতে, এমনটাই ছিল অনুমান। তাই ভোটের আগে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এআইএডিএমকে সদস্যের প্রতি বার্তা দিয়ে শশীকলা বলেছেন, ‘আমি চাইব সমস্ত এআইএডিএমকে কর্মী একজোট হয়ে লড়াই করুক। আর ডিএমকেকে হারাক।’ তার জন্য ভগবান ও জয়ললিতার কাচে প্রার্থনা জানাবেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। দুর্নীতির দায়ে ৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন শশীকলা। জানুয়ারিতে জেল থেকে মুক্তি পান। এরপর তিনি তাঁর পুরনো পদ এআইএডিএমকের প্রধান হিসেবে ক্ষমতায় ফিরতে চান বলে জল্পনা শুরু হয়। এরই মধ্যে রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে সরাতে হবে সমস্ত সরকারি বিজ্ঞাপনের ছবি, নির্দেশ কমিশনের
তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার ছায়াসঙ্গী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন শশীকলা। বরাবরই তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে এই নেত্রীকে। তাঁকে নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বোন হিসেবেই শশীকলাকে সম্বোধন করতেন জয়ললিতা। জয়ললিতার বাসভবন পয়েজ গার্ডেনে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই শশীকলা। জয়ার মৃত্যুর পর অনেকেই ভেবেছিলেন, যে অবশেষে সময় এসেছে শশীকলার। মৃত্যুশয্যাতেও জয়ললিতার সঙ্গে সর্বক্ষণ ছিলেন শশী।২০১৬-তে তাঁর মৃত্যুর পর শশীকলা যে ছায়া থেকে বেরিয়ে মূল চরিত্র হয়ে উঠবেন, তা অভিপ্রেতই ছিল।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দলের সব দায়িত্ব শশীকলার হাতে চলে আসে। কিন্তু ২০১৭-তে দুর্নীতির মামলায় তাঁকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গত ২৭ জানুয়ারি জেল থেকে মুক্তি পান তিনি। ভোটের আগে তাই তাঁর অবস্থান নিয়ে উৎসাহী ছিলেন অনেকেই। কিন্তু পক্ষ-বিপক্ষ সবাইকেই তা লাগিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন শশীকলা।
শশীকলার উত্থান-পতনের সাক্ষী তামিলনাড়ু। একসময় দল থেকে বহিষ্কার করার পর আবার শশীকে কাছে টেনে নিয়েছিলেন জয়ললিতা। ২৪ বছর এক ছাদের তলায় কাটিয়েছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত জয়ার সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, করেছিলেনও তাই। জয়ললিতার হাসপাতালে কাটানো শেষ ৭৫ দিনের সঙ্গী ছিলেন শশীকলা। এমনকি আম্মার মৃতদেহের পাশেও সঙ্গী সেই শশীকলা। তাঁকেই জয়ার বিকল্প ভাবতে শুরু করেন অনেকে। কিন্ত শেষ পর্যন্ত জয়ললিতার মতোই জেলে যেতে হল তাঁকে। সুতরাং রাজনীতির এমন হেভিওয়েট চরিত্রের আকস্মিক সরে যাওয়া অবাক করছে অনেককেই।