AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

INDIA Alliance: প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে? ইন্ডিয়া জোটের ভিতরে-বাইরে এখন এটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন

Lok Sabha Election 2024: বিভিন্ন রাজ্যেও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গীদের মধ্যে তীব্র বিরোধ চলছে। পঞ্জাব ও দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেসের বিরোধ বেধেছে। পঞ্জাবে কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা ১৩টি আসনেই প্রার্থী দেবে। দিল্লিতেও ৭টি লোকসভা আসনেই একা লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রস।

INDIA Alliance: প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে? ইন্ডিয়া জোটের ভিতরে-বাইরে এখন এটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন
ইন্ডিয়া জোট কি টিকে থাকতে পারবে?Image Credit: PTI
| Edited By: | Updated on: Sep 30, 2023 | 1:21 PM
Share

নয়া দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এগোচ্ছে শাসক ও বিরোধী দলগুলি। কেন্দ্র থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সরকারকে হঠাতেই তৈরি হয়েছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া (INDIA)। এই জোট নিয়েই এখন যাবতীয় আলোচনা-জল্পনা। বিরোধী জোটে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা নিয়েই তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে উঠে আসছে বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী নীতীশ কুমারের নাম। তবে ইন্ডিয়া জোটের বাকি সদস্যরা নীতীশ কুমার(Nitish Kumar)-কে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে মানতে রাজি হবেন কি না, তা নিয়ে বিস্তর সংশয় রয়েছে।

গত ৩১ অগস্ট, ১ সেপ্টেম্বর মুম্বইতে ইন্ডিয়া জোটের তৃতীয় বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে একাধিক পরিকল্পনা করা হয়। একাধিক কমিটি, সাব-কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু পটনা, বেঙ্গালুরু ও মুম্বই বৈঠকের পরও ইন্ডিয়া জোটে মূল প্রশ্ন এটাই যে জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ কে হবেন?

ইন্ডিয়া জোটের শীর্ষ নেতারা যৌথ নেতৃত্বের কথা বললেও, নীচু স্তরের নেতা-কর্মীরা নিজেদের দলের নেতার জন্যই ব্যাটিংয়ে ব্যস্ত। ইতিমধ্যেই আরজেডি ও জে়ডিইউ-র মধ্যে নীতীশ কুমারকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরজেডি নেতারা ফুলওয়ারি শরিফে চাদর চড়িয়ে নীতীশ কুমারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রার্থনাও করেন। আরজেডি-র জেডিইউকে সমর্থন করতে সমস্যা নেই। তাদের কথা, বিহার থেকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা উচিত। নীতীশ কুমার যোগ্য প্রার্থী। যদিও ইন্ডিয়া জোটসঙ্গী আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবাল আবার বলেছেন যে কোনও বিশেষ ব্যক্তিকে নয়, এমন এক ব্যবস্থা করা উচিত যেখানে ১৪০ কোটি মানুষই প্রধানমন্ত্রী হবেন।

নীতীশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নকে আবার কটাক্ষ করেছেন পুরনো সঙ্গী তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, “যাদের লোকসভায় একজনও সাংসদ নেই, তারা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে”। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংও কটাক্ষ করেছেন।

অন্যদিকে, আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবাল যে দেশের ১৪০ কোটি জনগণকে প্রধানমন্ত্রী করার কথা বলেছেন, তা বাস্তবে অসম্ভব। অর্থাৎ ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন কেজরীবাল।

তবে, প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটাই ইন্ডিয়া জোটের বিতর্কের একমাত্র কারণ নয়। এমন অনেক সমস্যা আছে যেগুলোর এখনও সমাধান হয়নি। এরমধ্যে অন্যতম হল আসন ভাগাভাগি। সম্প্রতিই মধ্য প্রদেশে ইন্ডিয়া জোটের যৌথ সমাবেশ ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই বৈঠক বাতিল হয়। এরপরই জোটের পরবর্তী পরিকল্পনাগুলি নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। আরও একটি সমস্যা হল, জাতিসুমারি নিয়ে জোটের অন্দরে মতবিরোধ।

বিভিন্ন রাজ্যেও ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গীদের মধ্যে তীব্র বিরোধ চলছে। পঞ্জাব ও দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেসের বিরোধ বেধেছে। পঞ্জাবে কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা ১৩টি আসনেই প্রার্থী দেবে। দিল্লিতেও ৭টি লোকসভা আসনেই একা লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রস। আপ কংগ্রেসের এই আচরণে বেজায় চটেছে।

অন্য়দিকে, একই অবস্থা পশ্চিমবঙ্গেও। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্রমাগত আক্রমণ করছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সম্প্রতিই মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফর নিয়ে তিনি তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন। অধীরকে আবার সংযত হওয়ার পাঠ দিয়েছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। অন্যদিকে, ইন্ডিয়া জোটের বাকি সদস্যগুলির সমস্যা না থাকলেও, তৃণমূল আপত্তি জানিয়েছে জাতিভিত্তিক জনসুমারি নিয়ে।

তামিলনাডুতেও সনাতন ধর্ম নিয়ে ডিএমকে নেতা উদয়নিধি স্ট্যালিনের বিতর্কিত মন্তব্যের পর কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে। সব মিলিয়ে ইন্ডিয়া জোটে বেশ কিছু দল, বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ অস্বস্তি বাড়াতে পারে।

মূলত সমস্যা কংগ্রেসকে নিয়েই। বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি ছাড়াও একাধিক আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে বিরোধ রয়েছে কংগ্রেসের। ইন্ডিয়া জোটে সামিল হওয়ার পর তাদের সঙ্গেই সমঝোতা করতে হচ্ছে। যেমন, আগে উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে লড়াই ছিল কংগ্রেসের। এখন তারা জোটসঙ্গী। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে জোট বেধেছিল বাম ও কংগ্রেস। এবার লোকসভা নির্বাচনের জন্য তারা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি নয়। দিল্লি, পঞ্জাবেও আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেসের বিরোধ চরমে। গুজরাটের বিজেপির পাশাপাশি আপের সঙ্গে লড়ছে কংগ্রেস। হিমাচল প্রদেশেও আপ যেভাবে ক্ষমতা বাড়াচ্ছে, তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। গোয়াতেও একই অবস্থা। সামগ্রিকভাবে, ইন্ডিয়া জোটের পথ কাঁটায় ভরা। এই মুহূর্তে অনেক সংকট রয়েছে জোটের, এই সংকটগুলি কাটিয়ে উঠতে তাদের অনেক প্রস্তুতি নিতে হবে।

এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের আগে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে  বিজেপি। তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকে-র সঙ্গে জোট ভেঙেছে। পঞ্জাবে অকালি দলকে ছাড়াই লোকসভা নির্বাচনে লড়তে হবে। এরমধ্যে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে শুধু কর্নাটকে। সেখানে জেডিএস এনডিএ জোটে যোগ দিয়েছে।  লোকসভা নির্বাচনের আগে শাসক না বিরোধী দল, কারা মাইলেজ পায়, তাই-ই এখন দেখার।