‘বাড়িতে থাকলে কি কৃষকরা মরতেন না?’ বিতর্কিত মন্তব্য হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রীর
২০০-রও বেশি কৃষকের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, "ওনারা কি বাড়িতে থাকলে মারা যেতেন না? ছয় মাসে ১ থেকে ২ লাখ মানুষের মধ্যে কি ২০০জন মারা যান না?"
চণ্ডীগঢ়: “বাড়িতে থাকলে কি কৃষকদের মৃত্যু হত না?” কৃষক আন্দোলনে ২০০-রও বেশি কৃষক মৃত্যুতে এহেন মন্তব্য করে বিপাকে হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জেপি দালাল। বিপুল সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি পরে জানান, তাঁর মন্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। তাঁর মন্তব্যে যদি কেউ আঘাত পান, তবে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
হরিয়ানার বিওয়ানিতে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী জেপি দালাল (JP Dalal)। সেখানে এক সাংবাদিক তাঁকে দিল্লিতে বিগত ৮১দিন ধরে চলা কৃষক আন্দোলনে প্রায় ২০০-রও বেশি কৃষকের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, “ওনারা কি বাড়িতে থাকলে মারা যেতেন না? বাড়িতে থাকলেও তো তাঁরা মারা যেতেন। বিগত ছয় মাসে ১ থেকে ২ লাখ মানুষের মধ্যে কি ২০০ জন মারা যান না?” তাঁর এই মন্তব্যেই সভায় হাসির রোল ওঠে। হেসে পেলেন তিনি নিজেও।
প্রধানমন্ত্রী কেন সমবেদনা জানান কেন প্রশ্ন করলে, হাসিমুখেই তিনি বলেন, “ওনারা তো দুর্ঘটনায় মারা যাননি। কেউ হৃদরোগে মারা গিয়েছেন বা কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁরা স্বেচ্ছায় মারা গিয়েছেন। আমার সমবেদনা রইল তাঁদের জন্য।”
BJP Haryana Agriculture Minister JP Dalal’s embarrassing statement about farmers
Bharatiya Janata Party is not understanding the pain of farmers but making fun of them watch’ this video ⤵️#GoBackModi pic.twitter.com/0jxSCJGNU4
— Deepak Khatri (@Deepakkhatri812) February 13, 2021
আরও পড়ুন: পুলওয়ামা হামলার দুই বছর পার, প্রধান চক্রী মাসুদের নামে নোটিস জারি ইন্টারপোলের
কৃষিমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা (Randeep Singh Surjewala) বলেন, ” আন্দোলনকারী অন্নদাতাদের প্রতি এইধরনের মন্তব্য কেবল অবিবেচক ব্যক্তিরাই করতে পারেন।” হরিয়ানার কংগ্রেস প্রধান সেলজাও টুইট করে কৃষিমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি টুইটে লেখেন, “আমাদের কৃষকভাইদের আত্মত্যাগের প্রতি হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রীর এহেন মন্তব্য ও হাসি অত্যন্ত দুঃখজনক।” পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা রাজ কুমার ভেরকা এই মন্তব্যের জন্য তাঁর পদত্যাগের দাবিও তোলেন।
সমালোচনার পরই হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমার বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে আমার মন্তব্যের। যদি আমার কথায় কেউ আঘাত পান, তবে আমি ক্ষমা চাইছি।” একইসঙ্গে তিনি জানান, আগামিদিনেও তিনি কৃষকদের জন্যই কাজ করতে চান। যে কারোর মৃত্যুই হৃদয়বিদারক।
গত নভেম্বর মাস থেকেই কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতায় দিল্লি সীমান্তে আন্দোলন করছেন। প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও আন্দোলনস্থলে বসে থাকার কারণে বহু কৃষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে একাধিক কৃষক আত্মহত্যা যেমন করেন, তেমনই বহু কৃষক শারীরিক অসুস্থতার কারণেও মারা যান। কেন্দ্রের সঙ্গে একাদশ দফা বৈঠক হলেও এখনও আইন প্রত্যাহার হয়নি।
আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গের ভিতরে উদ্ধার দুটি ছিন্নভিন্ন দেহ, আগাম বিপদের আশঙ্কায় জঙ্গলে ঠাঁই নিয়েছেন গ্রামবাসীরা