টিকাকরণের গতিতেই হার মানছে করোনা, ‘শেষের শুরু’ কবে, জানালেন বিশেষজ্ঞ

COVID-19 Endemic: তবে টিকাকরণই নয়, করোনা রুখতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি। যাদের করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তারাও যাতে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন, সেই পরামর্শ দেন এনসিডিসির ডিরেক্টর।

টিকাকরণের গতিতেই হার মানছে করোনা, 'শেষের শুরু' কবে, জানালেন বিশেষজ্ঞ
কবে মুক্তি মিলবে করোনা থেকে? ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 6:55 AM

নয়া দিল্লি: দেশে দ্রুতগতিতে চলছে টিকাকরণ(COVID Vaccination)। ইতিমধ্যেই ৭৫ কোটির গণ্ডি পেরিয়েছে টিকাকরণে, বিগত কয়েকদিন ধরেই নিম্নমুখী করোনা সংক্রমণও। তবে কি ধীরে ধীরে শক্তি খোয়াচ্ছে মারণ ভাইরাস? বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ৬ মাসের মধ্যেই আরও শক্তি হারাবে করোনা(COVID-19), রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠায় কমবে সংক্রমণের হারও। অর্থাৎ প্যানডেমিকের পালা শেষ, এ বার শুরু এন্ডেমিক (Endemic)।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোল(NCDC)-র ডিরেক্টর সুজিত সিং বলেন, “করোনা প্যানডেমিক নিয়ে আমরা যাই-ই আগাম সতর্কতা দিয়েছিলাম, তা অনেকাংশেই ভুল প্রমাণ করে আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল সংক্রমণ, তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই আমরা এন্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছে যাব।”

কী হবে এই এন্ডেমিক পর্যায়ে?

এন্ডেমিকের অর্থ বোঝাতে ডঃ সিং বলেন, “এর অর্থ হল সংক্রমণ আরও সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও এর ফলে খুব বেশি চাপ পড়বে না। যদি মৃত্যুর হার ও কো-মর্ডিবিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা ও চিকিৎসা খুব একটা কষ্টকর হবে না।”

ওনাম উৎসবের পরই বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে কেরলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, সেই কেরলেও বর্তমানে ফের কমতে শুরু করেছে সংক্রমণের হার। এই ওঠানামার বিষয়েও তিনি টিকাকরণকেই সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, অধিক সংখ্যক মানুষ টিকাপ্রাপ্ত হওয়াতেই সংক্রমণের জেরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভয়াবহ চাপের সৃষ্টি হয়নি। একইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যেমন কমেছে, তেমনই সুস্থ হওয়ার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডঃ সিংয়ের মতে, টিকাকরণই বর্তমানে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে সব থেকে ভাল সুরক্ষা ব্যবস্থা। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই দেশের ৭৫ কোটি মানুষ টিকাপ্রাপ্ত হয়েছেন। যদি ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ হয়, তবে দেশের প্রায় ৫০ কোটি জনগণের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। ভ্যাকসিনের একটি ডোজ় প্রায় ৩০ শতাংশ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়, অর্থাৎ দেশের ৩০ কোটি জনগণ, যারা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ় পেয়েছেন, তাদের মধ্যেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে।”

তবে টিকাকরণই নয়, করোনা রুখতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি। যাদের করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তারাও যাতে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন, সেই পরামর্শ দেন এনসিডিসির ডিরেক্টর। টিকার দুটি ডোজ় নেওয়ার পরও কেবল ২০ থেকে ৩০ সতাংশ মানুষই পুনরায় করোনা সংক্রমিত হতে পারেন বলে জানান।

তিনি বলেন, “নতুন ভ্য়ারিয়েন্টের কারণেও ব্রেক-থ্রু সংক্রমণ বা টিকাপাপ্তদের মধ্যে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানীরাও বর্তমানে জানাচ্ছেন, টিকা নেওয়ার ৭০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।”

তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলি নিয়ে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, কেবল নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে কখনওই সংক্রমণের নতুন ঢেউ তৈরি হতে পারে না। অ্যান্টিবডি ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতাও নতুন ঢেউয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে গোটা বিশ্বে উদ্বেগ বাড়ানো মিউ ও সি১.২ স্ট্রেন এখনও ভারতে আসেনি। তবে সামনেই উৎসবের মরশুম থাকায় চিন্তা বাড়ছে।

আরও পড়ুন: সন্ত রামানুজের ১০০০ তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে সাজো সাজো রব, বিশ্বে তাক লাগাবে ‘স্ট্যাচু অব ইকুয়্যালিটি’