রেজিস্ট্রেশন না করলে ভ্যাকসিন পাবে না আম জনতা

আম জনতার ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম যে কথা মাথায় রাখতে হবে তা হল রেজিস্ট্রেশন আবশ্যক

রেজিস্ট্রেশন না করলে ভ্যাকসিন পাবে না আম জনতা
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 15, 2020 | 5:27 PM

নয়া দিল্লি: ব্রিটেন ও আমেরিকায় শুরু হয়েছে ফাইজ়ারের টিকারণ। রাশিয়াতেও করোনা প্রতিষেধক স্পুটনিক ভি পেয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ মানুষ। জোর কদমে শুরু হয়েছে করোনা প্রতিষেধক (COVID-19 vaccine) বিতরণের প্রস্তুতি ভারতেও। দেশে এখন মোট তিনটি করোনা প্রতিষেধক অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া আবেদন করেছে অক্সফোর্ডের প্রতিষেধক কোভিশিল্ডের জন্য। ভারত বায়োটেক আবেদন করেছে কোভ্যাকসিনের জন্য এবং অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে ফাইজ়ার। তবে কোনও প্রতিষেধককেই অনুমোদন দেননি ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া।

তবে নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে আসবে করোনা প্রতিষেধক। সে নিয়ে তোড়জোড়ও তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে ভ্যাকসিন হাব থেকে সাব সেন্টার পর্যন্ত প্রতিষেধক পৌঁছনোর রোডম্যাপ। আগেই ‘কোউইন’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার।

কীভাবে পৌঁছবে প্রতিষেধক?

প্রথমে ভ্যাকসিন হাব থেকে আকাশ পথে ভ্যাকসিন পৌঁছবে কেন্দ্রীয় টিকা সংরক্ষণ কেন্দ্রে। সেখান থেকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে বিভিন্ন রাজ্যের টিকা সংরক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছবে করোনা প্রতিষেধক। রাজ্য থেকে মারণ ভাইরাসের টিকা যাবে জেলা সংরক্ষণ কেন্দ্রে। জেলা সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সাব সেন্টারে পৌঁছে যাবে করোনা প্রতিষেধক। সাব সেন্টারের সেশন সাইটে উপযুক্ত প্রমাণপত্র দেখালে তবেই হবে টিকাকরণ।

Covid-19 Vaccine

নিজস্ব চিত্র

কারা পাবেন টিকা?

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমে করোনা টিকা পাবেন স্বাস্থ্যকর্মী, সামনের সারির করোনা যোদ্ধা ও গুরুতর অসুস্থ বয়স্ক ব্যক্তিরা। প্রথম পর্বেই ২৯ কোটি নাগরিকের কাছে করোনা প্রতিষেধক পৌঁছে দিতে চাইছে সরকার। এই ২৯ কোটি প্রতিষেধক প্রাপকেদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন ১ কোটি। সামনের সারির যোদ্ধা থাকবেন ২ কোটি। ২৬ কোটি গুরুতর আক্রান্ত অধিক বয়স্ক ব্যক্তিরা পাবেন করোনা প্রতিষেধক। ১ কোটি স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকা তৈরি করবে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সামনের সারির করোনা যোদ্ধাদের মধ্যে থাকবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সেনা, বায়ুসেনা, নৌসেনা ও উপকূলরক্ষীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিএসএফ, অসম রাইফেলস, সিআরপিএফ, আইটিবিপি, এনএসজি, এসএসবি ও জেলা পুলিস, হোম গার্ড ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও পাবে করোনা প্রতিষেধক। পুরকর্মী ও রাজ্য পুলিসের আধিকারিকরাও পাবেন করোনা প্রতিষেধক।

কীভাবে সাধারণ মানুষ আবেদন করবেন?

সাধারণ মানুষ করোনা প্রতিষেধকের জন্য আবেদন করবেন কোউইন অ্যাপের মাধ্যমে। সেই অ্যাপের মাধ্যমেই রেজিস্ট্রেশন আবশ্যক। তারপর সেশন সাইটের তথ্য পাওয়া যাবে। এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনকারী জানতে পারবেন প্রতিষেধক পাওয়ার সময়, স্থান সম্পর্কে। সেশন সেন্টারে প্রতিষেধক নিতে গেলে নিয়ে যেতে হবে আধার কার্ড বা অন্য বৈধ প্রমাণপত্র। টিকাকরণ শেষ হলে টিকা প্রাপকের হাতে পৌঁছবে ভ্যাকসিন গ্রহণের শংসাপত্র।

ভ্যাকসিন পাওয়ার শর্ত:

আম জনতার ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম যে কথা মাথায় রাখতে হবে তা হল রেজিস্ট্রেশন আবশ্যক।  রেজিস্ট্রেশন না করলে ভ্যাকসিন পাবে না আম জনতা। এই কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে সরকার। কোনও ভাবেই সেশন সেন্টারে করা যাবে না রেজিস্ট্রেশন। প্রতিষেধক পেতে হলে আগেই সেরে রাখতে হবে এই কাজ।

আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসায় আয়ুষ বা হোমিওপ্যাথি ওষুধ নয়, ‘সুপ্রিম নির্দেশে’ হোঁচট কেন্দ্রের

দেশে বিনা বাধায় করোনা প্রতিষেধক বিতরণের জন্য গঠিত হয়েছে ন্যাশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ অন ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। সেখানে রয়েছেন নীতি আয়োগ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা। তাদের পরামর্শ মতোই এগোবে টিকাকরণ প্রক্রিয়া। দেশে বেশিরভাগ করোনা প্রতিষেধকেরই দুটি ডোজ় নিতে হবে প্রত্যেককে। প্রত্যেকটি ডোজ়কে অত্যন্ত শীতল অবস্থায় সংরক্ষণ করতে হবে। তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।