PM Narendra Modi: ‘রাজনীতিবিদরা যেমন রয়েছেন, নরেন্দ্র মোদীও রয়েছেন’

PM Narendra Modi: নরেন্দ্র মোদী দেশে পরিবর্তন, সংস্কার আনার চেষ্টা করছেন। তাই পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যম, দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিবিদ, অসাধু ব্যবসায়ীরা হায়েনার মতো চারিদিক থেকে তাঁকে আক্রমণ করছেন।

PM Narendra Modi: 'রাজনীতিবিদরা যেমন রয়েছেন, নরেন্দ্র মোদীও রয়েছেন'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 21, 2021 | 12:22 PM

প্রবীর কে বসু (প্রাক্তন সচিব, কৃষিমন্ত্রক):

দিনরাত আমরা রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, আইপিএস/আইএএস অফিসার, পেশাদার ব্যক্তি ও তাদের নানা অসাধু কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলি। আজ আমরা চিকিৎসকদের নিয়ে কথা বলব। সবথেকে পবিত্র পেশা মনে করা হয় চিকিৎসাকে। আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে সাত চিকিৎসকদের কথা আজ তুলে ধরব।

প্রথম ঘটনা: আমার এক বন্ধু সদ্য মেডিকেল স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়েছিল এবং বিহারের সবথেকে বড় শিল্পপতির বাড়িতে তাদের পারিবারিক চিকিৎসক হিসাবে কাজ শুরু করেছিল। একদিন কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই কয়েকজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। চিকিৎসক হিসাবে আমার বন্ধুকেই মৃত্যুর কারণ লিখতে হত। সংস্থীর নাম রক্ষা ও ক্ষতিপূরণের বিপুল অঙ্ক বাঁচাতে তাঁকে মৃত্যুর কারণ অন্য কিছু লিখতে বলা হয়েছিল। ওর ভয় ছিল যে যদি কথা না শোনে, তবে সেও বিপদের মুখে পড়তে পারে। ভয়ে কোনওমতে আমার বন্ধু পটনায় পালিয়ে আসে। অপর এক চিকিৎসক এবং সরকারি চিকিৎসকরা তাঁর সেই অপূর্ণ কাজটি করে।

দ্বিতীয় ঘটনা: এই ঘটনাটিও পটনায়, আমার ছেলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ছেলের পাশে থাকার জন্য আমি গাড়ির চালককে ওষুধ আনতে পাঠাই। চিকিৎসকরা যে দোকানে যেতে বলেছিলেন, উনি সেই দোকানেই গিয়েছিলেন। উনি যখন ওষুধ নিয়ে ফেরেন, আমি দেখি ক্যাশমেমো ও ওষুধের ব্যাচ নম্বর আলাদা। আমার সন্দেহ হওয়ায়. ভাল করে পরীক্ষা করতেই দেখি সমস্ত ওষুধই এক্সপায়েরি ডেট পার করে গিয়েছিল! আমি সঙ্গে সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ করতে যাই। এ কথা স্পষ্টই ছিল যে ওই চিকিৎসক নির্দিষ্ট ওই দোকান থেকে টাকা পাচ্ছিলেন। চিকিৎসককে এই বিষয়ে ধরলে, তিনি বলেন এটি সত্যিই ওনার পক্ষ থেকে ভুল করে হয়েছিল এবং ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আমার স্ত্রীও আমায় বোঝায় যে, শত্রু বাড়িয়ে লাভ নেই।

তৃতীয় ঘটনা: একটি স্বনামধন্য সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক আমার  প্রাথমিক পরীক্ষার পর বায়োপ্সি করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন, ওনার সন্দেহ ছিল আমার হয়তো প্রস্টেট ক্যানসার হয়েছে। তিনি নির্দিষ্ট একটি সেন্টারেই যেতে বলেন পরীক্ষা করানোর জন্য। আমি সেখানে যাই, কিন্তু গোটা বিষয়টিই কিছুটা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমি পরীক্ষা না করেই চলে আসি। পরে আমি একজন ইউরোলজিস্টের কাছে যাই। তিনি আমার পরীক্ষা করে জানান, কোনও সমস্যাই নেই। ১০ বছর আগের ঘটনা এটি।

চতুর্থ ঘটনা: অবসর নেওয়ার পর আমি স্ত্রীর সঙ্গে ইউরোপে ঘুরতে গিয়েছিলাম। বিমানবন্দরে এক চিকিৎসক ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়। তারা একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন, ভ্রমণের যাবতীয় খরচ বহন করছিল একটি বড় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা।

পঞ্চম ঘটনা: আমার বাড়ির পরিচারকের এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছিল চিকিৎসকের গাফিলতিতে। ওই চিকিৎসকের দক্ষ  না হওয়ার কারণেই তিনি শিশুটিকে প্রসব করাতে পারেননি। তিনি নার্সকে ওই প্রসূতি মহিলার পেটের উপর বসতে বলেছিলেন, যাতে চাপে শিশুটি বেরিয়ে আসে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল থেকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়ায়, ওই পরিচারক বি,য়টি উর্ধ্বত কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেননি।

ষষ্ঠ ঘটনা: গয়ায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আচমকাই পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি, ভারপ্রাপ্ত তিনজন চিকিৎসকই উধাও। স্থানীয় রোগীরা আমায় জানায়, যিনি কমাউন্ডার রয়েছেন, তিনি বেশ ভাল মানুষ, তিনিই রোগীদের দেখেন। ওই তিন চিকিৎসক মাঝে মধ্যে দেখতে আসেন, কারণ তারা নিজেদের শহরেই ব্যক্তিগতভাবে প্রাকটিস চালাচ্ছিলেন।  এইধরনের অগুনতি ঘটনা আমাদের শুনতে হয়।

এই ধরনের চিকিৎসক যেমন আছেন, তেমনই ডঃ গোস্বামীর মতো চিকিৎসকরাও রয়েছেন। উনি মুঙ্গেরের জেলা হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন। তিনি সততা, দক্ষতা ও সহানুভূতির প্রতীক ছিলেন। সুশ্রুত চিকিৎসার প্রতীক ছিলেন তিনি। তিনি একদিনও বিরতি না নিয়ে দিনরাত কাজ করে গেছেন। উনি মেডিকেল স্কুলের সেরা চিকিৎসক ছিলেন।  যেখানে ওনার থেকে কম দক্ষ চিকিৎসকরা পটনায় লক্ষ লক্ষ টাকা আয়. করছিলেন, সেখানেই উনি নিজের শপথ অনুসরণ করে মানবসেবার কাজ করছিলেন।

এবার ভাবুন, যদি ডঃ গোস্বামী বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হতেন এবং নিজের চিন্তাভাবনা প্রয়োগ করতে শুরু করতেন, পরিবর্তন আনতেন। তাহলে কী হত? চিকিৎসা ক্ষেত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, সকলেই তাঁর ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা করতেন, তাঁর নামে মিথ্যা প্রচার চালানো হত, বলা হত যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া তাঁর গোপন পরিকল্পনা রয়েছে, উনি অসৎ ইত্যাদি। বিহারের মানুষও যদি এই সব কথায় বিশ্বাস না করতেন, তবে হয়তো তাঁকে মেরেই ফেলা হত।

জাতীয় স্তরে এটাই হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। উনি দেশে পরিবর্তন, সংস্কার আনার চেষ্টা করছেন। তাই পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যম, দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনীতিবিদ, অসাধু ব্যবসায়ীরা হায়েনার মতো চারিদিক থেকে তাঁকে আক্রমণ করছেন।

বন্ধুরা সতর্ক থাকুন। ভারতে বড় পরিবর্তনের যে বিরল সুযোগ এসেছে, তা কিছু গভীর স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের জন্য নষ্ট হতে দেবেন না। গণতন্ত্র রক্ষা করায় সর্বদা নজরদারী, কি জানি বিষয়টা ছিল?

আরও পড়ুন: PM Modi in Prayagraj: এবার লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়ন, যোগীরাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী